'আত্মনির্ভর' ভারতেই রেকর্ড সময়ে তৈরি করোনার টিকা, বাজারে আসছে কবে

যেন প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন সফল হওয়া

আত্মনির্ভর ভারতেই তৈরি হল করোনার টিকা

রেকর্ড সময়ে তৈরির পর এবার মানবদেহে পরীক্ষার পালা

ভারত বায়োটেকের এই ওষুধ বাজারে আসবে কবে

 

amartya lahiri | Published : Jun 29, 2020 5:06 PM IST

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভর ভারত-এর স্বপ্নের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল দেশ। এতদিন পর্যন্ত আমেরিকা, ব্রিটেন, চিন বা বহির্বিশ্বের আরও  কোনও কোনও দেশে করোনাভাইরাস-এর ভ্যাকসিন বা টিকা তৈরির বিভিন্ন প্রক্রিয়ার খবর পাওয়া যেত। সোমবার কিন্তু দেশের মাটিতেই একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা কোভিড-১৯-এর টিকা তৈরির পথে অনেকটা এগিয়ে গেল। মানবদেহে টিকা পরীক্ষার অনুমতি পেল হায়দরাবাদের সংস্থা ভারত বায়োটেক। আর তাদের তৈরি টিকার নাম কোভ্যাক্সিন।

সংস্থার দাবি করেছে কোভ্যাক্সিনই ভারতের প্রথম 'কোভিড-১৯'এর সম্ভাব্য টিকা। ভারত বায়োটেক এই টিকা তৈরিতে সহযোগিতায় করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ বা আইসিএমআর এবং পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি বা এনআইভি-র। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, সারস-কোভ-২ স্ট্রেইনটি পুনের এনআইভি-তে বিচ্ছিন্ন করে ভারত বায়োটেকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর সেই স্ট্রেইনটি থেকেই হায়দরাবাদের জেনোম ভ্যালিতে অবস্থিত ভারত বায়োটেকের বায়ো-সেফটি লেভেল ৩ গবেষণাগারে এই টিকা তৈরি করা হয়েছে।

টিকাটি তৈরি হওয়ার পর প্রথমে ভারত বায়োটেক টিকাটির প্রিক্লিনিকাল স্টাডি অর্থাৎ মানবদেহে পরীক্ষার আগে পরীক্ষাগারে টিকাটিকে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। সেই পরীক্ষায় টিকাটি মানবদেহে প্রয়োগের বিষয়ে কতটা সুরক্ষিত এবং কতটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে টিকাটির তা উঠে এসেছে। সেই ফলাফল ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের অধীনে ইন্ডিয়ান ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল-এর কাছে জমা দেওয়ার পরে, প্রথম ও দ্বিতীয় মানব ক্লিনিকাল ট্রায়াল দেওয়ার অনুমতি মিলেছে। অনুমতি পাওয়ার পর জুলাই মাস থেকেই য়ে ভারত জুড়ে এই মানব দেহে টিকাটি প্রয়োগ করে পরীক্ষা চালানো হবে।

তবে টিকা তৈরির পরবর্তী পদক্ষেপগুলিতে কতটা সময় লাগতে পারে, কিংবা ভ্যাকসিনটি কবে বাজারে আসতে পারে, সেই সম্পর্কে এখনই কিছু জানাতে পারছে না ভারত বায়োটেক। তবে ওষুধ প্রস্তুত শিল্পের বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভারত বায়োটেক এরমধ্যেই যে গতিতে কাজ করেছে, তাতে পরবর্তী পর্বগুলিও শেষ হতে বেশি সময় লাগবে না। তাদের মানব দেহে প্রয়োগের অনুমতি পাওয়ার বিষয় থেকে অনুমান করা হচ্ছে অতিমধ্য়েই তাদের তৈরি টিকা একটা স্থিতিশীল জায়গায় পৌঁছেছে এবং পশুর উপর প্রয়োগ করে পরীক্ষা করার পর্বও মিটে গিয়েছে। চলতি বছরের ৯ মে আইসিএমআর ভারত বায়োটেকের সঙ্গে কোভিড-১৯ এর সম্পূর্ণ দেশিয় প্রযুক্তিতে ভ্যাকসিন তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল। অর্থাৎ, দুইমাসেরও কম সময়ে তারা এতদূর পৌঁছে গিয়েছে। যা অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে অন্তত ৩ থেকে ৪ মাস লেগেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবদেহে পরীক্ষার প্রথম ধাপে দেখা হবে মানবদেহে প্রয়োগের পর ওষুধটি কীরকম আচরণ করছে। কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা। তার ভিত্তিতে ওষুধটির অদলবদল করা হতে পারে। দ্বিতীয় দফায় টিকাটি কত পরিমাণে মানবদেহে ব্যবহার করতে হবে তা যাচাই করা হবে। প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপের এই পুরো প্রক্রিয়ায় আরও তিন থেকে চার মাস সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। কাজেই সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যেই ভারতে তৈরি করোনার টিকা চলে আসবে ভারতের বাজারে।

 

Share this article
click me!