জ্বালানি তেলে দাম আকাশ ছোঁয়া। ১৬তম দিনেও পেট্রোল ও ডিজেলের দাম সর্বকালের রেকর্ড ছুঁয়ে অবস্থার করছে। সোমবার সংসদে কেন্দ্রীয় সরকার স্বীকার করে নিল পেট্রোল ও ডিজেল থেকে প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব আদায় হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায় জ্বালানি তেলের শুল্ক ও সারচার্জের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আদায় করা হয়। সোমবার সংসদে কেন্দ্র এই তথ্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে আপাতত জ্বালানি তেলকে জিএসটির আওতায় আনার কোনও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি।
লোকসভায় একটি প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর জানিয়েছেন সাধারণত করের ব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট ভর্তুকি, ক্ষতিপুরণসহ বিভিন্ন কারণে দেশের পেট্রোলিয়াম পণ্যগুলির দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি বা কম হয়। যার পূর্ণ বিবরণ বজায় থাকে না সরকারের মাধ্যমে। একই সঙ্গে তিনি বলেন জ্বালানির উচ্চশুল্ক ন্যায়সংগত। কারণ বর্তমান অর্থবর্ষের কথা মাথায় রেখে অবকাঠামো ও ব্যায়ের অন্যান্য উন্নয়নমূলক বিষয়গুলির জন্য আয়ের উৎস তৈরি করার জন্য আবগারি শুল্কের হারকে ক্রমাঙ্কিত করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে ২০২০ সালের ৬ মে লিটার প্রতি পেট্রোল থেকে কর হিসেবে আদায় করা হয়েছিল ৩৩ টাকা। আর ডিজেল থেকে আয়ের পরিমান ছিল লিটার প্রতি ৩২ টাকা। মার্চ থেকে ৫ মে মাস পর্যন্ত লিটার প্রতি পেট্রোল আর ডিজেলের আয়ের পরিমাণ ছিল ২৩ ও ১৯ টাকা। ২০২০ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত এই আয়ের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৩ ও ১৬ টাকা।
পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এই অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। যা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির দাবি বেঁধে দেওয়া হোক জ্বালানি তেলের দাম। কিন্তু আপাতত সেই রাস্তায় কেন্দ্রীয় সরকার হাঁটছে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ব বাজারের অপরিশোধিত তেলের দামের ওপর নির্ভর করে। বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেশি হলে ভারতীয় বাজারে তেলের দাম বাড়তে পারে। কিন্ত বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম একই রয়েছে। অপরিশোধিত তেলের দামও নিম্মগামী। কিন্তু তারপরেও ভারতীয় বাজারে জ্বালানি তেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকার অত্যাধিক কর আরোপ করায় সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা বাড়ছে। কেন্দ্র ও রাজ্য পেট্রোল ও ডিজেলের খুচরো বিক্রির ওপর একাধিক শুল্ক আরোপ করে। পোট্রোর ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। ডিজেলের শুল্কের পরিমাণ ৫৪ শতাংশ। যদি কোনও গ্রাহক এক লিটার পেট্রোলের ১০০ টাকায় কেনেন তাহলে ৩৩ টাকা পায় কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যও জ্বালানি তেলের ওপর সেস ও সারচার্জ বসায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে পাহাড় প্রমাণ এই করের বোঝার হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দেওয়া জন্য পেট্রোল ও ডিজেলকে জিএসটি তালিকাভুক্ত করা। কিন্তু আপাতত কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।