এয়ার ইন্ডিয়া-র ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল বিপুল ক্ষতি সামাল দিতে তা বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া ছাড়া গতি নেই সরকারের। এবার কেন্দ্রীয় বাজেটে লাভজনক এলআইসি-র অংশীদারিত্বও বেসরকারি হাতে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিল মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এ দিন বাজেট বক্তৃতায় জানান, এলআইসি- তে নিজেদের অংশীদারিত্বের একাংশ বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে এবার শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত হবে ভারতীয় জীবন বিমা নিগম। আইপিও-র মাধ্যমে এই অংশীদারিত্ব বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এর পাশাপাশি আইডিবিআই ব্যাঙ্কেও নিজেদের বাকি অংশীদারিত্বও বিক্রি করে দেবে সরকার।
দেশের বৃহত্তম বিমা সংস্থা এলআইসি পুরোপুরি ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। এবার সরকারি কোষাগার ভরানোর লক্ষ্যে সেই লাভজনক সংস্থার অংশীদারিত্বের কিছুটা বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্র। সরকারের এই ঘোষণার পরই ভারতীয় জীবন বিমা নিগমের কর্মী সংগঠনগুলি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, সরকারের এইন সিদ্ধান্ত দেশের স্বার্থ বিরোধী।
তবে বিশেষজ্ঞদের অবশ্য দাবি, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে এলআইসি-র পরিচালন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আসবে।
আরও পড়ুন- বাজেটে চাঙ্গা হল না বাজার, সেনসেক্স পড়ল ৬০০ পয়েন্ট, নিফটি দাঁড়িয়ে ১১,৭৫০-এ
আরও পড়ুন- সরকারের মতোই বিভ্রান্তিকর বাজেট, কটাক্ষ রাহুল গাঁধীর
বাজেটে অর্থমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর পরই শেয়ার বাজারে বিমা সংস্থাগুলির দর পড়তে শুরু করেছে। আইসিআইসিআই প্রুডেন্সিয়াল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার দর ২.৭৪ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। এসবিআই লাইফ ইনস্যুরেন্স-এর দর পড়েছে ০.৮২ শতাংশ। আর এইচডিএফসি-র দর পড়েছে ০.১৭ শতাংশ।
বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে চলতি আর্থিক বছরে ১.০৫ লক্ষ কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল মোদী সরকার। আগামী অর্থবর্ষে সেই লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে ২.১ লক্ষ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়ার মতো অলাভজনক সংস্থাকে বেচতে গিয়ে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে সরকারকে। তাই ১ লক্ষ কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৮ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি তুলতে পেরেথে সরকার। ফলে এলআইসি-র মতো লাভজনক সংস্থার অংশীদারিত্ব বিক্রি করা ছাড়া সরকারের হাতে কোনও বিকল্পও ছিল না। যদিও এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গেলে সংসদে জীবন বিমা নিগম আইন সংশোধন করতে হবে সরকারকে।