এক বা দুই প্রজন্ম নয়। টানা ১৫ প্রজন্ম ধরেই মন্দিরের নকসা তৈরির সঙ্গে জড়িত সোমপুরা পরিবার। ভারতের পাশাপাশি বিদেশেও মন্দির তৈরির জন্য নকসা তাদের পরিবারের সদস্যেরাই তৈরি করেন। গুজরাতের আমেদাবাদের বাসিন্দা এই সোমপুরা পরিবার। তাঁদের পূর্বসুরীরাই গুজরাতের অক্ষরধাম আর স্বাধীনতার পর নির্মিত সোমনাথ মন্দিরের নকসা তৈরি করেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে। বর্তমানে এই পরিবার রামমন্দিরের নকসাও তৈরি করেছে বলে জানিয়ছে।
ভারত ও বিদেশে এখনও পর্যন্ত ১৩১টি মন্দিরের নকসা তৈরি করেছে সোমপুরা পরিবারের সদস্যরা। বহুকাল ধরে তাঁরা মন্দিরের নকসা তৈরি করেছেন। তাই প্রথম কোনও মন্দিরের নকসা এই পরিবারের সদস্যরা তৈরি করেছিল তা বলা সম্ভব নয় বলেও জানান হয়েছে।
অযোধ্যায় নবনির্মিত রাম মন্দিরের নকসা তৈরি করেছেন এই বর্তমান সদস্য চন্দ্রকান্ত সোমপুরা ও তাঁর দুই ছেলে নিখিল আর আশিস। একটি দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় ৭৭ বছরের চন্দ্রকান্ত বর্তমানে বাড়ির বাইরে যেতে পারেন না । তাই প্রয়োজনীয় কাজ সারেন বাড়ি থেকেই। মূল দায়িত্ব সামলান ৫৫ বছরের নিখিল ও তাঁর ভাই ৪৯ বছরের আশিস। নিখিলের বড়ছেলেও মন্দিরের নকসা তৈরির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বলেও পরিবারের তরফ থেকে জানান হয়েছে। আশিসের কথায় চন্দ্রকান্ত তাঁর দাদু প্রভাশঙ্করের কাছে মন্দিরের নকসা তৈরির কাজ শিখতে শুরু করেছিলেন। প্রভাশঙ্কর প্রায় ১৪টি বই লিখেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সোমপুরা পরিবারের সদস্যদের কথায় ১৯৯৮ সালেই অযোধ্য়ায় রাম মন্দিরের নকসা তৈরি করা হয়েছিল। বিড়লা পরিবারের মন্দিরগুলি বংশ-পরম্পরায় তাঁরাই নির্মাণ করেছিলেন। সেই সূত্র ধরেই বিড়লা পরিবারের সদস্যরা তাঁদের তৎকালীন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রধান অশোক সিংহলের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী তাঁরা শুধু মন্দির তৈরির নক্সাই বানাবেন। মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব তাঁদের নয়।
চন্দ্রকান্ত সোমপুরার বক্তব্য অনুযায়ী ভারতের মন্দিরগুলি স্থাপত্যকে তিনটিভাগে ভাগ করা হয়-- নাগারা, দ্রাবিড় আর বাসর। নাগরা পদ্ধতিতেই নির্মাণ হবে রাম মন্দির। এই ধরনের মন্দির উত্তরভারতে দেখতে পাওয়া যায়। মন্দিরের গর্ভগৃহটি অষ্টভূজ আকারের হবে। তিনি আরও বলেন সোমনাথ মন্দিরের সঙ্গে অনেকটা মিল থাকবে রাম মন্দিরের। মন্দিরের মূল কাঠামোটি প্রস্তাবিত মডেল অনুযায়ী রাখা হবে। মন্দিরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা যথাক্রমে ৩৬০, ২৩৫ ও ১৬১ ফুট হবে। পুরো মন্দিরে ৩৬৬টি পিলার থাকবে। গর্ভগৃহ হবে অষ্টভূজ আকারের।