বিজেপির জয়ের খবর সারাদিন ধরে সবাই পেয়েছেন। এবার একটু অন্য খবর।
এবারের ভোটে উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh Assembly Election 2022) যোগী আদিত্যনাথই (Yogi Adityanath) ছিলেন বিজেপি-র মুখ, নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) নন। সেটা অনেক আগেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। তাকে সামনে রেখেই লড়াইয়ের ময়দানে নামে গেরুয়া শিবির (BJP)। আর অনিবার্যভাবে যোগী প্রচারপর্বে হিন্দুত্বের প্রসঙ্গ তুলেছেন। বিভাজনের চেষ্টা করেছেন বলেও সাফ দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশের। সেই ফাটকা সাফল্য পেয়েছে। উত্তরপ্রদেশে বড় মার্জিনে জয় পেয়েছে বিজেপি।
তবে বিজেপির জয়ের খবর সারাদিন ধরে সবাই পেয়েছেন। এবার একটু অন্য খবর। উত্তরপ্রদেশের নজরকাড়া মহিলা প্রার্থীরা কে কেমন ফল করলেন, একটু দেখে নেওয়া যাক।
অদিতি সিং (Aditi Singh)
রায়বেরেলি চিরকালই গান্ধী পরিবারের একটি শক্ত ঘাঁটি। প্রায় ৪০ বছরের বেশি সময় ধরেই রায়বেরলি প্রাসাদকে নিজের হাতের মুঠোয় করে রেখেছে গান্ধী পরিবার। এই বিধানসভা কেন্দ্রে একটি সম্প্রদায়ই রাজত্ব করে থাকে তা হল ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়। এই রায়বরেলির বিধায়ক অদিতি সিং। নির্বাচনের আগে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছিলেন তিনি কংগ্রেসকে। হাত শিবির ছেড়ে চলে এসেছিলেন বিজেপিতে। বুথ ফেরত সমীক্ষায় এগিয়ে ছিলেন অদিতি। স্বাভাবিকভাবেই বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ফলাফল অনুসারে রায়বেরেলি সদর আসনে জয়ী হয়েছেন তিনি।
অদিতি সিং, দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজনীতিবিদ, তিনি প্রয়াত অখিলেশ সিংয়ের কন্যা, রায়বেরেলি সদরের প্রাক্তন পাঁচ মেয়াদী বিধায়ক। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সমাজবাদী পার্টির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাম প্রতাপ যাদবের সাথে তীব্র নির্বাচনী লড়াইয়ের পরে অদিতি ১.০২ লক্ষ ভোট পেয়েছেন। রাম প্রতাপ যাদব পেয়েছেন ৯৫,২৫৪টি ভোট। তার জয়ের ব্যবধান ছিল ৭,১৭৫ ভোট, ইসির ওয়েবসাইট অনুযায়ী।
ওই আসনে কংগ্রেসের মনীশ সিং ১৪,৯৫৪টি ভোট পেয়েছেন এবং প্রতিযোগীদের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। বিএসপি-র মহম্মদ আশরাফ ৯,৩৩১ ভোট পেয়েছেন। ২,২৮১জন ভোটার ইভিএমে NOTA বিকল্প বেছে নিয়েছেন।
অদিতি ২০১৭ সালে কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন
অদিতি সিং ২০১৭ সালের নির্বাচনে তিনি ৮৯১৬৩ ভোটের ব্যবধানে বহুজন সমাজ পার্টির মহম্মদ শাহবাজ খানকে পরাজিত করেন। এই আসনে তখন তিন নম্বরে ছিল বিজেপি। তার আগে, PECP-এর অখিলেশ সিং ২০১২ সালে টানা পঞ্চমবারের মতো এখান থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন।
পল্লবী প্যাটেল (Pallavi Patel)
সিরাথু বিধানসভা আসনটি ইউপির সবচেয়ে আলোচিত আসন। এখান থেকে রাজ্যের ডেপুটি সিএম কেশব প্রসাদ মৌর্য বিজেপির টিকিটে লড়েছেন। যদিও সমাজবাদী পার্টি জোট এখান থেকে পল্লবী প্যাটেলকে প্রার্থী করেছে। এই ম্যাচে দুই দলের মধ্যেই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত, এসপি জোট প্রার্থী পল্লবী প্যাটেল সিরাথুতে ৮০ হাজার ৫৩২টি ভোট পেয়েছেন, আর কেশব প্রসাদ মৌর্য পেয়েছেন ৭৮হাজার ২৫৭টি ভোট। অর্থাৎ লড়াই ছিল সারাদিন ধরেই হাড্ডাহাড্ডি পর্যায়ে। অবশেষে কৌশাম্বীর হাই-প্রোফাইল আসন সিরাথুলে কেশব প্রসাদ মৌর্যকে আবারও পরাজিত করেন এসপি-র পল্লবী প্যাটেল।
পঙ্খুরি পাঠক (Pankhuri Pathak)
নয়ডা বিধানসভা কেন্দ্রের পঙ্খুরি পাঠক কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। বৃহস্পতিবার বিজেপির পঙ্কজ সিং উত্তর প্রদেশের গৌতম বুদ্ধ নগর জেলার নয়ডা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ১.৮ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ছেলে পঙ্কজ সিং ৭০.৮৩ শতাংশ ভোট পান। বিএসপির কৃপা রাম শর্মা ১২,৪১৯ ভোট নিয়ে তৃতীয় এবং কংগ্রেসের পঙ্খুরি পাঠক প্রায় দশ হাজার ভোট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন। AAP-এর পঙ্কজ আওয়ানা ৪,৫৬৭ ভোট পেয়েছেন।
পূজা শুক্লা (Pooja Shukla)
লখনউ উত্তর বিধানসভা আসনে সকাল থেকেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলে। তবে দিনের শেষে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীর নীরজ বোরার কাছে পরাজিত হন সমাজবাদী পার্টির পূজা শুক্লা। নির্বাচন কমিশনের সাইট থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে নীরজ বোরা ৩৩,৯৫৩ ভোটে পরাজিত করেন পূজা শুক্লাকে।