পাকিস্তানকে মারতে হবে- চোয়াল শক্ত করে সার্জিকাল স্ট্রাইকের প্ল্যানিং করেছিল ভারতীয় সেনা

২০১৬ সালের উরি হামলা গোটা ভারত এক ছাদের তলায় এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। চোয়াল শক্ত করে ভারত হাত মুঠো করে বলেছিল বদলা চাই।

Parna Sengupta | Published : Sep 29, 2021 9:32 AM IST / Updated: Sep 29 2021, 03:05 PM IST

পাকিস্তানকে (Pakistan) ছাড়া হবে না। প্রত্যেক জওয়ানের (Jawan) মৃত্যুর বদলা চাই। আওয়াজ উঠেছিল দেশ (India) জুড়ে। ২০১৬ সালের উরি হামলা (Uri Attack) গোটা ভারত এক ছাদের তলায় এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। চোয়াল শক্ত করে ভারত হাত মুঠো করে বলেছিল বদলা চাই। পাকিস্তানকেও বুঝতে হবে ঘরের ছেলের মৃত্যুশোক কতটা যন্ত্রণার। ভারতের সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছিল সেনার সার্জিকাল স্ট্রাইক (surgical strikes of Indian Army)। পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে মুখের মত জবাব দিয়ে এসেছিল ভারতীয় সেনা (Indian Army)। বুঝিয়ে দিয়েছিল তাদের শক্তি। 

সেই সার্জিকাল স্ট্রাইকের পাঁচ বছর পূর্তিতে এশিয়ানেট নিউজের সঙ্গে স্মৃতি ভাগ করে নিলেন লেফটেনান্ট জেনারেল (Retd) সতীশ দুয়া (Lt. Gen. Satish Dua)। জানালেন কীভাবে এক লহমায় সার্জিকাল স্ট্রাইকের প্ল্যানিং করা হয়। সতীশ দুয়া জানান, চার ঘন্টার সিক্রেট অপারেশন ছিল। সাফল্যের সাথে জঙ্গিদের দুরমুশ করে বেরিয়ে আসে ভারতীয় সেনা। সেই অপারেশনে অংশ নেয় বিশেষ প্যারাট্রুপার বাহিনী। ৩৮জন জঙ্গি, ২পাক সেনাকে খতম করে নিরাপদে কোনও ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই দেশের মাটিতে ফিরে আসে ভারতীয় সেনা। 

কীভাবে প্ল্যানিং হল

সতীশ দুয়া বলেন উরি হামলার প্রায় ১০ দিন পরে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালানোর প্ল্যান করা হয়। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মাটিতে জঙ্গিদের খতম করতে তখন মরিয়া ভারত। বেশি ভাবতে হয়নি। তৈরি হয় স্পেশাল টিম। ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬-সেই মাহেন্দ্রক্ষণে পাকিস্তানকে তাদের ঘরে ঢুকে মেরে আসে ভারতীয় সেনা। 

ভারতীয় সেনার এই প্রাক্তন আধিকারিক জানান, সেনা তখন মরিয়া হয়ে উঠেছিল প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। যন্ত্রণা পরিণত হয়েছিল প্রতিশোধ নেওয়ার আগুনে। সেই প্রতিশোধ নিল ভারত ২৯শে সেপ্টেম্বর। সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়ে পাকিস্তানকে দেখিয়ে দিল চ্যালেঞ্জ নিতে জানে ভারত। তৎকালীন ভারতীয় সেনাপ্রধানের কাছ থেকে ও কেন্দ্র থেকে এসেছিল ছাড়পত্রও। তারপর আর দেরি করেনি সেনা। 

কীভাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল টিম

সতীশ দুয়ার কথায় টিম বেছে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কমান্ডারদের ওপর। তাঁরা সবথেকে ভালো জানেন কোন জওয়ান কীসে দক্ষ। স্পেশাল ফোর্সের জওয়ানদের ওপর নজর রেখে বিশেষ ক্ষমতার ভিত্তিতে বাছা হয়েছিল টিম। নিরাপত্তার খাতিরে বিস্তারিত বলা না গেলেও সতীশ দুয়া জানান, টার্গেট তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল প্রত্যেকের সামনে। সেই টার্গেট পূর্ণ করতে হত টিম ওয়ার্ককে সামনে রেখে।   

সার্জিকাল স্ট্রাইক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ভারতীয় সেনার সামনে 

প্রাক্তন লেফটেনান্ট জেনারেল বলেন নিয়ন্ত্রণরেখায় কোনও জওয়ান আহত হলে, টিম থাকে তার চিকিৎসার জন্য। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু এখানে সেরকম কোনও সুযোগ ছিল না। পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে কোনও ভারতীয় জওয়ান আহত হলে, তার চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া অসম্ভব ছিল। ফলে গোটা টিমকে সুস্থ ও নিরাপদে ফেরানো বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ভারতীয় সেনার সামনে। দুয়া বলেন ভগবান বীরদের সঙ্গে থাকে। সেই অপারেশনে কোনও ক্ষতি হয়নি ভারতের। 

কীভাবে সফল হল ভারত

পাকিস্তানের বুকে ঢুকে জঙ্গিদের ওপর হামলা চালানো সহজ ব্যাপার ছিল না। কিন্তু ভারত তা করে দেখিয়েছিল। সতীশ দুয়া বলেন এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছিল ভারতীয় সেনার কড়া প্রশিক্ষণ, নিয়মানুবর্তিতা ও একে অপরের ওপর দুর্দান্ত বোঝাপড়ার জন্য। 

Share this article
click me!