সিএএ, এনআরসি, এনআরপি নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। অভিযেগ উঠছে ধর্মের নামে মানুষকে বিভাজিত করার। এর মধ্যেই সম্প্রীতির এক অনন্য নজির গড়ল ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরল। মসজিদে আয়োদিত হল হিন্দু বিবাহ।
আরও পড়ুন : বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি পদে রদবদল, আমিতের জায়গায় আনুষ্ঠানিক শপথ নাড্ডার
ঘটনাস্থল কেরলের কায়ামকুলাম। এখানকারই একশো বছরের পুরনো চেরাভেল্লির মুসলিম জামাত মসজিদে বসেছিল এক হিন্দু কন্যার বিয়ের আসর। মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না গরিব মায়ের। সম্প্রীতির ইতিহাস রচনা করে পাশে দাঁড়ায় চেরাভেল্লির মুসলিম জামাত মসজিদ কমিটি।
মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি নাজুমুদ্দিন আলুমুট্টিল জানান, সারা বিশ্বের কাছে এই ঘটনা একটা উদাহরণ। তিনি আরও বলেন, প্রায় ১৪০০ বছর আগে মহম্মদ নবি মসজিদের দরজা খুলে দিয়েছিলেন খ্রিস্টানদের জন্য।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ বিয়ের সবরকম আয়োজন করেছিল। এমনকি নববধূ অঞ্জুকে উপহার হিসাবে দেওয়া হয় দশভরি সোনা ও দু'লক্ষ টাকা। কন্যা অঞ্জু ও বর শরতের বিয়ে দিলেন এক পুরোহিত। বিয়ের আসরে উপস্থিত ছিলেন দুই সম্প্রদায়ের অতিথিরাই। তাঁদের জন্য ছিল কেরলের ঐতিহ্যবাহী নিরামিষ ভোজও।
দেখুন ভিডিও: ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ১৪ এপ্রিলের তাৎপর্য, দেশের প্রথম 'বিজয় দিবস'
বেশ কয়েকদিন আগেই চেরাভেল্লির অঞ্জুর সঙ্গে কৃষ্ণপুরম এলাকার বাসিন্দা শরতের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অঞ্জুর বাবা অশোকানের মৃত্যুর পর থেকে মা বিন্দুর সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে তাঁর পক্ষে বিয়ের সমস্ত খরচ জোগানো অসম্ভব ছিল। এক প্রতিবেশী তাঁকে পরামর্শ দেন সমস্যাটি জামাত কমিটিকে জানাতে। এরপরই ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদ না করে সাহসিকতার সঙ্গে জামাত কমিটিতে ঘটনাটি জানান বিন্দু। পরিস্থিতি জেনে হিন্দু পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় চেরাভেল্লির মুসলিম জামাত কমিটি। তাঁরা খরচ দিতে রাজিও হয়ে যান। সেই মতোই রবিবার মসজিদ প্রাঙ্গনে সম্পন্ন বিয়ের প্রক্রিয়া। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে এলাকার অনেকেই তাতে সামিল হন। প্রায় হাজার খানের মানুষের খাওয়া–দাওয়ার বন্দোবস্তও করেন তাঁরা।