পরপর ষষ্ঠ বছর দিল্লিতে বিদ্যুৎ সবচেয়ে সস্তা
কোভিডের কারণে দিল্লির রাজস্ব ব্যাপক কমেছে
তাসত্ত্বেও দিল্লির আপ সরকার বিদ্যুতের শুল্ক না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে
অন্যান্য রাজ্যগুলিতে অবশ্য এই সময়ে বিদ্যুতের শুল্ক বেড়েছে অনেকটাই
টানা ষষ্ঠ বছর দিল্লিতে বিদ্যুতের শুল্ক না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন আপ সরকার। গত ২৮ অগাস্ট দিল্লি বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (ডিইআরসি) জানিয়েছে করোনাভাইরাস মহামারির প্রেক্ষিতে ২০২০-২১-এ বিদ্যুৎ শুল্ক বাড়ানো হচ্ছেনা।এই ঘোষণার পরপরই টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির নাগরিকদের অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, 'দিল্লির নাগরিকদের অভিনন্দন। একদিকে যেখানে সারা দেশে বিদ্যুতের শূল্কহার বছরের পর বছর বেড়ে চলেছে, দিল্লি বিদ্যুতের হার ছয় বছর ধরে বাড়তে দেয়নি এবং কিছু অঞ্চলে হার হ্রাসও করেছে। এটা ঐতিহাসিক। আপনারা দিল্লিতে একটি সৎ সরকার গঠন করেছিলেন বলেই এটা হয়েছে কারণ ।'
ডিইআরসি জানিয়েছে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিএসইএস রাজধানী পাওয়ার লিমিটেড (বিআরপিএল), বিএসইএস যমুনা পাওয়ার লিমিটেড (বিওয়াইপিএল) টাটা পাওয়ার দিল্লি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড (টিপিডিডিএল)-এর মতো বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলির এবং নয়াদিল্লি পৌরসভা কাউন্সিল (এনডিএমসি)-এর কোনও রাজস্ব বৃদ্ধি হয়নি। তাই মার্চের শুল্কে কোনও পরিবর্তন হবে না।
২০১৩ সালে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উচ্চ বিদ্যুতের শুল্কের বিরুদ্ধে অনির্দিষ্টকালের অনশন করেছিলেন, যা পরিচিতি পেয়েছিল বিজলি - পাণি সত্যগ্রহ নামে। সেইসময়ই তিনি দেশের সস্তাতম বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর অরবিন্দ কেজরিওয়াল শুল্ক ৫০% কমিয়েছিলেন।
তার পর থেকে আপ সরকার বিদ্যুতের শূল্কহার বাড়ায়নি শর্তে ত্রাণ সরবরাহ করেছে। গুজরাতে অন্যান্য রাজ্যে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের হার ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ৩.৫ টাকা, এবং১০১-২০০ ইউনিটের উপর ৪.১৫ টাকা, পঞ্জাবে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ৪.৪৯ টাকা এবং ১০১-২০০ ইউনিটেরউপরে ৬.৩৪ টাকা, গোয়ায় ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ১.৫ টাকা এবং ১০০-২০০ ইউনিট ২.২৫ টাকা। পাশাপাশি দিল্লিতে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয় এবং ২০১-৪০০ ইউনিটের বিদ্যূৎ ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে সরবরাহ করা হয়।
সম্প্রতি দিল্লির প্রতিবেশী রাজ্য, উত্তরপ্রদেশ বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (ইউপিইআরসি) রাজ্যে বিদ্যুতের শূল্কহার বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে। ১৫০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের শুল্ক ৪.৯ টাকা থেকে বেড়ে ৫.৫ টাকা হয়েছে। আর ১৫১-৩০০ ইউনিটের দাম ৫.৪ টাকা থেকে বেড়ে ৬ টাকা হয়েছে। আর ৩০১-৫০০ ইউনিটের দাম বেড়ে হয়েছে ৬.২ টাকা থেকে ৬.৫ টাকা। ৫০০ ইউনিটের উপরের ব্যবহারের জন্য বিদ্যূতের শূল্ক ৬.৫ টাকা থেকে ৭ টাকা করা হয়েছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সম্প্রতি জানিয়েছেন করোনাভাইরাস লকডাউনের কারণে দিল্লি সরকারের রাজস্ব আগের বছরের এপ্রিল মাসে যেখানে ৩,৫০০ কোটি টাকা ছিল,সেখানে এইবছর এপ্রিলে তা নেমে ৩০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন ৬২ লক্ষেরও বেশি গ্রাহক।
করোনা মহামারি এবং এর সঙ্গেসঙ্গে জারি করা লকডাউনের ফলে বহু মানুষের বেতন কমেছে। তার পাশাপাশি বহু মানুষ ওয়ার্ক ফ্রম হোম করেছেন। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বারবারই বলেন আপ সরকার সাধারণ মানুষ-এর সমর্থক। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে, দিল্লির প্রায় ১৪ লক্ষ গ্রাহকের বিদ্যুতের বিল এসেছিল শূন্য। আর নভেম্বর-ডিসেম্বরে এই সংখ্যাটা পৌঁছেছিল ২৬ লক্ষে।