অনেক টালবাহানার পর অবশেষে মাসির বাড়ি যাওয়ার অনুমতি পয়েছেনে পুরীর জগন্নাথ দেব। সুপ্রিম কোর্ট থেকে এই নির্দেশ আসতেই সোমবার বিকেল থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় ওড়িশা প্রশাসনের মধ্যে। রথযাত্রা প্রস্তুতি কমিটির বৈঠকে স্বয়ং অশং নেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। তবে করোনাভাইরাসের আবহে এইবারের রথযাত্রায় ভক্তসমাগম আটকাতে সোমবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত পুরীকে সম্পূর্ণ শাটডাউন করে রাখা হচ্ছে।
রথযাত্রা বাঙালিদের কাছে এক বিশাল বড় উৎসব। তবে এই বছর করোনার জেরে সমস্ত উৎসবই ফিকে পড়ে যাচ্ছে। বাদ যায়নি রথযাত্রাও। প্রথমে সুপ্রিম কোর্ট থেকে পুরীর জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরে সুপ্রিমকোর্ট নির্দেশ দেয় যে, কোনো রকম ভক্ত সমাগম ছাড়াই হবে এই বছরের রথযাত্রা। তাই এবার একেবারে সম্পূর্ণ এক নতুন পরিবেশে মাসির বাড়ি রওনা হচ্ছেন জগন্নাথ দেব।
ভক্তকুলের সমাগম আটকাতে সোমবার রাত থেকে পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দির সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। মন্দির লাগোয়া হোটেল ও বাড়ির ছাদে নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছে যাতায়াত। জানা যাচ্ছে, রথ টানবেন মন্দিরের দেড় হাজার সেবায়েত। সরকারি ভাবে যদিও ১২০০ সেবায়েতের কথাই বলা হচ্ছে। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৫০০ জনের বেশি একসঙ্গে রথের দড়িতে হাত দিতে পারবেন না।
রথের রশি টানার আগে সেবায়েতদের কোভিড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হচ্ছে। রথ টানার সময়ে মুখে মাস্ক বাধ্যতামূলক। স্যানিটাইজার ব্যবহার করার দিকেও থাকছে কড়া নজরদারি। সব মিলিয়ে অভূতপূর্ব একটা পরিবেশ। রথযাত্রায় যথা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব রক্ষার কথাও বলা হচ্ছে।
রথযাত্রার সুপ্রিম নির্দেশ মিলতেই জগন্নাথ দেবের পুজো আচারের রীতিনীতি ঠিক করতে সোমবার বিকেল থেকে দফায় দফায় বৈঠকে বসে মন্দির কমিটি। পুরীর মন্দিরের মুখ্য দৈতাপতি রাজেশ দৈতাপতি জানান, মঙ্গলবার সকাল সাতটায় রথে উঠে পড়বেন মহাপ্রভু। তারপর রীতি মেনে পুরীর রাজা এসে সোনার ঝাটা দিয়ে ঝাড়ু দেবেন। জগন্নাথদেবের দর্শন করবেন শঙ্করাচার্য। আর তারপরেই গুন্ডিচায় মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেবে তিন ভাইবোন। সব রীতি নীতি মিটিয়ে দুপুর ১২টায় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার রথ ছাড়বে মাসির বাড়ির জন্যে।