সলমন খুরশিদের নতুন বইয়ের নাম 'সানরাইজ ওভার অযোধ্যা: নেশনহুড ইন আওয়ার টাইম'। এই বইটি প্রকাশের পর থেকেই তা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। তাঁর বই ও তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক
সোমবার কংগ্রেস (Congress) নেতা সলমন খুরশিদের (Salman Khurshid) নৈনিতালের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বাড়ির বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। সেখানে তাঁর বাড়িটি দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে অযোধ্যা নিয়ে তাঁর নতুন বই। আর সেই বইতে হিন্দুত্ব (Hindutva) ও উগ্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলিকে একই সঙ্গে দাঁড় করিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তার জেরেই তাঁর বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করা হয়েছে। হামলা প্রসঙ্গে খুরশিদের মন্তব্য, 'আঘাত আমাকে নয়, বরং হিন্দু ধর্মকে আঘাত করা হয়েছে'।
সলমন খুরশিদের নতুন বইয়ের নাম 'সানরাইজ ওভার অযোধ্যা: নেশনহুড ইন আওয়ার টাইম' (Sunrise over Ayodhya: Nationhood in our times)। এই বইটি প্রকাশের পর থেকেই তা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। তাঁর বই ও তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আর এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হল একটি অনুচ্ছেদ। যেখানে তিনি লিখেছেন, এ দেশের সাধুসন্তরা যে সনাতন হিন্দুধর্মে আস্থা রাখতেন, তাকে এক পেশিবহুল হিন্দুত্ব ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছে, যা সব মাপকঠিতেই আইএসআইএস ও বোকো হারামের চরমপন্থী ইসলামের রাজনৈতিক সমতুল্য।
সেই বিতর্কের মাঝেই সোমবার খুরশিদের নৈনিতালের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন তিনি। সেখানে দেখা গিয়েছে, তাঁর বাড়ির জানলা দরজা আগুনে পুড়ে গিয়েছে। স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতা জল ছুড়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। আবার কোনও ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তাঁর বাড়ি থেকে আগুনের নেলিহান শিখা উঠছে। এই ছবিগুলি শেয়ার করে তিনি লেখেন, "বন্ধুদের জন্যই দরজাগুলি খোলার আশা করেছিলাম। কিন্তু, তারা এজাতীয় ঘটনা ঘটিয়ে গিয়েছে। এটি কখনই হিন্দুত্ব হতে পারে না।"
আরও পড়ুন- হিন্দুত্ব বিতর্কের জের, তাই কি আগুন কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদের বাড়িতে
আরও একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস নেতার বাড়ির সামনেই কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে। যাদের হাতে রয়েছে গেরুয়া পতাকা। তারা আবার জয় শ্রীরাম স্লোগানও দিচ্ছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে খুরশিদ বলেন, "আমি বইতে বলেছি এই ধরনের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয়। হিন্দু ধর্ম খুবই সুন্দর। এই ধর্ম দেশকে একটা সুন্দর সংস্কৃতি দান করেছে। আর তার জন্য আমি গর্বিত। এই আঘাত আমার উপর নয় হিন্দু ধর্মের উপর করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন- পরিষেবা ব্যাহত হলে কড়া পদক্ষেপ, আরজি করে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে হাইকোর্ট
এই ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কুমাউনের ডিআইজি নীলেশ আনন্দ সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন, এই ঘটনায় রাকেশ কপিলের সঙ্গে আরও ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বর্ষীান কংগ্রেস নেতা শশী থারুর (Shashi Tharoor)। এই ঘটনা প্রসঙ্গে টুইটারে তিনি লেখেন, "এটি অসম্মানজনক। সলমন খুরশিদ একজন রাষ্ট্রনায়ক যিনি আন্তর্জাতিক ফোরামে ভারতকে গর্বিত করেছেন। যাঁরা ক্ষমতায় রয়েছেন তাঁদের উচিত আমাদের রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতার নিন্দা করা।"