কালো থেকে ফর্সা হওয়া নিয়ে চারপাশে কিছু কম বিজ্ঞাপনী আয়োজন নেই। কালো মেয়ে মানেই তার যেন তার বয়ফ্রেন্ড জুটবে না, বিয়ে হবে না, বিয়ে হলেও তার জন্য় বাবাকে মোটা টাকা পণ দিতে হবে, শ্বশুরবাড়িতে কদরযত্ন হবে না। আর তাই জন্য়েই তার ফর্সা হওয়া দরকার। এবং রাতারাতি ফর্সা হওয়ার জন্য় বাজারে হাজারো পণ্য়ের হাতছানি আর অঢেল বিজ্ঞাপনের আয়োজন। অবশেষে এই দিন শেষ হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় সরকার, ড্রাগ ও ম্য়াজিক রেমিডিজ ( অবজেকশনাবেল অ্য়াডভার্টাইজমেন্ট) অ্য়াক্ট, ১৯৫৪-এর সংশোধন করার জন্য় প্রস্তাব এনেছে।
এই আইন সংশোধনের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাতে করে কেউ এই ধরনের ফর্সা হওয়ার কোনওরকম টোটকা বা তার বিজ্ঞাপন দিলে, ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও সঙ্গে জেলও হতে পারে। তাই একবার এই আইন সংশোধন হয়ে গেলে, জেল ও মোটাটাকা জরিমানা হয়ে যাওয়ার ভয়ে, ফর্সা হওয়ার ক্রিম কসমেটিকসের বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে শুধু ফর্সা হওয়ার পণ্য়ই নয়, সেইসঙ্গে লম্বা হওয়ার টোটকা, চুল পড়ে যাওয়া বা পেকে যাওয়ার চটচলতি সমাধান, মোটা থেকে রোগা করে দেওয়া বা বধিরতা দূর করে দেওয়ার কোনওরকম বিজ্ঞাপনই আর কোথাও দেখা যাবে না।
যদিও বর্তমান আইনে, কেউ আজগুবি কিছু দাবি করে বিজ্ঞাপন দিলে ছ-মাস জেলের সংস্থান রয়েছে। যার মধ্য়ে তাবিজ-কবজ-মাদুলির মধ্য়ে দিয়ে রোগ সারানোর বিষয়টিও রয়েছে। তবে এই আইনের প্রয়োগ সেভাবে দেখা যায় না বলেই দাবি।
এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্য়োগকে স্বাগত জানিয়েছেন নারী আন্দোলনের কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য়, কালো থেকে ফর্সা হওয়ার বিজ্ঞাপন মেয়েদের প্রতি রীতিমতো বৈষম্য়মূলক। এখন তো আবার ছেলেদের ফর্সা হওয়ার জন্য়ও ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন দেখা যায়। এতে করে যাঁদের গায়ের রং কালো তাঁদের হীনমন্য়তা বাড়ে ও আত্মবিশ্বাস কমে। যা কখনও কোনও সভ্য় সমাজে কাম্য় নয়।