চেন্নাই, মুম্বই, নাগপুর - তিন শহর জুড়ে চলছে জো বাইডেনের ভারতীয় পূর্বপুরুষের খোঁজ

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় সংযোগ নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই

এবার জল্পনা জো বাইডেনের ভারতীয় শিকড় নিয়ে

এর মূলে আছে ভারত থেকে জো বাইডেনকে লেখা একটি চিঠি

যার জেরে অতিষ্ট মুম্বই ও নাগপুরের এক বাইডেন পরিবার

 

amartya lahiri | Published : Nov 14, 2020 11:22 AM IST / Updated: Nov 19 2020, 12:10 PM IST

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট কমলা হ্যারিসের পূর্বসূরি নিয়ে ইতিমধ্যেই গর্বিত ভারতীয়রা। জো বাইডেন প্রশাসনে ভারতীয় বংশোদ্ভূতের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাও ভারতীয়দের আবেগাপ্লুত করে তুলেছে। এবার স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট জো বাইডেনেরও সম্ভাব্য ভারতীয় শিকড় জন্য কোড়াখুড়ি করা শুরু করেছেন ভারতীয়রা। কেউ বলছেন চেন্নাইয়ে রয়েছে জো বাইডেনের আত্মীয়রা, কেউ আবার বাইডেনের আত্মীয়দের খুঁজে রেয়েছেন মুম্বই-নাগপুরে।

জল্পনার মূলে একটি চিঠি
 
নির্বাচিত হওয়ার পর কিন্তু একবারও জো বাইডেনের তাঁর কোনও ভারতীয় সংযোগ প্রতিষ্টা করতে চাননি। তবে ২০১৩ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ে মুম্বই সফরে এসে তিনি তাঁর সম্ভাব্য ভারতীয় সংযোগের কথা বলেছিলেন। এক বক্তৃতায় সেইসময় বাইডেন জানিয়েছিলেন ১৯৭২ সালে প্রথমবার মার্কিন সেনেটর হওয়ার পরে তিনি বাইডেন পদবিধারী এক ভারতীয়র কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছিলেন। সেই চিঠিতে সেই ভারতীয় বাইডেন দাবি করেছিলেন তাঁরা সম্ভবত আত্মীয়। তাঁদের বেশ কয়েক প্রজন্ম আগের এক পূর্বপুরুষ ইস্ট ইন্ডিয়া ট্রেডিং কোম্পানিতে কাজ করতেন। সেই চিঠি আর অনুসরণ করা হয়নি বলে আফসোস করেছিলেন বাইডেন।

উত্তেজনায় কাঁপছে চেন্নাই

বাইডেন সেই চিঠি অনুসরণ না করলে কী হবে, ভারতীয়রা তাঁর ভারতীয় শিকড় খুঁজতে অত্যন্ত তৎপর। অনেকে মনে করছেন তামিলনাড়ু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাই-তেই থাকতেন জো বাইডেন-এর ভারতীয় আত্মীয়রা। চেন্নাইয়ের সেন্ট জর্জ'স ক্যাথিড্রাল-এ ক্রিস্টোফার বাইডেন বলে এক ব্যক্তির একটি নামের ফলক রয়েছে। ১৭৮৯ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অনেকেই মনে করছেন এই বাইডেনই, জো বাইডেনের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে কাজ করা পূর্বপুরুষ। অনেকেই এখন ওই নামের ফলকটির সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছেন।

কে এই ক্রিস্টোফার বাইডেন

মাদ্রাজের বিশপ রেভারেন্ড জে জর্জ স্টিফেন জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে দুইজন বাইডেনের তথ্য রয়েছে। একজন উইলিয়াম বইডেন এবং অপরজন তাঁর ভাই ক্রিস্টোফার বাইডেন। উইলিয়াম বাইডেন অল্প বয়সে মারা গেলেও, তাঁর ভাই ক্রিস্টোফার বাইডেন উনবিংশ শতকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একটি ব্যবসায়িক জাহাজের ক্যাপ্টেন হয়েছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তিনি মাদ্রাজে অর্থাৎ চেন্নাই-এ পাকাপাকিভাবে থাকা শুরু করেছিলেন। তবে এই বাইডেন ভাইরাই আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট কি না সেই সম্পর্কে নিশ্চিত কোনও প্রমাণ হওয়া যায়নি।

চিঠি লিখেছিলেন লেসলি বাইডেন

অন্যদিকে জো বাইডেন হোয়াইট হাউসের পরবর্তী বাসিন্দা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ফোন ধরতে ধরতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুম্বই এবং নাগপুর শহরের দুই বাইডেন পরিবার। তাঁরা চেন্নাই-এর ক্রিস্টোফার বাইডেনের বংশধর বলেই মনে করছেন অনেকে। অনেকের দাবি মুম্বই-নাগপুরের বাইডেন পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের দাদু লেসলি বাইডেন-ই ১৯৭০-এ জো বাইডেনকে চিঠিটি লিখেছিলেন।

অযৌক্তিক লাইমলাইট

তবে মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমের এই জল্পনা-কল্পনায় যারপরনাই বিরক্ত বাইডেনরা। পরিবারের অন্যতম সদস্য রোয়েনা বাইডেন জানিয়ে দিয়েছেন জো বাইডেনের সঙ্গে তাঁদের কোনও আত্মীয়তা আছে কি নেই তা তাঁদের জানা নেই, কিন্তু, তারা কোনওরকম সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছেন না। তাঁরা জানিয়েছেন তাঁদের পরিবারের প্রত্যেকেরই আর্থিক অবস্থা সচ্ছল এবং তাঁরা নিজেদের মতো করে সুন্দরভাবে জীবন কাটাচ্ছেন। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্টের আত্মীয় হয়ে বাড়তি কিছু পাওয়ার নেই তাঁদের। বরং এই 'অযৌক্তিক লাইমলাইট' তাঁদের গোপনীয়তা নষ্ট করছে।

 

Share this article
click me!