দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশ। আর তার জন্য দায়ী মোদী সরকারের অর্থনৈতিক নীতিই। এভাবেই দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যা করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক। শেষ ত্রৈমাসিকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার পাঁচ শতাংশে নেমে যাওয়াটা দীর্ঘমেয়াদি মন্দার ইঙ্গিত দিচ্ছি।'
আরও পড়ুন- মিশে যাচ্ছে দশটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, বড় ঘোষণা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর
আরও পড়ুন- আরও সহজ ব্যাঙ্ক ঋণ, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে একগুচ্ছ ঘোষণা সীতারমণের
নরেন্দ্র মোদীর পূর্বসূরী মনে করেন, বর্তমান সরকারের ভুল আর্থিক নীতির কারণেই বিপুল সংখ্যক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। একই সঙ্গে অর্থনীতির চাকাকে ঘোরাতে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সবার মতামত নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন মনমোহন। তিনি বলেছেন, 'আরও দ্রত হারে আর্থিক বৃদ্ধি হওয়ার মতো ক্ষমতা দেশের রয়েছে। মানুষের তৈরি এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন প্রত্যেকের মতামত নেওয়া হোক।'
বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকেই আর্থিক বৃদ্ধির হার পাঁচ শতাংশে নেমে গিয়েছে। যার অন্যতম প্রধান কারণ উৎপাদন শিল্পে বৃদ্ধির হার মাত্র ০.৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। উৎপাদন ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার একেবারে তলানিতে এসে ঠেকায় আরও বেশি হতাশ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে মনমোহন বলেছেন, 'নোটবাতিল এবং জিএসটি চালু করার মতো তাড়াহুড়ো করে নেওয়াটা কত বড় ভুল ছিল, তা এখন বোঝা যাচ্ছে। এখনও সেই ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি আমাদের অর্থনীতি। বিনিয়োগকারীরা দ্বিধার মধ্যে রয়েছেন। এই পরিবেশ মন্দা কাটিয়ে ওঠার ভিত্তি হতে পারে না।' তাঁর অভিযোগ, দেশে কর সন্ত্রাস চলছে। ছোট, বড় সব ব্যবসায়ীদেরই কর আদায়ের নামে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
এই পরিস্থিতির জন্য সামগ্রিকভাবে মোদী সরকারের ভুল নীতিকেই দায়ী করেছেন মনমোহন সিং। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র গাড়ি নির্মাণ শিল্পেই সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অন্যান্য ক্ষেত্রেও একইভাবে কর্মী ছাঁটাই হবে বলেই আশঙ্কা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। কৃষকরাও নিজেদের ফসলের দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন মনমোহন। তাঁর অভিযোগ, মোদী করার মুদ্রাস্ফীতির হার কম রাখার যে দাবি করে, তা সম্ভব হয়েছে কৃষকদের আয় কমার বিনিময়ে। এর ফলে দেশের পঞ্চাশ শতাংশ মানুষ সমস্যার মধ্যে পড়েছেন বলেও দাবি করেছেন মনমোহন সিং।