দ্রুতহার জলবায়ু পরিবর্তনে যথেষ্ট প্রভাব পড়তে পারে ভারতে। এখন থেকেই সতর্ক করা হয়েছে ভারতকে।
রাষ্ট্র সংঘে পেশ করা হয়েছে ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন কাইমেন্ট চেঞ্জ রিপোর্ট। এই রিপোর্ট দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশ্ব জুড়েই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হয়েছে। কিন্তু রিপোর্টে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে ভারতকে। রিপোর্টে বলা হয়েছে। দ্রুতহারে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আগামী বছরগুলিতে ভারতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাড়বে। বন্যার প্রকোপ আরও ভয়ঙ্কর আকার নেবে। হিন্দুকুশ পর্বতের হিমবাহ গলতে শুরু করবে। আর সমুদ্রপৃষ্ঠের জলস্তরের উচ্চতা বাড়বে। যা নিচু এলাকাগুলির জন্য বিপদ ডেকে আনবে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে।
ক্লাইমেট চেঞ্জ ২০২১: ফ্যাজিক্যাল সায়েন্স বেসিস শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্যান্য মহাসাগরগুলির তুলনায় ভারত মহাসাগর দ্রুতহারে উষ্ণ হচ্ছে। যা আগামী দিনে ভারতের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেবে আর বন্যার পক্ষে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ভারতের উপকূলবর্তী এলাকা আর নিচু এলাকায় ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
ভারতের COVID 19 টিকা পাবেন বিদেশিরাও, নাম লেখাতে হবে CoWIN অ্যাপে
জলবায়ু পরিবর্তন 'মানব সভ্যতার কাছে লাল সতর্কতা', রিপোর্ট প্রকাশ করে উদ্বেগ রাষ্ট্রসংঘের
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ভারতের মত দেশের জন্য তাপ প্রবাহ কিছু বৃদ্ধি অ্যারোসাল নির্গমন দ্বারা ধরে রাখা যায়। কিন্তু এটি দ্রুত হ্রাস করা খুবই জরুরি। তাপ বৃদ্ধির প্রভাবে একদিকে যেমন ভারী বৃষ্টি হবে অন্যদিকে হিমবাহ গলতে শুরু করবে। এই দুটি বিষয়ই ভারতের পক্ষে অত্যান্ত ক্ষতিকর। প্রতিবেদনের লেখক তথা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউ অব ট্রিপপিক্যাল মেটিওরোলডির বিজ্ঞানী স্বপ্না পানিকাল বলেছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণ হল ৫০ শতাংশ তাপ বৃদ্ধি। ভারত মহাসাগরের মধ্যে রয়েছে আরব সাগর আর বঙ্গোপসাগর। ভারত মহাসাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি সমুদ্রেরও তাপমাত্রা বাড়ছে। সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আগামী দিনে বিশ্বের উষ্ণতাও ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে।
সমুদ্র নিরাপত্তা থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ, UNSC-র বৈঠক সবই ছুঁয়ে গেলেন মোদী
জলবায়ু পরিবর্তনের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে আগে যেখানে ভারতে একশো বা ৫০ বছরের ব্যবধানে উপকূলীয় এলাকায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিত বর্তমানে এই এলাকার বাসিন্দা প্রায় প্রত্যেক বছরই ভায়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। একদিকে খরা অন্যদিকে বন্যা- ভারতের একাধিক দেশে এজাতীয় প্রাকৃতিক বিপর্যয় লেগেই রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। রিপোর্টে বলা হয়েছে ১৯৭০ সাল থেকেই সমুদ্রের উষ্ণতা বাড়ছে। গলতে শুরু করেছে হিমবাহ।১৯৫০- ১৯৯০ সালের আর্কিটক সাগরের প্রায় ৪০ শতাংশ হিমবাহ গলে গিয়েছিল। আগামী ২০-৩০ বছরের ভারতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। পাশাপাশি শীত অনেকটাই কমে যাবে। পাল্লা দিয়ে বাড়বে গরম। রিপোর্টে গ্রিনহাউস গ্যাস সম্পর্কেও সচেতন করা হয়েছে। বলা হয়েছে এই গ্যাস নিঃশরণ বন্ধ না করলে তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। ভারতের সঙ্গে চিন আর রাশিয়াকেও সতর্ক করা হয়েছে।