বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ রুখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হল ভারত। সার্কগোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এদিন করোনা প্রতিরোধে ফান্ড তৈরির কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ভারতের তরফে ১কোটি মার্কিন ডলার দেওয়ার কথা বলেন নরেন্দ্র মোদী।
পরিসংখ্য়ান বলছে, বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায দেড় লক্ষ। এরই মধ্যে রবিবার বিকেলে করোনা মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে ভিডিও কনফারেন্সে বসেছিল সার্কগোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি। করোনা প্রতিরোধে সেখানেই এই ঘোষণা করেন মোদী। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সবারই উচিত করোনা রুখতে একটা তহবিল তৈরি করা। যা সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিকে এই মারণ রোগ প্রতিরোধে সাহায্য় করবে।
এদিন বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এটা আমাদের কাছে একটা কঠিন লড়াই। হঠাৎ করে কোনও পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। করোনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হবে। ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে হবে। কোনও রকম গুজবে কান দেওয়া চলবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য তুলে আনেন। তিনি বলেন ভয়ঙ্কর এই জীবানুর সংক্রমণকে আগেই আন্তর্জাতিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সার্কভুক্ত দেশগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫০।
ভারত তার নিজস্ব রীতি অনুযায়ী প্রতিবেশী দেশগুলিকে সাহায্য করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১,৪০০ ভারতীয়কে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। সেই তালিকায় প্রতিবেশী দেশের নাগরিকরাও ছিলেন বলে জানিয়েছেন মোদী। করোনার সংক্রমণ রুখতে ভারত কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তাও প্রতিবেশী দেশগুলিকে জানান তিনি।
ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা- দক্ষিণ এশিয়ার এই আটটি দেশ সার্কভুক্ত দেশের আওয়াত পড়েছে। পাকিস্তান বাদে সবকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাই অংশ নিয়েছিলেন ভিডিও কনফারেন্সে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রহিম মহম্মদ সোহেল করোনার সংক্রমণ রুখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ভারত থেকে সাহায্য পাওয়ার জন্য এদেশের নাগরিক ও সারকারকেও সাধুবাদ জানান তিনি।
আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি একটি ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন করোনা মোকাবিলায়। পাশাপাশি তিনি বলেন, সীমান্ত হওয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় খাবার ও ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি তিনি দূরশিক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখার আর্জি জানিয়েছেন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে এই পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। পাশাপাশি তিনি বলেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কের চেহারা নেওয়া যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে শ্রীলঙ্কার পর্যটন ব্যবসার ওপর। গতবছর সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকে খারাপ অবস্থায় ছিল শ্রীলঙ্কার পর্যটন শিল্প। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সবকটি দেশের একসঙ্গে কাজ করা উচিত বলেও তিনি মনে করেন।
পাকিস্তানের পক্ষে ভিডিও কনফারেন্স অংশ নিয়েছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাফর মির্জা। তিনি বলেন, করোনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাক সরকারও। দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশগুলির যৌথ প্রয়াস করোনা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী তিন সপ্তাহের জন্য দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে বলেও জানিয়ছেন তিনি। দুসপ্তাহের জন্য বন্ধ সীমান্ত। একাধিক উড়ান বাতিল করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।