চিন নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবিতে আবারও সরব হল কংগ্রেস। জয়রাম রমেশ বলেন চিনা অগ্রাসন হয়েছে কিনা তা বলতে হবে প্রধামন্ত্রী মোদীকে। সংসদে এই নিয়ে আলোচনা চান বলেও জানিয়েছেন তিনি।
চিন-ভারত সীমান্ত ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে অগ্রাহ্য করে আবারও সরব হল কংগ্রেস। শুক্রবার কংগ্রেস বলেছেন, 'চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকলেও সীমান্ত সম্পর্ক রীতিমত অস্বাভাবিক।' কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ২০২০ সালে সীমান্ত নিয়ে বিবৃতি জারি করে চিনাকে 'বহির্ভূত' করার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। জয়রাম রমেশের প্রশ্ন '২০২০ সালের পর থেকে এই দেশে চিনারা অনুপ্রবেশ করছে না বেড়াতে আসছে?'
চিনা অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নীরবতা নিয়ে রীতিমত কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন, চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে নিয়ে সংসদে একটি সাধারণ বিবৃতি পড়তে বাধ্য করিয়েছেন। অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং-এ চিনা-ভারতীয় সেনাদের সংঘর্ষ নিয়ে সংসদে আলোচনা হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সেখানে কী হয়েছে তা জানার অধিকার গোটা দেশের রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
জয়রাম রমেশ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৮ বার চিনা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু তাঁরই আমলে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছিলেন বাণিজ্য আর সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। তিনি আরও বলেন চিন থেকে এইদেশের আমদানি বেড়েছে কিন্তু ভারতের বাণিজ্য ধাক্কা খেয়েছে। এদিন জয়রাম রমেশ নেহেরুর মন্ত্রিসভার কথাও তুলে আনেন। বলেন ১৯৬২ সালে চিন যখন ভারত আক্রমণ করেছিল তখন নেহেরুর মন্ত্রিসভায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে বিরোধীরাও মত প্রকাশ করেছিলেন। পণ্ডিত নেহেরু তাঁর সহকর্মীদের মতামত শুনেছিলেন বলেও জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা।
জয়রাম রমেশ আরও বলেন, এল এম সিংভি, যিনি স্বতন্ত্র পার্টির সদস্য হিসাবে লোকসভায় পালির প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, নেহরুকে চীনা আক্রমণ নিয়ে আলোচনা করার জন্য সংসদের একটি গোপন অধিবেশন চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন, একটি গোপন অধিবেশনের কথা ভাবা অর্থহীন এবং এটি একটি উন্মুক্ত অধিবেশন হতে হবে। সেই চিঠির রেকর্ড রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পুরনো তথ্য তুলে এনে জয়রাম রমেশ আক্রমণ করেন মোদীকে। তিনি বলেন এখানেই মোদীর সঙ্গে নেহেরুর ফারাক। বর্তমানে দেশের প্রধানমন্ত্রী চিনা অগ্রাসন নিয়ে গত আড়াই বছরে একটিও কথা বলেননি। তিনি দায় ঝেড়ে শুধু বলে যাচ্ছেন চিনা অগ্রাসন হয়নি। তারপরই জয়রাম রমেশের প্রশ্ন চিনা অগ্রাসন যদি না হয়ে থাকে তাহলে ২০২০ সালের ২০ জুন কী হয়েছিল গালওয়ানে। সেটি অনুপ্রবেশ ছিল না চিনাদের বেড়াতে আসা ছিল। অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং-এই বা কী হয়েছে? জানতে চান কংগ্রেস নেতা। তিনি আরও বলেন এটা দেশের সমস্যা এটা নিয়ে রাজনীতি হতে পারে না। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে বলেও দাবি করেন তিনি। তারপরই বলেন প্রধানমন্ত্রী সংসদে খুবই কম আসেন। এই বিষয়ে মোদীর বিবৃতি দেওয়া উচিত বলেও দাবি করেন তিনি।