করোনার সঙ্গে চোখ রাঙাচ্ছে জিকা ভাইরাস, এবার থাবা মহারাষ্ট্রে

জিকা সাধারণত মশা বাহিত রোগ। মশার কামড় থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এর বাহক এডিস মশা। সাধারণত দিনের বেলা এই মশা কামড়ায়। চিকুনগুনিয়া রোগের মতো একই উপসর্গ দেখা যায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্তদের শরীরে।

Asianet News Bangla | Published : Aug 1, 2021 5:40 AM IST / Updated: Aug 01 2021, 11:19 AM IST

করোনার দাপটে নাজেহাল গোটা দেশ। আর তার মধ্যেই আবার প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে জিকা ভাইরাস। মহারাষ্ট্রে প্রথম জিকা ভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। ৫০ বছর বয়সী এক মহিলার শরীরে এই ভাইরাসের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তিনি পুনের বেলসর গ্রামের পুরন্দর এলাকার বাসিন্দা। 

১৫ জুলাই হঠাৎই জ্বর আসে ওই মহিলার। তার সঙ্গে গায়ে ব্যথাও ছিল। একাধিক ওষুধ খাওয়ার পরও জ্বর সারছিল না। তারপর তাঁর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ৩০ জুলাই সেই রিপোর্ট আসে। জানা যায় তিনি জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির তরফে এই পরীক্ষা করা হয়েছিল। এছাড়া চিকুনগুনিয়াতেও তিনি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। 

আরও পড়ুন- ১৫টি জায়গায় এনআইএ-র হানা - গ্রেফতার হল এক জঙ্গি, জম্মু ও কাশ্মীরে এল বিরাট সাফল্য

জিকা সাধারণত মশা বাহিত রোগ। মশার কামড় থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এর বাহক এডিস মশা। সাধারণত দিনের বেলা এই মশা কামড়ায়। চিকুনগুনিয়া রোগের মতো একই উপসর্গ দেখা যায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্তদের শরীরে। সাধারণত জিকা ভাইরাসের ক্ষেত্রে ভয়াবহ শারীরিক কোনও ক্ষতি হয় না। তবে যদি কোনও গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় তাহলে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। সঙ্গম ও রক্তের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।

দুই সন্তানের সঙ্গে থাকেন ওই মহিলা। তাঁর শরীরে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়ার পর তাঁর সন্তানদেরও নুমনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাঁর মেয়ের শরীরে চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। তবে ছেলে কোনও ভাইরাসের দ্বারাই আক্রান্ত হয়নি। তাঁরা তিনজনেই এখন সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্য সারভেইলেন্স অফিসার প্রদীপ আওয়াতে। 

আরও পড়ুন- 'মুরগি, পাঁঠা, মাছ ছেড়ে খান গোমাংস' - এ কী কথা বিজেপির মন্ত্রীর মুখে

জিকা ভাইরাসের উপসর্গগুলি হল জ্বর, গায়ে ব্যথা, চোখে ব্যথা, ত্বকে ব়্যাশ বের হওয়া। সাধারণত মশা কামড়ানোর ২ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে এই উপসর্গগুলি দেখা যায়। এক সপ্তাহ এই সমস্যাগুলি থাকে। তারপরই সুস্থ হয়ে ওঠেন আক্রান্ত। পুনের ওই মহিলার শরীরে ওই সব উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। বেলসর গ্রামের বাসিন্দাদের জ্বর হলেই তাঁদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ১৬ জুলাই পর্যন্ত পাঁচজনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। তার মধ্য়ে তিনজনের শরীরে চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। 

ডাঃ যোগেশ গৌরবের নেতৃত্বে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির একটি টিম বেলসর ও পারিনচে গ্রামের প্রায় ৪১ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে তার মধ্যে ২৫ জন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। আর তিনজনের শরীরে ডেঙ্গুর সংক্রমণ মিলেছে। 

স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, বেলসর গ্রাম সংলগ্ন যে সব গ্রাম রয়েছে সেগুলির উপর কড়া নজর রাখা হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দাদের কারও জ্বর হলেই নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মশা যাতে না হয় তার জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন- হ্যাকারদের হাত থেকে কীভাবে বাঁচাবেন ফোন, মেনে চলুন কয়েকটি সহজ টিপস

তবে জিকা ভাইরাস নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেছেন, "এই ভাইরাস নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। জেলাবাসীকে যাতে সঠিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া যায় তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।" 

দেশ থেকে করোনা এখনও পুরোপুরি যায়নি। প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ওঠানামা করছে। আর এর মধ্যেই জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। দেশের মধ্যে প্রথম জিকা ভাইরাসের সন্ধান মিলেছিল কেরালায়। আর এবার মহারাষ্ট্রেও থাবা বসাল এই ভাইরাস।

Share this article
click me!