প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে ফের পৌঁছল এক যুগান্তকারী বিচারের আর্জি। স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টের অধীনে সমকামীদের বিয়ে আসবে কিনা, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।
সমকামী যুগলের বিয়েকে দেশে আইনি মর্যাদা দেওয়া হোক, এই আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন এক সমকামী যুগল। সংবিধানে উল্লিখিত বিশেষ বিবাহের আইন, বা স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট, ১৯৫৪-র অধীনে সমকামী বিয়েকেও যেন ভারতে আইনিভাবে স্বীকৃত করা হয়, সেই আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন হায়দরাবাদের দুই সমকামী পুরুষ। ২৫ নভেম্বর, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানি হয়। এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র সরকার এবং অ্যাটর্নি জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার মতামত কী, তা স্পষ্ট করে জানতে চেয়েছে ভারতের শীর্ষ আদালত।
সমকামী বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদনকারী যুগলের নাম সুপ্রিয় চক্রবর্তী ও অভয় দাং। এই দুই পুরুষ বিগত ১০ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন। বর্তমানে এই দুজন হায়দরাবাদের বসবাস করেন। ২০২০ সালে কোভিড মহামারীর সময়ে দুজনের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আলাপ পরিচয় হয় এবং দুই পরিবারই সুপ্রিয় এবং অভয়ের সম্পর্ককে মেনে নেয়। ২০২১ সালে দুই প্রেমিক একসঙ্গেই করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়ে যখন দুজনে সুস্থ হয়ে ওঠেন, তখন তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, সারাজীবন দুজনে বিয়ে করে একসঙ্গে থাকবেন। তাঁদের সম্পর্ক ৯ বছর পূর্ণ করে ২০২১ সালে, ওই বছরই ডিসেম্বর মাসে তাঁদের বাগদান সম্পন্ন হয় পরিবার এবং আত্মীয় স্বজনের উপস্থিতিতে। এবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে দেশের আইন।
২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট যুগান্তকারী রায় দিয়েছিল যে, ভারতে সমকামিতা অপরাধ নয়। সেই রায়ের ওপর ভরসা রেখেই তাঁরা নিজেদের বাগদান সেরেছিলেন। শুধু তাঁরাই নন, দেশের বিভিন্ন জায়গায়, এমনকি, কলকাতাতেও সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ের পরে একাধিক সমপ্রেমী যুগল বিয়ে করে একসঙ্গে জীবন শুরু করেছেন। এবার সেই বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তুললেন এই যুগল। তাঁদের আর্জি মেনে শুক্রবার সমলিঙ্গের বিবাহের আইনি বৈধতা নিয়ে বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিল সুপ্রিম কোর্ট।
সমকামী যুগলের আবেদনে বলা হয়েছে, সমাজের সমলিঙ্গ দম্পতি আর বিপরীত লিঙ্গের দম্পতি, উভয়কেই সমান আইনি আর সামাজিক মর্যাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে ফারাক সৃষ্টি করছে এই স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট। ইতিমধ্যেই, দিল্লি হাইকোর্ট ও কেরল হাইকোর্টেও বর্তমানে ৯টি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে সমলিঙ্গের বিবাহকে বিশেষ বিবাহ আইনে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। এবিষয়ে বিবেচনা করে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্র সরকারকে মতামত দিতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন-
প্রত্যেক ১১ মিনিটে নিজের পরিবারের দ্বারাই খুন হচ্ছেন ১ জন করে মহিলা, আন্তর্জাতিক হিংসা দূরীকরণ দিবসে চাঞ্চল্যকর বার্তা রাষ্ট্রসঙ্ঘের
সোনা পাচারেও জড়িয়ে গেল রাজ্যের শাসক দলের নাম, গ্রেফতার বনগাঁর দাপুটে তৃণমূল নেতার ছেলে