সংসদে দেশব্যপী এনআরসির কথা তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সম্প্রতি বিজেপি শাসিত হরিয়ানা রাজ্যে অসমের ধাঁচে এনআরসি তৈরির কথা বলা হয়েছিল
তারপরই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল-সহ মন্ত্রীসভার সদস্যদের নাগরিকত্বের প্রমাণ চেয়ে হয়েছিল মামলা
তাতেই জানা গেল, সরকারের কাছে এই সরকারের এই মাথাদের নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণই নেই
ঝুলি থেকে এক এক করে বেড়াল বের হচ্ছে। সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশজুড়ে এনআরসি চালু করার ডাক দেওয়ার পরই এক এক করে বিজেপি নেতামন্ত্রীরা এই নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন। পরে তাঁরা সেই অবস্থান থেকে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হলেও, বিজেপি নেতাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ চেয়েই দেশের বিভিন্ন জায়গায় তথ্য অধিকার আইনে একাধিক মামলা হয়েছিল। তাতে দেখা যাচ্ছে তাবড় বিজেপি নেতাদেরই নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণ নেই। প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পর এই তালিকায় য়ুক্ত হল হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর-এর নামও।
গত ২০ শে জানুয়ারী, পিপি কাপুর নামে পানিপথের এক সমাজকর্মী হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্যরা, এবং রাজ্যপালের নাগরিকত্বের প্রমাণ সম্পর্কে বিশদ তথ্য চেয়ে একটি আরটিআই দায়ের করেছিলেন। এর জবাবে হরিয়ানার জন তথ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, সরকারের কাছে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর শুরু করে মন্ত্রীসভার সদস্যদের কারোর নাগরিকত্ব সম্পর্কিত কোনও নথি নেই। এমনকী রাজ্যপাল সত্যদেব নারায়ণ আর্য-ও এই দেশের নাগরিক তার প্রামাণ্য কোনও নতি সরকারের কাছে নেই।
হরিয়ানার জন তথ্য আধকারিক পুনম রাঠি জবাবি চিঠিতে বলেছেন, আরটিআই-এ যে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, সেই সম্পর্কিত কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। নাগরিকত্বের প্রামাণ্য নথিপত্র নির্বাচন কমিশনের কাছে মিললেও মিলতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি হরিয়ানায় এনআরসি তৈরি নিয়ে নৌবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লানবা এবং হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এইচএস ভাল্লার সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভাল্লা রাজ্যে অসামাজিক কাজকারবার হ্রাস করতে রাজ্যবাসীর জন্য নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র তৈরির সুপারিশ করেন। বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁরা অসমের ধাঁচে রাজ্যে এনআরসি বাস্তবায়িত করবেন। কিন্তু, আরটিআই-এর জবাব যা পাওয়া গেল, তাতে সেই ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী-সহ গোটা মন্ত্রীসভাকেই পাত্তারি গোটাতে হবে।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে 'জয় বাংলা সংসদ' নামে এক সংগঠনের সভাপতি প্রণোজিৎ দে, দেশের প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা ভারতের নাগরিক কিনা তা জানতে চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে মামলা করেছিলেন। নাম ছিল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানী-দেরও। জানা গিয়েছিল, তাঁরা সকলেই জন্মসূত্রে ভারতীয়। তবে তাঁদের যে ভারতেই জন্ম হয়েছে তা কোন নথির ভিত্তিতে প্রমাণ হয়েছে তা জানানো হয়নি। তাই প্রণোজিৎ এই নথির সন্ধানে ফের আরটিআই করেছেন।