শুধু খাদ্যই নয়, নাগাল্যান্ডে কুকুরের মাংস মানে সৌভাগ্য থেকে ওষুধ - আরও অনেক কিছু

গত জুলাই মাসেই নাগাল্যান্ডে কুকুরের মাংস ভক্ষণ নিষিদ্ধ হয়েছে

দারুণ ক্ষুব্ধ নাগা উপজাতিরা

তাঁরা বলছেন এই সিদ্ধান্ত তাঁদের সংস্কৃতির পরিপন্থী

জানেন কি নাগা সংস্কৃতির পরতে পরতে রয়েছে কুকুরের মাংসের ব্যবহার

গত জুলাই মাসে ভারতের উত্তর পূর্বের রাজ্য নাগাল্যান্ডের এনডিএ সরকার সেই রাজ্যে কুকুরের মাংসের বিক্রি-ব্যবসা ও ভক্ষণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। একদিকে যখন পশু অধিকার রক্ষা কর্মীরা নাগা সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন, অন্যদিকে নাগা বিভিন্ন উপজাতি সরকারি এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে। তাঁরা বলছেন এই সিদ্ধান্ত তাঁদের সংস্কৃতির পরিপন্থী।

আসলে, বিশ্বজুড়ে কুকুরকে গৃহপালিত পশু হিসাবে দেখা হলেও কুকুরের মাংসের সঙ্গে নাগা বিভিন্ন উপজাতির সম্পর্কটা বহুদিনের। কুকুরের মাংস তাঁদের সংস্কৃতির পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে। তা শুধু নাগাদের খাদ্য নয়, কখনও কুকুরের মাংস সৌভাগ্য বয়ে আনে, কখনও জোগায় অমানুষিক শক্তি, কখনও কুকুরের মাংস ব্যবহার করা হয় ঔষধ হিসাবে।

Latest Videos

নাগাল্যান্ডে, অঙ্গমি, আও, চাখাসাং, লোথা, সেমা-সহ ১৬ টি প্রধান উপজাতি রয়েছে। এই প্রতিটি উপজাতির কাছে কুকুরের মাংস খাওয়ার আলাদা আলাদা অর্থ এবং তাৎপর্য রয়েছে। বেশ কিছু নাগা উপজাতি মনে করে কুকুরের মাংস দারুণ শক্তি জোগায়। অঙ্গমি, চাখাসাং-এর মতো যেসব নাগা উপজাতির মধ্যে কুস্তিখেলার প্রচলন আছে, সেই উপজাতিদের কুস্তিগীররা কুস্তি ম্যাচের আগে এবং পরে কুকুরের মাংস খায়। আবার আও, সেমা এবং লোথার মতো অন্যান্য নাগা উপজাতিরা ভারী কাজ করার পর শরীরে বল ফিরে পেতে জন্য এই মাংস খায়।  

আবার অঙ্গমি উপজাতির মধ্যে দীর্ঘদিন পর্যন্ত গাঁটের ব্যথা সাড়ানোর ওষুধ হিসাবে এক ধরেণের গাছের পাতা ও শিকড়ের সঙ্গে জ্যান্ত কুকুরের চোখ খাওয়ার প্রথা প্রচলিত ছিল। আবার কুকুর কামড়ালে তার প্রতিষেধক ছিল, যে কুকুরটি কামড়েছে তারই গোঁফ পুড়িয়ে ক্ষতে লাগানো।

আবার বেশ কিছু নাগা উপজাতির কাছে কুকুরের মাংস সৌভাগ্য বহন করে আনে। তাদের প্রধান এক বার্ষিক উত্সবকে বলা হয় সেক্রেণি। মনে করা হয় এই উৎসব দেহ, মন এবং আত্মাকে পবিত্র এবং শুদ্ধ করে। সেই উৎসবের সময়ও কুকুরের মাংস খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।

আবার লোথা নাগারা 'প্রেতাত্মা' তাড়াতে প্রায়শই কুকুর বলি দিয়ে থাকে। সেই বলি দেওয়া কুকুরের মাংস খাওয়াও হয়। কারণ তাঁরা মনে করে পশুদের মধ্যে কুকুরই সবচেয়ে ধূর্ত প্রাণী। তারাই প্রেতাত্মাদের শায়েস্তা করতে পারবে।

এই অবস্থায় নাগা উপজাতিদের যৌথ কমিটি 'নাগা হোহো'র সভাপতি এইচ কে ঝিমোমি বলেছেন, কুকুরের মাংস খাওয়া অন্যায় এটা বলা যায় না। প্রত্যেক সমাজের নিজস্ব খাদ্যাভ্যাস থাকে। নাগারা কুকুরদের শিকারের জন্য, প্রহরী হিসাবে এবং তাদের মাংস ভক্ষণের জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ব্যবহার করে আসছে। এটি তাঁদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ঐতিহ্য।

Share this article
click me!

Latest Videos

WB By Election Result: Naihati-তে সবুজ ঝড়! এক ধাক্কায় এগিয়ে TMC! উল্লাসের আমেজ গোটা এলাকায়
গান্ধীমূর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন থেকে Guyana সংসদে ভাষণ, এক ঝলকে দেখুন প্রধানমন্ত্রীর (Modi) গায়ানা সফর
খেলতে খেলতেই ঘটলো অঘটন! শোকের ছায়া Shantipur-এ, দেখুন | Nadia News Today
WB By Election: ‘Madarihat-এ যেই ফলাফলটা হয়েছে সেটা প্রত্যাশিত নয়!’ এ কী বললেন Samik Bhattacharya
PM Modi Live : প্রধানমন্ত্রী মোদীর বড় ঘোষণা! সরাসরি দেখুন