আজও আমাদের দেশে লুকিয়ে চুড়িয়ে যৌতুক প্রথা চালু আছে।
সাধারণত গয়না, কাপড়, রত্ন, গাড়ি, নগদ টাকার দাবি থাকে।
রাজকোটের এক মহিলা তাঁর বাবার কাছে এসব কিছুই চাইলেন না।
২২০০টি বই নিয়ে গেলেন শ্বশুরবাড়ি।
মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর সময় লোকে গয়না, কাপড়, রত্ন, গাড়ি, নগদ টাকা - এমন ধরণের উপহারই দিয়ে থাকে। কিন্তু, সম্প্রতি গুজরাতের রাজকোটের এক মহিলা বিয়ের সময় বাবার কাছ থেকে এক অদ্ভূত উপহার দাবি করলেন। ৬ মাস ধরে ভারতের বহু শহরে ঘুরে ঘুরে বাবা তা সংগ্রহও করে এনে দিলেন। আর, এই ঘটনা জানাজানি সোশ্য়াল মিডিয়ায় আসা মাত্র ভাইরাল হয়েছে। সকলেই ওই মহিলা আর তাঁর বাবার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
রাজকোটের নানামওয়া এলাকায় থাকেন পেশায় শিক্ষক হরদেব সিং জাদেজা। তাঁরই একমাত্র মেয়ে কিন্নরি। ছেলেবেলা থেকেই তাঁকে বই পড়ার নেশা ধরিয়েছিলেন তাঁর বাবা। নয় নয় করে তাঁর বাড়িতে ৫০০ বই রয়েছে। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে কানাডার ইঞ্জিনিয়ার পূর্বজিৎ সিং-এর বিয়ে ঠিক হয়। বাগদানের সময়েই কিন্নরি তাঁর বাবাকে বলেছিলেন বিয়েতে, যৌতুক দিতে চাইলে তাঁর সম ওজনের বই দিতে হবে।
মেয়ের এই আবদারে দারুণ খুশি হল তার বাবা হরদেব সিং জাদেজা। কন্যাকে প্রতিশ্রুতি দেন যৌতুক হিসাবে তিনি একটি গাড়ি ভর্তি করে ২২০০টি বই উপহার দেবেন। মেয়ের এই ইচ্ছাপূরণের জন্য বাবা প্রথমেই কী কী বই দেবেন তার একটি তালিকা তৈরি করেছিলেন। তারপর বেরিয়ে পড়েছিলেন সেই তালিকা মিলিয়ে বই সংগ্রহ করতে। ৬ মাস ধরে দিল্লি, বারানসি, বেঙ্গালুরুসহ বেশ কয়েকটি শহর থেকে সবকটি বই সংগ্রহ করেন। শিক্ষক বাবা জানিয়েছেন তারমধ্য়ে রয়েছে ইংরেজি, হিন্দি এবং গুজরাটি ভাষার আধুনিক লেখকদের লেখা বই।
চলতি সপ্তাহে মেয়েকে বিদায় দেওয়ার সময় সত্যি সত্যি তিনি একটি গাড়িতে করে মেয়ের সঙ্গে এই সমস্ত বই তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এই ঘটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে সকলেই এই বাবা ও মেয়ের প্রশংসা করছেন। অনেকেই বলেছেন আমাদের দেশে যৌতুক প্রথা সম্পূর্ণ নির্মূল হওয়া প্রয়োজন। তবে তা যতদিন না হচ্ছে ততদিন কিন্নরির বাবার মতো মেয়েদের বই যৌতুক দিন বাবারা। কারণ বই পড়া শুধু শব্দ ভাণ্ডারই বাড়ায় না, এতে করে যে কোনও বিষয়েই সম্মক ধারণা তৈরি হয়। চিন্তাভাবনার ধার বাড়ে।