G20 শীর্ষ সম্মেলনে থিমযুক্ত বাসুধৈব কুটুম্বকম অর্থাৎ এক পৃথিবী এক পরিবার আর এক ভবিষ্যৎ এই ধারনা তুলে ধরেছে।
G20 সামিটের উদ্যোক্তা ভারত । কিন্তু ভারত এই সম্মেলনকে শুধুমাত্র রাজধানী দিল্লির তৌহদ্দির মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখেনি। ২০০টি বৈঠকের অধিকাংশই ৩০টি শহরে ও ৩২টি কার্যপ্রবাহে অনুষ্ঠিত করার জন্য ভারত রীতিমত পদক্ষেপ করেছে। বিশ্বের কাছে দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র ও বিভিন্ন অঞ্চলকে ধরে রেকে এটিকে পুরোপুরি ব্র্যান্ডিং করে পেশ করেছে ভারত।
G20 শীর্ষ সম্মেলনে থিমযুক্ত বাসুধৈব কুটুম্বকম অর্থাৎ এক পৃথিবী এক পরিবার আর এক ভবিষ্যৎ এই ধারনা তুলে ধরেছে। ভারতের রাষ্ট্রপতির অধীনে সম্মিলিতভাবে ও কার্যকরভাবে বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্য গড়ে তেলার লক্ষ্যে ও ৯-১০ সেপ্টেম্বর G20 এর মধ্যে বহুবিধ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকগুলি দেশের বিভিন্ন স্থানে হবে।
G20 ও Think20
বৃহস্পতিবার ৩ অগাস্ট বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কর্ণাটকের মহীশূরে অনুষ্ঠিত G20 ও Think20 শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে ভারত G20 প্ল্যাটফর্মে কাজের পরিবর্তন প্রদর্শন করতে ও বিশ্বকে ভারতের জন্য প্রস্তুত করতে ও ভারতকে বিশ্বের জন্য প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছে। জয়শঙ্কর বিশ্বব্যাপী সমস্যা ও কীভাবে সেগুলি বিশ্বকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে সে বিষয়েও কথা বলেছেন। জয়শঙ্কর বলেছিলেন যে বিশ্বের একটি একক সমস্যা নেই যা একক পরিণতির দিকে নিয়ে যায়। এটা একাধিক উদ্বেগ- এগুলিকে বিবেচনায় নিয়ে G20এর ম্যান্ডেট যখন উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলি অন্বেষণ করে , সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিস্তৃত হয়েছে। এমনকি ইউরোপের উন্নয়নগুলি এটিকে প্রভাবিত করেছে। এর প্রতি দুর্ভেদ্য না হয়ে এই ধরনের উন্নয়নের প্রভাব অবশ্যই মানিয়ে নিতে হবে। ও সামঞ্জস্য রাখতে হবে।
চারদফা এজেন্ডা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ভারতে G20 এজেন্ডা হল অন্তর্ভূক্তিমূলক উত্তাভিষালী, কর্মমুখী, সিদ্ধান্তমূলত। ভারত ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে এক বছরের জন্য G20এর সভাপতিত্ব গ্রহণ করেছে। বালিতে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকে উইডোডোর কাছ থেকে ব্যাটন তুবে নিয়েছিলেন প্রধামমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, ভারত অন্তর্ভুক্তিমূলক, সিদ্ধান্তমূলক ও পদক্ষেপের জন্য কাজ করবে। G20এর প্রেসিডেন্সির সময় এই নীতি নেওয়া হয়েছিল।
G20এর ফোকাস
গ্রিন ডেভেলপমেন্ট, ক্লাইমেট ফাইন্যান্স, LiFEএর ভিত্তিক আন্দোলন যা দেশের সমৃদ্ধি ও প্রাচীন টেকসই ঐতিহ্য থেকে নেওয়া হয়েছে। ভাপত ভোক্তাদের জন্য বাজারগুলতে তৈরি করা হয়েছে।
তরান্বিত , স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধি
টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অগ্রগতি তরান্বিত করা
প্রযুক্তিগত রূপান্ত ও ডিজিটাল পাবলিক পরিকাঠামো
২১ শতকের জন্য বহিপাক্ষিক প্রতিষ্ঠান
নারী নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন
সারাবছর ধরে ভারের সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সমৃদ্ধি প্রদর্শনের জন্য কাশ্মীর থেকে কন্যা কুমারী পর্যন্ত একাধিক জায়গায় মিটিং করা হয়েছে। প্রতিনিধি ও অতিথিদের সংক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন ভাষা, রন্ধনপ্রণালী ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে।
নাগাল্যান্ডের হর্নবিল ফেস্টিভ্যাল ছিল এমনই একটি প্রধান সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যেটি তে ভারতের নতুন ভূমিকার শুরুতেই হাইলাইট করা হয়েছিল। এই বছর জুনের মাঝামাঝি G20 উন্নয়ন মন্ত্রীদের বৈঠকের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল বারাণসী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনারর জুত্তা উরপিলাইনেন বলেছিলেন যে শহরে তার থাকার অবিস্মরণীয়। একটি দারুন অভিজ্ঞতা। তিনি G20 ইভেন্টে না এলে এটি মিস করতেন।
ঐতিহ্যবাহী শহরগুলিতে রাষ্ট্রপ্রধানদের বৈঠকে আমন্ত্রিত করা হয়েছে দূরবর্তী অঞ্চলে পরিচালিত বড় ইভেন্টগুলিতে। ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশের পথকে প্রবাহিত করার জন্য বিভিন্ন শহরের প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। রাজ্য দুডডে সামরিক কমান্ডাদের সম্মেলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি স্থানান্তরিত করা হ্ছে ১৯৪৯ সালে শুরু হওয়া ৭৫ তম সেনা দিবসের কুচকাওয়াজ। দিল্লির সঙ্গে বেঙ্গালুরুতেও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
একবারের জন্য বিশ্ব একটি ভিন্ন আলো থেকে প্রকৃত ভারত সম্পর্ক একটি অন্তদৃষ্টি অর্জন করেছে। উদীয়মান পরাশক্তির শক্তি ও গৌরবকে গ্রহণ করেছে।
সরকার একটি 'সেলফি প্রচারাভিযান'ও শুরু করেছে যেখানে নাগরিকদের G20 থিমগুলির সাথে আলোকিত স্মৃতিস্তম্ভগুলির পটভূমিতে সেলফি তুলতে উত্সাহিত করা হয়েছে এবং এই প্রচারণার জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ১০০টি স্মৃতিস্তম্ভের তালিকাতে ইউনেস্কোর ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলিও রয়েছে৷ কিছু লোকের কাছে, এই উদ্যোগগুলি শুরুতে অযৌক্তিক মনে হতে পারে, কিন্তু তারা সরকারের কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে জনসাধারণকে বন্ধনে অনেক দূর এগিয়ে যায়।
লেখকঃ গিরিশ লিঙ্গান্না, বেঙ্গালুরুর প্রতিরক্ষা, মাহাকাশ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
আরও পড়ুনঃ
পতিতা বা সতী শব্ধ ব্যবহার করা যাবে না, লিঙ্গবৈষম্য রুখতে নতুন হ্যান্ডবুক সুপ্রিম কোর্টের
'আমার ভাল বন্ধু তুলসী ভাই', বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানকে ভারতে ভাই বলে উষ্ণ অভ্যর্থনা মোদীর