বৃহন্মুম্বই পুরসভার কমিশনার ইকবাল সিং চাহালের স্মৃতিতে এখনও টাটকা বিভীষিকাময় সেই রাতের অভিজ্ঞতা। এপ্রিলের ১৬-১৭ তারিখের মধ্যবর্তী রাতের অভিজ্ঞতার কথা তিনি শোনান এক জাতীয় সংবাদমাধ্যমে। তাঁর বয়ানে সেই রাতের অভিজ্ঞতা বেশ ভয়ানক। মুম্বইয়ে তখন ক্রমশ বাড়ছে করোনা রোগির সংখ্যা। পুরসভার পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে অক্সিজেনের অভাবের কথা বারবার বলা হলেও বিশেষ লাভ হয়নি।
জাতীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে চাহাল বলেন দেশে ক্রমবর্ধমান করোনার মামলার মধ্যে মানুষ অক্সিজেন সংকটেরও মুখোমুখি হচ্ছে। দিল্লি, মহারাষ্ট্র সহ কয়েকটি রাজ্য সরকার এই কেন্দ্রে অক্সিজেনের অভাবে কেন্দ্রকে দোষ দিচ্ছে। যদিও সত্য কিছু অন্য। মহারাষ্ট্রের বিএমসি কমিশনার ইকবাল সিং চাহাল রাজ্য সরকারের মিথ্যাচারের কথা প্রকাশ করেন এদিন ওই জাতীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে।
তিনি বলেন এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বিএমসি মহারাষ্ট্র সরকারকে সতর্ক করে এসেছিল। ক্রমশ বাড়ছিল অক্সিজেনের চাহিদা। এপ্রিলের পাঁচ তারিখের মধ্যে মহারাষ্ট্রে অক্সিজেনের চাহিদা দাঁড়িয়েছিল ৯৫০ এমটি। রাজ্যে উৎপাদন হত ১২০০ এমটি। এরপর বাধ্য হয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয় বিএমসি। পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া থেকে প্রায় ৫০০ এমটি অক্সিজেন মহারাষ্ট্রে পাঠানো হয়।
চাহাল আরও জানান, এপ্রিল মাসের ১৬-১৭ তারিখে জানা যায় মুম্বইয়ের ছটি হাসপাতালে অক্সিজেন নেই। সেখানে মোট ১৬৮ জন রোগি ছিলেন। তাঁদের প্রত্যেককে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ১৫০টি অ্যাম্বুলেন্স করে বিএমসির তৈরি করা কোভিড সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ৩৬০০টি শয্যা ছিল। যেখানে ৮৫০টি শয্যায় অক্সিজেনের সুবিধা ছিল।
এরপর সব রোগিদের সেই কোভিড সেন্টারে রাখা হয়। প্রত্যেক রোগি অক্সিজেন পেয়েছিলেন। ফলে সেই রাতে কোনও অবাঞ্ছিত মৃত্যু চোখের সামনে দেখতে হয়নি বলে জানান বিএমসি চেয়ারম্যান। এরপরেও অবশ্য কাজ থেমে থাকেনি। মহারাষ্ট্র সরকারের প্রত্যেক সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে বার্তা পাঠানো হয়। বার্তা যায় কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিবের কাছেও। বার্তা পাওয়ায় ২০ সেকেন্ডের মধ্যে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবা ফোন করেন চাহালকে।
তাঁরই নির্দেশে মহারাষ্ট্রের জন্য অক্সিজেন বরাদ্দ করা হয়। মুম্বইও সেই অক্সিজেনের ভাগ পায়। কেন্দ্র সরকারের সহায়তাতেই সেদিন রোগিদের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছিল। মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে সেভাবে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন চাহাল।