Lal Bahadur Shastri: লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু রহস্যে মোড়া, ৪টি ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব নিয়ে জল্পনা

সালটা ছিল ১৯৬৬। ১৯৬৫ সালে ভারত পারিস্তান যুদ্ধ শেষ হয়। তারপরই পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আয়ূব খানের সঙ্গে  শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য লালবাহাদুর শাস্ত্রী তাকখণ্ডে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরেই তাঁর মৃত্যু হয়। 

Saborni Mitra | Published : Jan 8, 2022 6:59 PM IST / Updated: Jan 09 2022, 12:41 AM IST

ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লালবাহাদুর শাস্ত্রী (Lal Bahadur Shastri)।  সাধারণ মানুষ হিসেবেই তাঁকে দেশের মানুষ চিনতেন। তাঁর সরল জীবনযাপন আজও দেশের মানুষের কাছে আলোচনার অন্যতম বিষয়। পাশাপাশি তাঁর মৃত্যু রহস্য এখনও আলোচনার বিষয দেশবাসীর কাছে। কারণ তাঁর মৃত্যুর ৫৬ বছর পরেও তাঁর বেশ কিছু রহস্য (death mystry) রয়ে গেছে। যার সমাধান এখনও হয়নি। অনেকেই তাঁর মৃত্যুকে সাধারণ মৃত্যু বলতে রাজি নন। গভীর ষড়যন্ত্র দেখতে পান দেশের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর পিছনে। 

সালটা ছিল ১৯৬৬। ১৯৬৫ সালে ভারত পারিস্তান যুদ্ধ শেষ হয়। তারপরই পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আয়ূব খানের সঙ্গে  শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য লালবাহাদুর শাস্ত্রী তাসখণ্ডে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরেই তাঁর মৃত্যু হয়। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়ে বলেও দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর মৃত্যু নিয়ে কিছু প্রশ্ন তোলে তার পরিবারের, যার উত্তর এখনও অধরা। 

তাঁর শরীরে কিছু নীল ও সাদা সাদা দাগ দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। পেটে ও ঘাড়ের পিছনে কাটা দাগ ছিল। তাঁর অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে কোনও ডাক্তারের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। সংসদের লাইব্রেরিতে দেশের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর কোনও রেকর্ড নেই। মৃত্যুর কারণ যাই হোক এই প্রশ্ন গুলির উত্তর নেই।   কিন্তু তাঁর মৃত্যু সংক্রান্ত নথি হারিয়ে গেল কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরই পরিবারের সদস্যরা। 

 ময়না তদন্তের রিপোর্ট
লালবাহাদুর শাস্ত্রীর শরীরে নীল আর সাদা রঙের দাগ ছিল। পেটে ও গলার পিছনে কাটা দাগ ছিল।- এগুলির কিসের দাগ, তা আজও স্পষ্ট নয়। পরিবারের সদস্যদের দাবি নীলসাদা দাগগুলি বিষক্রিয়ার দাগ। কিন্তু লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু বিদেশ হয়েছিল। সেখানে দেহ  ময়না তদন্ত হয়নি। তাহলে পেটে ও ঘাড়ের কাছে কাটা দাগ থাকবে কেন? তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে তার পরিবার। শাস্ত্রীজির ব্যক্তিগত চিকিৎসক আরএন চুগ দাবি করেছিলেন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। তাঁর হৃদ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। যাইহোক ২০০৯ সালে ভারত সরকার দাবি করেছিল, যে এটি শাস্ত্রীজির ডাক্তার ও কিছু রাশিয়ান ডাক্তার শেষ সময় তার শাস্ত্রীজির চিকিৎসার বিষয়ে খতিয়ে দেখেছিল। 

সাক্ষীদের করণ পরিণতি 
১৯৭৭ সালে দুজন সাক্ষীর প্রায় একই সঙ্গে মৃত্যু হয়। - তাঁর ভৃত্য রাম নাথ ও ব্যক্তিগত আরএন চুগ যিনি সফরে শাস্ত্রীজির সঙ্গে ছিলেন, সংসদীয় সংস্থার সামনে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই একটি পথদুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁরই সঙ্গে মৃত্যু হয় তার দুই ছেলে ও দুই স্ত্রীর। তাঁর ব্যক্তিগত ভৃত্য রাম নাথেরও মৃত্যু হয় পথদুর্ঘটনায়। এটি ষড়যন্ত্রের একটি অংশ হিসেবেই তুলে ধরের শাস্ত্রীজির ঘনিষ্টরা। 

অভিযোগের তীর সিআইএর দিকে
সাংবাদিক গ্রেগরি ডাগলাস, রবার্ট ক্রাউলি, সেন্ট্রাল ক্রাউলি, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির এডেন্টের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেছেন যে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এমনকি ডক্টর হোমি ভাবার মৃত্যুর পিছনেও আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র হাত রয়েছে। ভারতের একটি সংস্কামুখী রাষ্ট্রহিসেবে আত্মপ্রকাশ করার চেষ্টা করেছিল লালবাহাদুর শাস্ত্রীর হাত ধরে। পাশাপাশি পারমাণবিক ফ্রন্টে ভারত-রাশিয়য়ার আধিপত্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি হুমকি হিসেবে দেখেছিল। তারই  অবসান ঘটাতেও মার হত্যার পরিকল্পনা করেছিল বলেও দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকরা। 

আরটিআই প্রতিক্রিয়া
সিআই-এর আই অন সাউথ এশিয়ার লেখক অনুজ ধর লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু সংক্রান্ত একটি আরটিআই দায়ের করেছেন। আরটিআইএর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানান হয় নথি প্রকাশ পেলে ভারতের বিদেশ নীতির পরিপ্রেতি তা ক্ষতিকারণ হবে। তাই মৃত্যু সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করা যাবে না। 

Share this article
click me!