ভারতে করোনা সংক্রমণ তার আপন খেয়ালে বেড়ে চলেছে
কিন্তু, মৃত্য়ুর হার অপ্রত্যাশিতভাবে কম
নতুন গবেষণা বলছে ভারতকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে হেটেরোলোগাস ইমিউনিটি
কী এই হেটেরোলোগাস ইমিউনিটি
ভারতে এখনও দাপট দেখাচ্ছে করোনাভাইরাস। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাটা এখন অনেকটা কমে এলেও, মহামারি এখনও দারুণভাবেই সক্রিয় রয়েছে। তবে ভারতের কোভিড রোগীদের বিশেষ করে অল্পবয়সীদের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সমযই প্রাণঘাতি হয়ে উঠতে পারছে না কোভিড। আর এর জন্য দায়ী একটি অন্য রোগের ভ্যাকসিন। তার ক্রস-প্রোটেকশন প্রক্রিয়ার জন্যই কোভিড ছুঁতে পারছে না অল্পবয়সী ভারতীয়দের। জিনোমিক প্রমাণ দিয়ে এমনটাই দাবি করা হয়েছে 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইমিউনোলজি'র এক গবেষণায়।
গবেষকদের দাবি, ওপিভি বা ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন অর্থাৎ ভারতে শিশুদের যে বাধ্যতামূলকভাবে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়, তার থেকে শরীরে যে দীর্ঘমেয়াদী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়, তা সারস-কোভ-২ ভাইরাস অর্থাৎ নতুন করোনাভাইরাসের থেকেও সুরক্ষা দিতে পারে। তাঁরা জদানিয়েছেন এর অন্যতম কারণ, পোলিও-র ভাইরাসের টাইপ ১ এবং টাইপ ৩-এর সঙ্গে করোনাভাইরাসের জৈবিক মিল রয়েছে। গবেষকরা বলেছেন এই কারণেই গোটা পৃথিবী জুড়েই করোনাভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণ সত্ত্বেও, ১০ বছরের কম বয়সী সংক্রামিত শিশুদের মৃত্যুর হার খুব কম।
গবেষকরা জানিয়েছেন, গোটা ভারতেই শিশুদের, ওপিভি, বিসিজি, হামের মতো বিবিন্ন রোগের ভ্যাকসিনের গণ টিকাকরণ কর্মসূচি চালু আছে। এই টিকাকরণের ধারাবাহিকতা থাকায় ভারতীয় শিশুদের শরীরে বিভিন্ন রকমের অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে একটি 'স্মৃতি প্রতিক্রিয়া' তৈরি হয়েছে। এক বা একাধিক প্রকারের অ্যান্টিবডি তাদের শরীরে উপস্থিত যা একই বা অনুরূপ ধরণের অ্যান্টিজেন বহনকারী নতুন প্যাথোজেনগুলিকেও সনাক্ত করতে পারে। যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় হেটেরোলোগাস ইমিউনিটি। এই কারণেই ভারতে কোভিড রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং মৃত্য়ুর হার অপ্রত্যাশিতভাবে কম।
তবে তাঁদের মতে বিভিন্ন ধরণের সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধেই সবচেয়ে ভালো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হল গার্ড ইমিউনিটি বা গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা। স্মলপক্স, পোলিওভাইরাস, হাম-এর মতো রোগের ক্ষেত্রে তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত বলে জানিয়েছেন তাঁরা। চলতি মহামারির সময়েও গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা ককার্যকর ভূমিকা নিতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে ভারতে গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা তৈরি হওয়ার আগেই তৃণমূল পর্যায়ে কঠোর টিকাদান কর্মসূচির কারণে সার্স-কোভ-২ এর বিরুদ্ধে সুরক্ষাকবচ তৈরি হয়ে গিয়েছে।