কালো স্বামীর সঙ্গে ঘর করতে নারাজ স্ত্রী, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ আনায় কী বলল কোর্ট

কর্ণাটক হাইকোর্টের দাবি রেকর্ডে থাকা প্রমাণগুলি স্পষ্ট করে দেয় যে স্বামীর গায়ের রং কালো বলেই তাঁর সঙ্গে ঘর করতে চাননি স্ত্রী। ।Calling husband black is cruelty says Karnataka High Court while granting divorce

 

Saborni Mitra | Published : Aug 8, 2023 12:44 PM IST

স্ত্রী যদি স্বামীকে কালো বলে বারবার অপমান করে তা অত্যান্ত নিষ্ঠুরতার। একটি বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করার সময় এমনই বার্তা দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। পাশাপাশি স্বামীর বিরুদ্ধে তোলা স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, অত্যাচারের অভিযোগ সব খারিজ করে দিয়েছে। ৪৪ বছরের এক ব্যক্তিকে তার ৪১ বছকের স্ত্রীর থেকে বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দেওয়ার সময় এমনই পর্যবেক্ষণ করেছে হাইকোর্ট।

কর্ণাটক হাইকোর্টের দাবি রেকর্ডে থাকা প্রমাণগুলি স্পষ্ট করে দেয় যে স্বামীর গায়ের রং কালো বলেই তাঁর সঙ্গে ঘর করতে চাননি স্ত্রী। সেই কারণে অনেক আগেই স্বামীকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেন। স্বামীর বিরুদ্ধে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের মিথ্যা মামলাও করেছিলেন। যা অত্যান্ত নিষ্ঠুরতার পরিচয় বহন করে বলেও জানিয়েছে আদালত।

বেঙ্গালুরুর দম্পতি ২০০৭ সালে বিয়ে করেন। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০১২ সালে স্বামী বিবাহবিচ্ছেদের জন্য বেঙ্গালুরুর পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হন। এদিন কর্ণাটক হাইকোর্টের বিচারপতি অলোক আরাধে ও অনন্ত রামনাথ হেগড়ের ডিভিশন বেঞ্চে বিবাহবিচ্ছেদ মামলার শুনানি হয়। আদালত বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করে। পাশাপাশি আদালত বলেছেন, 'একজন স্বামীকে তার স্ত্রী যদি কালো বলে অপমান করে তাহলে তা খুবই নিষ্ঠুর ঘটনা। কিন্তু স্বামী শুধুমাত্র সন্তানের মুখ চেয়েই অপমান সহ্য করতেন।' আদালত আরও বলেছে, মহিলা স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছিলেন। যা গার্হস্থ্য হিংসার অধীনে পড়ে। তবে শিশুটিকে তারা বাবা ও মায়ের সঙ্গে থাকার অধিকার দেওযা হয়েছে।

কর্ণাটক হাইকোর্ট আরও বলে মহিলা পারিবারিক আদালতে তার আগের অভিযোগগুলি অস্বীকার করেছিলেন। পরিবর্তে সেই সময়ই তিনি স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে পণের দাবিতে অত্যাচারের অভিযোগ করেন। সন্তানসহ তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন। সেই সময়ই মহিলার অভিযোগ ছিল তাঁর স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেই কারণেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। একটা সময় মহিলা নিজের সন্তানকেও অস্বীকার করেন। মহিলা বলেন, স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের জেরে এই সন্তানের জন্ম হয়েছে।

পারিবারিক আদালত ২০১৭ সালে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য স্বামীর আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। তারপরই স্বামী ডিভোর্সের জন্য কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই মামলাতেই জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। হাইকোর্ট স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, মহিলা স্বামীর বিরুদ্ধে যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলেছে তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। মহিলা বিবাহ থেকে মুক্তি পেতে অত্যান্ত বেপোয়া হয়ে এই কাজ করেছিলেন। আদালত আরও বলেছে , কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি অযোথা এজাতীয় অভিযোগ করা হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মানসিক যন্ত্রণা পান। এটি অত্যান্ত নিষ্ঠুর। আদালত আরও বলেছে, পারিবারিক আদালত মোটেও সত্যতে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। হাইকোর্টের বক্তব্য মহিলা সর্বদা স্বামীর গায়ের রং নিয়ে কটাক্ষ করত। যা অত্যান্ত অসম্মানের। আদালত আরও বলেছে, স্ত্রী স্বামীর কাছে ফিরে আসার কোনও চেষ্টা করেনি। মহিলার তাঁর স্বামীর সঙ্গে সংসার করার কোনও ইচ্ছে নেই। তাই বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করা হয়েছে।

 

Share this article
click me!