'আমি কি সত্যি প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য?', রাজ্যসভার টিকিট না পাওয়ায় কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বকে নিশানা নাগমার

এবার রাজ্য সভার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ কে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের মধ্যে প্রবল বিক্ষোভ শুরু, সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন দলের নেতারা। কংগ্রেস রবিবারই রাজ্যসভা নির্বাচনের ১০ টি শূন্যস্থানের জন্য ১০ জন  প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে। এর মধ্যে পি চিদম্বরম, জয়রাম রমেশ-সহ অজয় মাকেন ও রণদীপ সূরজেওয়ালার মতন বর্ষীয়ান নেতারা ছাড়াও আরও ৫ জন নতুন প্রার্থীর নাম রয়েছে এতে।
 

Web Desk - ANB | Published : May 30, 2022 1:32 PM IST / Updated: May 30 2022, 07:15 PM IST

রাজ্যসভায় টিকিট না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রাক্তন অভিনেত্রী তথা রাজনীতিবিদ নাগমা। কংগ্রেসের উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। নাগমা এদিন তাঁর টুইটার একাউন্টে কংগ্রেস হাই কম্যান্ড সনিয়া গান্ধী-কে উদ্দেশ্য করে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন,'সনিয়াজি  আমাকে ২০০৩-৪ সালে কংগ্রেসে যুক্ত হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ দেন এবং তাঁর কথায় আমি পার্টিতে যোগদান করি, তখন আমরা ক্ষমতায় আসিনি, তারপর থেকে ১৮ বছর হয়ে গেল এই দলটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। অথচ এই ১৮ বছরে একবারও রাজ্যসভা নির্বাচনের একটি টিকিটও আমাকে দেওয়া হয়নি। মহারাষ্ট্র থেকে মিস্টার ইমরান খুব সহজেই ইলেকশন টিকিট পেয়ে গেলেন, আমি কি সত্যিই যোগ্য নই?' তিনি আরও বলেন 'আমাদের ১৮ বছরের দীর্ঘ প্রচেষ্টাও হার মেনে গেল ইমরান ভাই এর সামনে'।

কংগ্রেস রবিবারই রাজ্যসভা নির্বাচনের ১০ টি শূন্যস্থানের জন্য ১০ জন  প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে। এর মধ্যে পি চিদম্বরম, জয়রাম রমেশ-সহ অজয় মাকেন ও রণদীপ সূরজেওয়ালার মতন বর্ষীয়ান নেতারা ছাড়াও আরও ৫ জন নতুন প্রার্থীর নাম রয়েছে এতে।

কংগ্রেসের হাতে অভিজ্ঞ ও সুযোগ্য ক্যান্ডিডেট থাকা সত্তেও ইমরান প্রতাপগ্রহী ও রঞ্জিত রঞ্জনের মতন নতুন অনভিজ্ঞ প্রার্থীদের ভোটের তালিকায় নাম আসায় খুবই অবাক ও ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের অন্দর মহল।

নাগমা ছাড়াও, কংগ্রেসের অন্য সাংসদরাও এর মধ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। রাজস্থানের সিরোহির বিধায়ক সন্যাম লোধা এর মধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন 'কংগ্রেস পার্টি-কে এর জবাবদিহি করতে হবে। কেন রাজস্থান থেকে কাউকে রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য প্রার্থী করা হলো না?' এর জবাবও চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

পবন খেরা যিনি রাজস্থানের খুব সম্ভাবনাময় একজন প্রতিদ্বন্দ্বী তাঁকে ও লিস্ট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, এ সম্পর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া, 'নিশ্চই আমার কাজে কোনও গাফিলতি রয়ে গেছে তাই হয়তো আমাকে প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।' 

গুজরাটের কংগ্রেসের কো-ইনচার্জ জিতেন্দ্র বাঘেল টুইটারে দলের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন," বলতে পারবেন এই প্রার্থীদের মধ্যে কত জন এসটি এবং  ওবিসি রয়েছে?

প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী তামিলনাড়ু থেকে প্রার্থী হচ্ছেন পি চিদম্বরম। কর্ণাটক থেকে রমেশ, ও হরিয়ানা থেকে দাঁড়াচ্ছেন মাকেন এবং রাজস্থান থেকে সূরজেওয়ালা , বর্ষীয়ান ইউনিয়ন নেতা রাজীব শুক্ল ও রঞ্জিত রঞ্জন দাঁড়াচ্ছেন ছত্তিশগঢ় থেকে, ও ইমরান প্ৰতাপগ্রহী মহারাষ্ট্র থেকে।

রাজ্যসভায় আগামী দু'মাসের মধ্যে ৫৫ টা আসন খালি হতে চলেছে, যার মধ্যে  লড়বেন চিদম্বরম(মহারাষ্ট্র), রমেশ(কর্ণাটক), অম্বিকা সোনি( পঞ্জাব), তানখা (মধ্যপ্রদেশ), কপিল শিৱল( উত্তরপ্রদেশ) এবং ছায়া ভার্মা( ছত্তিশগড়)।

এই আসন্ন রাজ্যসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ১০ টি আসন রয়েছে, যার মধ্যে নিশ্চিত ভাবে ৩ টি আসন পেতে পারে যদি রাজস্থানের হারিয়ে যাওয়া ক্ষমতার পুনরুত্থান সম্ভব হয়। এছাড়াও ছত্তিশগড় অর্থাৎ যেখানে ইতিমধ্যেই ক্ষমতায় রয়েছে তারা সেখান থেকে ২ আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ু থেকেও একটি করে আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া হরিয়ানা,মধ্যপ্রদেশ ও কর্ণাটক থেকেও একটি করে আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কংগ্রেসের প্রভাবশালী ৩ বিধায়কের দৌলতে। ৩ বার রাজ্যসভার প্রার্থী পদে জয়ী হওয়া  জয়রাম রমেশ চতুর্থবারের মতন কর্ণাটক থেকে পুনরায় প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন। 

প্রার্থী বাছাই-কে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের এই অন্তর্দলীয় কলহকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য টুইটারে রীতিমতো পোস্ট করে লিখেছেন, 'কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে হচ্ছে না। এত হেভিওয়েট নেতাদের দলত্যাগের পরও কংগ্রেস রাজ্যসভার নির্বাচনে রাজস্থান, ছত্তিশগঢ় এবং মহারাষ্ট্রে কোনও স্থানীয় প্রার্থীকে দাঁড় করায়নি। গান্ধী পরিবার যথারিতি তাদের সভার আস্থা অর্জনকারীদের উপরেই ভরসা রেখেছে।'এমনকী রাজস্থান নিয়েও সবচেয়ে বেশি তির বিদ্ধ করেছেন অমিত মালব্য। তিনি টুইটার পোস্টে লিখেছেন, 'রাজস্থান থেকে কি একজনও যোগ্য প্রার্থী পাওয়া গেল না। আসলে রাজস্থানে গান্ধীদের স্বার্থকে সুরক্ষিত করতে অশোক গেহলটকে মুখ্যমন্ত্রী করে রাখাটা জরুরি। এটা রাজস্থানবাসীদের প্রতি অপমান।'

জুনের ১০ তারিখ ৫৭ টি আসনে রাজ্যসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৫টি রাজ্য থেকে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে শূন্য আসন গুলি পূরণ করার উদ্দেশ্যে। ৩১ মে তারিখ প্রার্থী মনোনয়নের শেষ দিন। তার আগেই প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে  দলীয় কলহে লিপ্ত হল কংগ্রেস। 
আরও পড়ুন- দিল্লির তিহার জেলে বসেই সিধুকে খুনের ছক, তদন্তে প্রকাশিত আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য 
আরও পড়ুন- UPSC- তে শীর্ষ স্থানে শ্রুতি শর্মা, জেনে নিন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার টপারের অজানা কাহিনি 
আরও পড়ুন- ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস মেইনসের ফলপ্রকাশ, শীর্ষে শ্রুতি শর্মা

Read more Articles on
Share this article
click me!