গণহত্যার দায়ে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসি দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ফলকার তুর্ককে এই প্রস্তাব জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
গণহত্যার দায়ে বাংলাদেশের প্রাক্তণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসি দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছে। এই প্রস্তাব জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ফলকার তুর্ককে জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের মৃত্যুর ঘটনায় শুধু শেখ হাসিনা নয়, যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদের সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
জুলাই-আগস্টের সংরক্ষণ আন্দোলনে সংগঠিত গণহত্যার তদন্ত করতে ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পোষ্য এজেন্ট হিসেবে পরিচিত জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ফলকার তুর্ক। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। ওই বৈঠকে তুর্ক জানতে চায় জুলাই-আগস্টে গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের কী ধরনের শাস্তি দেওয়ার কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার? ওই সময় আইন উপদেষ্টা বলেছিলেন, প্রাক্তণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সঙ্গীদের ফাঁসি হবে। মৃত্যু ছাড়া অন্য কোনও শাস্তি মানা হবে না।
এরপরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধানকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে হত্যাকারী সরকারের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সেই সাজা বাতিলের প্রশ্নই আসে না। এটা আশা করার কোনও উপায় নেই। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি শেখ হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, 'অ্যাট দিস মোমেন্ট' প্রথম অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছিল, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের গণহত্যার দায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে। শেখ হাসিনা সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি ঢাকা থেকে পালিয়ে দিল্লিতে অস্থায়ী আশ্রয় নেন। হাসিনার পাশাপাশি তার মন্ত্রিসভার অনেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ও সংসদ সদস্য দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। অনেক মানুষ দেশের মধ্যেই আত্মগোপন করেছে। প্রায় ৫০ জন সাবেক মন্ত্রী-এমপিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে হাসিনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ২২৭টি হত্যা মামলা রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ১৭ অক্টোবর নির্বাসিত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। জামায়াতে ইসলামীর কট্টর সমর্থক হিসেবে বিবেচিত বিচারপতি গোলাম মুর্তুজা মুমদার শুধু হাসিনা নয়, ৪৫ নেতার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আওয়ামী লীগের। হাসিনা ও তার সহযোগীদের ১৮ নভেম্বরের মধ্যে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।