করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা কালো ছত্রাক রোগ কীভাবে সনাক্ত করা যাবে আর কী ভাবেই তার প্রতিকার করা যাবে- তাই নিয়ে নতুন গাউডলাইন জারি করেছে দিল্লির এইমস (AIIMS)হাসপাতাল। হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ডায়াবেটিস রোগীদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। একই সঙ্গে সতর্ক করা সেইসব রোগীকে যাঁদের স্টেরয়েডের হাইডোজ দেওয়া হয়েছিল চিকিৎসার জন্য।
আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবলঃ
১. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিশ, ডায়াবেটিক কেটোসিডোসিস রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশ। একই সঙ্গে যেসব রোগীদের হাইডোসের স্টেরয়েড দেওয়া হয় তাদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
২. ইমিউনোসপ্রেসেন্ট বা অ্যান্টিক্যান্সার চিকিৎসা যাঁদের চলছে তাঁদেরও সতর্ক করা হয়েছে। দীর্ধদিন শারীরিকভাবে অসুস্থ রোগীদের মধ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগের প্রকোপ বেশি।
৩. দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধের হাইডোস যেসব রোগীরদের দেওয়া হচ্ছে তাদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
৪. গুরুতর কোভিড আক্রান্ত রোগী যাঁরা অক্সিজেন অথবা ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
দিল্লির এইমস হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে তাঁদেরও কোভিড মুক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরে নিয়মিত চেকআপ করাতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক সময়ই কোভিড মুক্ত হওয়ার কিছু দিন পরেই এই রোগের আক্রান্ত হওয়ার মত ঘটনাও ঘটছে।
কীভাবে সনাক্ত করা যাবে কালো ছত্রাক?
১. অস্বাভাবিকভাবে কালো স্রাব নিঃসরণ হবে। নাক থেকে রক্ত বার হবে।
২. নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা, মাথাব্যাথা,চোখ ব্যাথা, চোখের চারপাশে ফোলাভাব, একটি জিনিসকে দুটি করে দেখার সমস্যা, চোখের লালচে ভাব, দেখতে সমস্যা হওয়া, চোখ বন্ধ করতে ও খুলতে সমস্যা হওয়া।
৩. মুখের অসাড়তা।
৪. কোনও কিছু চিবানো বা মুখ খোলার সময় সমস্যা হওয়া।
৫. নিজেকেই প্রথমে পরীক্ষা করে দেখতে হবে মুখ বা চোখ ফোলা রয়েছে কিনা। চোখ নাক আর মুখের চার ধারে কালো দাগ আছে কিনা। মুখে স্পর্শ করেই ব্যাথা করছে কিনা।
৬. দাঁত আলগা হয়ে যেতে পারে। মাড়ি, নাক ও মুখের ভিতরে কোনও অংশ ফুলে রয়েছে কিনা। টনসিলের দিকেই নজর দেওয়া জরুরি।
কী করতে হবে?
এইমস এর চিকিৎসরকা জানিয়েছেন এজাতীয় কোনও সমস্যা দেখা দিলেই তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। মূলত ইএনটির পরামর্শ নেওয়ার দিকেই জোর দিয়েছেন তাঁরা।
২. নিয়মিত চিকিৎসা ও ফলোআপ করেত হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত রক্তে পরীক্ষা করতে হবে। পর্যবেক্ষণের রাখতে হবে রক্তে শর্করার পরিমাণ।
৩. নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।
৪. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া স্টেরয়েড বা অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।