হিন্দি কি সত্যিই আমাদের রাষ্ট্রভাষা, জেনে নিন আসল সত্য

দেশ জুড়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে  
বিতর্ক বিজেপি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া নিয়ে
 কী আছে এই শিক্ষানীতিতে? 

arka deb | Published : Jun 3, 2019 10:58 AM IST / Updated: Jun 03 2019, 06:06 PM IST

হিন্দির শক্তি সকলেই জানে। আরও বেশি জানা, হিন্দিকে আধার করা হিন্দুত্ববাদের শক্তি। আপাতত সেই শক্তিরই ভয়েই কাঁপছে গোটা দেশ।
 
দেশ জুড়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে  বিজেপি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া নিয়ে।  কী আছে এই শিক্ষানীতিতে? বিজেপির নতুন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের হাতে জমা পড়েছে নতুন শিক্ষানীতির খসড়া। সেইখানেই বলা হয়েছে দেশের সমস্ত রাজ্যগুলিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দিকে বাধ্যতামূলক করার কথা।  এই চাপিয়ে দেওয়া নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে গোটা দক্ষিণ ভারত।  শিক্ষার গৈরিকীকরণ তথা হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্থান নীতির বাস্তবায়নের এই প্রবণতাকে মেনে নিতে পারছে না অনেকেই। অন্য দিকে সরকার চাইছে প্রথম ১০০ দিন এই এই নীতি চূড়ান্ত করতে।  এই নীতির সমর্থকরা দাবি করছেন, হিন্দি তো আমাদের রাষ্ট্রভাষাই, তা শিখতে আপত্তিটা কোথায়! কিন্তু প্রশ্ন এখানেই, আদৌ কি হিন্দি আমাদের রাষ্ট্রভাষা? 

একটা বড় সময় ধরে এই এই চাপিয়ে দেওয়া ভাষানীতির পক্ষে থাকা লোকজন বলে এসেছে যে ভারতবর্ষের প্রায় ৫৪ শতাংশ মানুষ হিন্দিভাষী। কিন্তু ২০১১ সালের জনগণনা সম্পূর্ণ অন্য তথ্য দিয়েছে। দেখা গিয়েছে, ১২১ কোটি ভারতের মধ্যে ৫২ কোটি ভারতীয় হিন্দি বুঝতে সক্ষম কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এই জনসংখ্যার প্রত্যেকেই আদতে জন্মাবধি হিন্দিভাষী। ৩২ কোটি লোকের মাতৃভাষা হিন্দি। 

শতকরার হিসেবে বুঝিয়ে বললে ৪৪% মানুষ হিন্দি বুঝতে ও বলতে পারেন এবং মাত্র ২৫% শতাংশ মানুষের মুখের ভাষা তথা মাতৃভাষা হিন্দি । 
খুব পরিষ্কার করে বললে, ভারতবর্ষে কখনও হিন্দিকে জাতীয় ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়নি বরং ইংরেজি সঙ্গে তাকে অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ বা সরকারি কাজকর্মের ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ৩৪৩ নম্বর ধারায় দেবনাগরী হরফে লেখা হিন্দি কে সরকারি কাজের ভাষা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। 

২০১০ সালে একটি জনস্বার্থ মামলা হয় গুজরাট হাইকোর্টে।  মামলাকারীরা বলেন যে কোন পণ্যের গায়ে সেই পণ্যের তৈরির তারিখ, তার উপকরণ এবং দাম এগুলি হিন্দিতে লিখতে হবে কেননা ইতিমধ্যেই হিন্দি ভারতবর্ষের জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃত।  এই তথ্যকে সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে হাইকোর্ট সেদিন রায় দানের সময় জানায়, আদৌ হিন্দি ভারতের জাতীয় ভাষা রূপে স্বীকৃত নয়। 

তাহলে কি জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দিতে পারবে সরকার? বিশিষ্ট মহল বলছে এটি একটি শিক্ষানীতির খসড়া, অনুমোদিত পরিকল্পনা নয় এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে মান্যতার দিতেই হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। তাদের পরামর্শ ব্যতীত জোর করে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারবে না কেন্দ্র।

Share this article
click me!