ভারতীয় শিশুরা অল্প বয়স থেকেই পর্নোগ্রাফির সংস্পর্শে আসেছ। শৈশবের পর্ন ছবি দেখার গড় বয়স হল মাত্র ১৩। পর্ন সাইটগুলি ব্লক করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সেগুলির ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে।
দুঃসংবাদ, ভারতীয় শিশুরা মাত্র ১৩ বছর কি তারও কম বয়স থেকে পর্ন দেখা শুরু করেছে। যা তাদের আগামী জীবন বিপন্ন করে তুলবে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা রিপোর্টে তেমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ভারতীয় শিশুরা অল্প বয়স থেকেই পর্নোগ্রাফির সংস্পর্শে আসেছ। শৈশবের পর্ন ছবি দেখার গড় বয়স হল মাত্র ১৩। পর্ন সাইটগুলি ব্লক করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সেগুলির ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে। নিষেধাজ্ঞা , পরিবারের নিষেধ সত্ত্বেও ভারতীয় শিশুরা সেই দিকেই ঝুঁকছে। তাদের মধ্যে পর্ন ছবি নিয়ে কৌতুহল তৈরি হচ্ছে। যা তাদের ক্রমশই অন্ধকার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তবে এই বিষয়টি শিশুদের ওপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করবে বলেও সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
কারা পর্ন সাইট বা ছবিদের দেখার ব্যাপারে আগ্রহী-
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যে শিশুরা বাবা-মায়ের কাছে নিরাপদ বলে নিজেদের মনে করে না, বাবা-মায়ের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে, বাবা-মা যে শিশুদের বেশি সময় দেয় না তাদেরই পর্নগ্রাফির প্রতি আশক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নিম্নরুচির পরিবারগুলি বা নিম্ন আয়ের পরিবারগুলির শিশু সন্তানরা পর্ন দেখার প্রতি আগ্রহী হয়। যেসব পরিবারে অশান্তি হয়, বাবা ও মায়ের মধ্যে সমস্যা নিত্য দিনের ঘটনা সেই পরিবারের সন্তানদের পারিবারিক ট্রামা পর্ন দেখার প্রতি আকৃষ্ট করে। বিশেষজ্ঞদের কথায় বেঙ্গালুরুর ৭ বছর বয়সী একটি ছেলে জানিয়েছে সে বাড়ির অশান্তি মোকাবিলা করার জন্য যে নিয়মিত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্ধারিত বিষয়বস্তুগুলি দেখে মনে শান্তি খুঁজে পেত। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস (নিমহান্স)-এর SHUT (সার্ভিস ফর হেলদি ইউজ অফ টেকনোলজি) ক্লিনিকের ক্লিনিকাল সাইকোলজির অধ্যাপক এবং সমন্বয়কারী ড. মনোজ কুমার শর্মা টাইম অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য তুলে ধরেছেন।
বিশেষজ্ঞরা ক্লিনিকাল সাইকোলজির একটি জাতীয় সম্মেলনে একটি প্যানেল আলোচনার সময় মস্তিষ্কে পর্ণোগ্রাফির বিরুপ প্রভাব নিয়ে আলোচনা তরেছে। সেখানেই ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির অধ্যাপক নিতিন আনন্দ বলেছেন, মস্তিস্কের ডোপামিন পুরস্কার সিস্টেমের ওপর প্রভাব পড়ে। বয়ঃসন্ধিকালের দ্বারা পর্নোগ্রাফির অত্যধিক ব্যবহার মস্তিষ্কের আনন্দ কেন্দ্রকে ব্যাহত করতে পারে, যা কর্মহীনতার দিকে পরিচালিত করে। উন্নত ডোপামিন উৎপাদন কেন্দ্রকে শুধুমাত্র উচ্চ-উত্তেজনামূলক অভিজ্ঞতা থেকে আনন্দ পেতে পারে, যা একই ধরনের উদ্দীপনা থেকে স্যাচুরেশনের কারণে ব্যক্তিদের অভিনবত্ব খোঁজার দিকে ঠেলে দেয়।
শিশুদের মধ্যে পর্নোগ্রাফি দেখার আগ্রহ বাড়ার কারণ হিসেব যৌন শিক্ষার অভাবকে যেমন দায়ী করা হয়েছে তেমনই ইন্টারনেটে পর্নের সহজ অ্যাক্সেসকেও কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। শিশুদের সঠিক মানসিক গঠনের জন্য স্কুলগুলিতে যৌন শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার কথা জোর দিয়ে বলেছে।
আলোচনা সভায় পর্নোগ্রাফি প্রভাব কীভাবে সম্পর্কের ওপর পড়ছে তা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। যারা বেশি পর্নোগ্রাফি দেখে তাদের সম্পর্কে বেশিদিন টেকে না। ঘনিষ্টতায় সমস্য়া তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যে কোনও সম্পর্কের জন্য কথাবার্তার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু পর্নোগ্রাফির পিছনে সময় ব্যায় করলে সম্পর্কের মধ্যে যে টানাপোড়েন তৈরি হয় তা দূর করা যায় না।