এনটিজিআই সদস্য জয়প্রকাশ মুলিয়াল জানিয়েছেন করোনায় শিশুদের সেভাবে প্রভাবিত হতে দেখা যায়নি। মহামারী বিশেষজ্ঞের মতে, ভারতে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে কোনও COVID-19 মৃত্যু দেখা যায়নি।
দেশে ক্রমশ বাড়ছে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে শিশুরা কতটা নিরাপদ। তাদের কি প্রয়োজন রয়েছে জরুরি ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার। এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। তবে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও সেই সময় আসেনি। কারণ শিশুদের জরুরি ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার এখনই দরকার নেই।
ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশন ইন ইন্ডিয়া বা এনটিজিআই (NTAGI) সদস্য জয়প্রকাশ মুলিয়াল জানিয়েছেন করোনায়(COVID-19) শিশুদের (Children) সেভাবে প্রভাবিত হতে দেখা যায়নি। মহামারী বিশেষজ্ঞের মতে, ভারতে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে কোনও COVID-19 মৃত্যু দেখা যায়নি। তিনি দাবি করেন যে ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত কিছু অল্প বয়স্ক রোগীর পজেটিভ রিপোর্ট আসে। তবে তাদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে COVID-19 এর জন্য দায়ী করা যায় না।
যদিও ভারত গত বছরে ১.৩৮ বিলিয়নেরও বেশি টিকা দিয়েছে। তবু এখনও শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু হয়নি দেশে। কর্তৃপক্ষ এর আগে শিশুদের জন্য দুটি COVID-19 ভ্যাকসিন Covaxin এবং ZyCoV-D-কে সামনে এনেছিল। তবে এগুলি এখনও জনসাধারণের জন্য বাজারে ছাড়া হয়নি। ডিসেম্বরের শুরুতে, এনটিজিআই শিশুদের টিকাকরণ এবং ইমিউনোকম্প্রোমাইজড ব্যক্তিদের অতিরিক্ত ডোজ দেওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি বৈঠক করে।
বৈঠকের পরে, এনটিজিআই জানায়, কোনও নির্দিষ্ট সুপারিশ বা ঐক্যমত্যে এখনও আসা যায়নি। NTAGI অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এই বছর শিশুদের টিকা দেওয়া হবে না। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আগামী বছর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এই বছরের জুলাই মাসে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়া বিজেপি সংসদীয় দলের বৈঠকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে সরকার আগামী মাস (আগস্ট) থেকে শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করতে পারে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ফের জানান শিশুদের টিকা দেওয়ার সম্ভাবনা খুব শীঘ্রই হবে না। সেই সময়ে, তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে এটি চালু করার" কোন পরিকল্পনা নেই।
এদিকে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে শিশুদের জন্য কোভিড ভ্যাকসিন বাজারে নিয়ে আসবে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। এমনই দাবি করেছিলেন সেরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা। পুনাওয়ালা এদিন বলেন শিশুদের জন্য নোভ্যাক্স COVID-19 ভ্যাকসিন চালু করার পরিকল্পনা করছে সেরাম ইনস্টিটিউট। সেরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দু বছর থেকে ১৭ বছর বয়েসীদের জন্য ৯২০ টি বিষয়ে ন্যানো পার্টিকেল ভ্যাকসিন (লিকুইড)-এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনা করা হচ্ছে।
পুনাওয়ালা বলেন শিশুদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হওয়ার খুব বেশি হার দেখা যায়নি। তবে সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সেরাম আগামী ছয় মাসের মধ্যেই ভ্যাকসিন নিয়ে আসবে। তিন বছরের মধ্যে শিশুদের তা দেওয়া যাবে। এই ভ্যাকসিন যথেষ্ট নিরাপদ ও কার্যকর। কেন্দ্রের ঘোষণার পরেই তা বাজারে নিয়ে আসা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুনাওয়ালা।
উল্লেখ্য, ন্যাশনাল এক্সপার্ট গ্রুপ অন ভ্যাকসিন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর কোভিড (NEGVAC) এবং ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশন (NTAGI) ১৮ বছরের কম বয়সদের টিকা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছে। ইতিমধ্যেই ভারত বায়োটেক COVAXIN-এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনা করছে। এই বিষয়ে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল (DCGI)-এর কাছে নিরাপত্তা এবং ইমিউনোজেনিসিটি ডেটা জমা দিয়েছে।