নয় নয় করে পার হয়ে গেছে ১৮টি বসন্ত। অবশেষে নিজের মাকে খুঁজে পেলেন পাকিস্তান ফেরত গীতা। প্রায় দেড় যুগ পর মহারাষ্ট্রে নিজের বাড়িতে পৌঁছালেন তিনি। ছোট্ট বেলায় ভুল করে সীমান্ত পার হয়ে চলে গিয়েছিলেন পাকিস্তানে। কথা বলতে পারতেন না। কিন্তু কোনও রকমে পাকিস্তানের প্রশাসনকে বুঝিয়েছিলেন তিনি ভারতীয়। তারপর তৎকালীন বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের উদ্যোগে ২০১৫ সালে তিনি ভারতে ফিরে আসেন। কিন্তু তারপরেই সমস্যার জট অব্যাহত ছিল। দেশে ফিরেও মায়ের কাছে পৌঁছাতে লেগে গেল ৬ বছর।
গীতাকে মায়ের কাছে ফিরেয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন সুষমা। কিন্তু মায়ের কাছে তাঁকে পৌঁছে দেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। তবে হাল ছাড়েননি গীতা। দেশে ফিরেও খুঁজে বেড়িয়েছেন মাকে। যেখানে খবর পেয়েছেন ছুটে গেছেন। একাধিকবার ব্যর্থও হয়েছেন। তারপর আবার নতুন উদ্যমে নিজের পরিবারকে খোঁজা শুরু করেছেন তিনি।
সবশেষে তিনি জানতে পারেন মহারাষ্ট্রের নয়গাঁও এলাকায় তাঁর বাড়ি। সেখানে গিয়ে নিজের মাকে চিন্তেও পারেন তিনি। কিন্তু তারপরেই মা ও মেয়ের ডিএনএ পরীক্ষা হয়। তাতেই জানান হয়েছে তাঁরা একে অপরের আত্মীয়। এদেশে এসেই বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে গিয়েছিলেন গীতা। পরিবারের খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রায় ১২টি পরিবারের কাছে গিয়েছিল স্বেচ্ছেসেবী সংস্থাটি। শেষপর্যন্ত মহারাষ্ট্রের পরিবারটি জানায় গীতা দীর্ঘ দিন ধরেই নিখোঁজ। যদিও তাঁরা জানিয়েছেন তাঁদের মেয়ের নাম ছিল রাধা। তাঁরা আরও জানিয়েছেন তাঁদের মেয়ের পেটে পোড়া দাগ রয়েছে। তাঁদের দেওয়া সব তথ্য মিলে যায় বলেও পুলিশ জানিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি জানিয়েছে গীতার মা তার আগের পক্ষের স্বামীকে ছেড়ে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছেন। কিন্তু মেয়েকে ফিরে পেয়ে মা খুশি হয়েছেন।
সীমান্ত পেরেয়ে পাকিস্তানে চলে যাওয়ার পর সেখানের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ছিলেন গীতা। ২০০৩ সাল থেকে তাঁরা আগলে রেখেছিল গীতাকে। নিজের মাকে খুঁজে পাওয়ার কথা তাঁদেরও জানিয়েছেন গীতা। তাতে তাঁরা খুশি হয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যমেও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে সেই খবর জানান হয়েছে। সংস্থাটি প্রায় ১২টি মেয়েকে কাগের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরেছে বলেও জানিয়েছে।