বৃহস্পতিবার তদন্তকারীরা বিধ্বস্ত ভারতীয় বায়ুসেনার Mi-17V5 হেলিকপ্টার থেকে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছে। তামিলনাড়ুর কুনুরে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত, তার স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত এবং ১১ জনকে নিয়ে এই কপ্টারটি ভেঙে পড়ে।
সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াতের (CDS Bipin Rawat) কপ্টার ভেঙে দুর্ঘটনার তদন্তে নয়া মোড়। বৃহস্পতিবার তদন্তকারীরা বিধ্বস্ত ভারতীয় বায়ুসেনার (Crashed Chopper) Mi-17V5 হেলিকপ্টার থেকে ব্ল্যাক বক্স (black box) উদ্ধার করেছে। তামিলনাড়ুর কুনুরে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত, তার স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত এবং ১১ জনকে নিয়ে এই কপ্টারটি ভেঙে পড়ে। ফ্লাইট রেকর্ডার নামে পরিচিত ব্ল্যাক বক্সটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনার আগে চূড়ান্ত মিনিটের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকারি সূত্র জানায়, তদন্তকারীরা দুর্ঘটনাস্থলের ৩০০ মিটার থেকে এক কিলোমিটার পর্যন্ত অনুসন্ধান করেন। এরই মাঝে উদ্ধার হয় ভেঙে পড়া কপ্টারটির ব্ল্যাক বক্স।
ব্ল্যাক বক্স কি?
একটি ব্ল্যাক বক্স এমন একটি ডিভাইস যা দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তদন্তকারীদের সাহায্য করার জন্য বিমানে ইনস্টল করা হয়। হার্ডডিস্কের মতোই, ব্ল্যাক বক্স একটি অত্যন্ত সুরক্ষামূলক মেশিন যা ককপিটে সমস্ত ফ্লাইট ডেটা এবং কথোপকথন রেকর্ড করে। ককপিট কথোপকথন রেকর্ড করার পাশাপাশি, রেকর্ডারটি স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটার ঘোষণা, রেডিও ট্র্যাফিক, ক্রুদের সাথে আলোচনা এবং যাত্রীদের ঘোষণার তথ্যও রাখে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্লাইট রেকর্ডারটি পাইলটদের মধ্যে ব্যক্তিগত কথোপকথনও রেকর্ড করে, তাই দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এই ডিভাইস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এখান থেকেই রেকর্ড হওয়া যাবতীয় তথ্যের ভিত্তিতে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে তথ্য দেয়।
দুটি ধরণের ফ্লাইট রেকর্ডিং ডিভাইস রয়েছে: ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (এফডিআর) যা প্রতি সেকেন্ডে একাধিকবার সংগৃহীত কয়েক ডজন প্যারামিটার রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে ফ্লাইটের সাম্প্রতিক সমস্ত ইতিহাস সংরক্ষণ করে। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) যা ককপিট শব্দ সহ রেকর্ড করে।
এটাকে ব্ল্যাক বক্স বলা হয় কেন?
আজকাল ব্ল্যাক বক্সটি উজ্জ্বল কমলা রঙের হয়। যা দুর্ঘটনার ধ্বংসাবশেষের মধ্যেও এটিকে সহজে চিহ্নিত করে। যখন এই রেকর্ডারগুলি প্রথম চালু হয়েছিল, তখন তাদের কালো রঙের জন্য এরনাম ব্ল্যাক বক্স রাখা হয়। এটি উচ্চ-তাপমাত্রা নিরোধক একটি স্টেইনলেস-স্টীলের পাত্রে থাকে। ব্ল্যাক বক্সটি স্থলে এবং সমুদ্রের উপরে পড়লে এর কোনও ক্ষতি হয় না। এভাবেই এটি ডিজাইন করা।
এটি সমুদ্র থেকেও উদ্ধার করা যেতে পারে। জলের মধ্যে পড়লে এটি লবণাক্ত জলের সংস্পর্শে আসার পর এমন একটি সংকেত পাঠাতে পারে, যার মাধ্যমে একে চিহ্নিত করা যায়। এই সংকেত প্রায় দুই কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে তোলা যায়। ডিভাইসটি ছয় হাজার মিটার পর্যন্ত গভীরতায় পাওয়া জলের চাপ সহ্য করতে পারে।