জানুয়ারি মাসে ছাদে উঠলেই দেখতে পাবেন লক্ষ লক্ষ তারাখসা! হঠাৎ ভারতে কেন এত উল্কাপাত?
নতুন বছরেই মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থাকবে ভারতবর্ষ। জানুয়ারি মাসেই ঘটবে বিস্ময়কর ঘটনা। হঠাৎ করেই আলোর খেলা শুরু হবে আকাশজুড়ে। আতশবাজির মতো উল্কাবৃষ্টি হবে গোটা ভারতবর্ষের আকাশে। এই সময়ে আকাশের দিকে তাকালেই প্রতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ টি উল্কা পাওয়া যাবে। ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে কোয়াড্র্যানটিড উল্কাবৃষ্টি। আগামী দিনে আরও বাড়বে এই উল্কাবৃষ্টির পরিমাণ।
গত ১৩ ডিসেম্বর থেকেও শুরু হয়েছিল আরও এক প্রকার উল্কাবৃষ্টি। ভারতের নৈনিতালের আর্যভট্ট অবজারভেশনাল সায়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআইইএস)-এর বিজ্ঞানী ডক্টর বীরেন্দ্র যাদবের মতে, জ্যোতির্বিদ্যায় এই ঘটনার নাম ‘জেমিনিড উল্কাপাত।’ তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়াটি নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল, যা ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনাকে ‘তারাখসা’ বলা হলেও এর সঙ্গে তারার কোন সম্পর্ক নেই। কোন ধুমকেতুর ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে তার দিকে ছুটে আসতে থাকে। কিন্তু ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার আগে সেগুলি জ্বলতে শুরু করে। এই জ্বলন্ত উল্কা ধংসাবশেষকে ‘তারাখসা’ বলা হয়।
তবে ডিসেম্বরেই শেষ নয়, জানুয়ারি মাসেও চলবে এই কোয়াড্যানট্রিড উল্কাবৃষ্টি। NASA-র মতে এই উল্কাবৃষ্টি। NASA-র মতে, এই উল্কাবৃষ্টি ২০০৩ EH1 গ্রহাণু থেকে তৈরি হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উল্কাবৃষ্টি ধূমকেতুর কারণেই হয়ে থাকে। উল্কাবৃষ্টি মূলত তখন ঘটে যখন পৃথিবী একটি ধূমকেতুর অবশিষ্ট ধূলিকণার মেঘের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করে। এই ধূলিকণা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে দ্রুতগতিতে জ্বলতে থাকে, যা আমরা আকাশে উজ্জ্বল রেখা হিসাবে দেখতে পাই। ৩ জানুয়ারির উল্কাবৃষ্টি কুখ্যাত ধূমকেতু “কোয়াড্রান্টিডস” এর অবশিষ্ট ধূলিকণার কারণেই হবে।
উল্কাবৃষ্টি শুরু হবে রাত ১১টা থেকে এবং ভোর পর্যন্ত চলবে। তবে, পিক সময় থাকবে ভোর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত। এই সময় আকাশ একদম পরিষ্কার থাকলে প্রতি ঘণ্টায় ৬০-৮০টি উল্কা দেখতে পাওয়া যাবে।
২০২৫ সালের ৩ জানুয়ারি রাতের আকাশে দেখা যাবে উল্কাবৃষ্টি। এটি একটি বিরল এবং মনোমুগ্ধকর মহাজাগতিক ঘটনা। এই সময় অসংখ্য উল্কা আকাশে ঝরে পড়ার মতো দৃশ্য তৈরি করবে। উল্কাবৃষ্টি দেখতে উত্সুকরা অবশ্যই এই দিনটি তাদের ক্যালেন্ডারে চিহ্নিত করে রাখুন।
বিজ্ঞানী ডক্টর বীরেন্দ্র যাদবের মতে, কোন ধুমকেতুর ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে তার দিকে ছুটে আসতে থাকে। কিন্তু ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার আগে সেগুলি জ্বলতে শুরু করে। এই জ্বলন্ত উল্কা ধংসাবশেষকে ধূমকেতু বা ‘তারাখসা’ বলা হয়।