পরিকাঠামো ছাড়াই অনলাইনে পাঠ, রেডিও মারফত ক্লাস নেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু

  • ৩ জনের মধ্যে ১ জন শিক্ষার্থীর কাছে  অনলাইন ক্লাস কঠিন
  • এনসিইআরটি-র সমীক্ষায় উঠে আসছে এই তথ্য
  • অনলাইনে ক্লাসের সমস্যার বিকল্প ভাবনা
  • রেডিওতে ক্লাস নিতে চায় রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর

Asianet News Bangla | Published : Aug 26, 2020 6:36 AM IST / Updated: Aug 26 2020, 12:09 PM IST

করোনা মহামারির আবহে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের বেড়েছে। অন্যথা হয়নি শিক্ষা ব্যবস্থাতেও। সেই মার্চের শেষ থেকে বন্ধ রয়েছে স্কুল। এই অবস্থায় ভারতে অনলাইন শিক্ষার বহর বেড়েছে ১৪০০ শতাংশ। সারা বিশ্বে ৬৫০ শতাংশ। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক একাধিক বার বলেছেন, এই অতিমারির প্রকোপ সম্ভবত পাকাপাকি ভাবে বদলে দেবে স্কুলের শিক্ষার ধরনকে। কিন্তু সকলে তার সুবিধা আদৌ কতটা সমান ভাবে নিতে পারবে, সেই বিতর্কই উস্কে দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রকেরই নেতৃত্বাধীন এনসিইআরটি-র সমীক্ষা।

প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনেরও বেশি শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসকে কঠিন বলে মনে করছে। বিশেষ করে গণিত বোঝার ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাসের পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়ছে। ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংপরিচালিত একটি সমীক্ষায় এই তথ্যই উঠে এসেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, পড়াশোনা বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছে দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়া এবং ল্যাপটপ ও মোবাইলের মতো ডিভাইসগুলির অপ্রতুলতা।

আরও পড়ুন: দেশে মোট আক্রান্ত এবার পার করল ৩২ লক্ষের গণ্ডি, দৈনিক সংক্রমণ থাকল ৬৭ হাজারের বেশি

সিবিএসই স্কুল, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় এবং জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের পড়ুয়া, শিক্ষক, অভিভাবকদের নিয়ে করা ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, ল্যাপটপ কিংবা স্মার্টফোন হাতে পাচ্ছে না ২৭ শতাংশ পড়ুয়া। ইন্টারনেট সংযোগ, এমনকি বিদ্যুতের ঘাটতিতেও সমস্যার মুখে ২৮ শতাংশ। প্রশ্ন উঠছে, এই সমস্ত স্কুলের বড় অংশই শহরে। ছাত্র-ছাত্রীরা মূলত সচ্ছল পরিবারের। সেখানেই যদি এই হাল হয়, তা হলে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলিতে সমস্যা কতটা তীব্র! প্রত্যন্ত অঞ্চলের পড়ুয়ারাই বা কতটা বিপাকে?

অনলাইনে ক্লাসের সমস্যার বিকল্প ভাবনা হিসাবে এবার তাই রেডিওতে ক্লাস নিতে চাইছে  রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। এমনই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। রেডিওতে কী ভাবে ক্লাস নেওয়া যায় তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দফতরের আধিকারিকদের মধ্যে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকারি নাকি বেসরকারি মাধ্যমে রেডিও চ্যানেলে নেওয়া হবে তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অগাস্টের শেষে বা সেপ্টেম্বরের প্রথমের মধ্যেই হতে পারে। 

আরও পড়ুন: মাত্র ২০তেই বাজিমাত, শকুন্তলা দেবীকে পেছনে ফেলে দ্রুততম মানব ক্যালকুলেটর হায়দরাবাদী নীলকান্ত ভানু

রেডিওতে ক্লাস নেওয়ার কারণ হিসেবে স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের ব্যাখ্যা, "বিশেষত গ্রামাঞ্চলে বা যে সব পড়ুয়াদের কাছে স্মার্টফোন নেই, তাদের কথা মাথায় রেখে এই রেডিও মারফত ক্লাস নেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করা হয়েছে।" এভাবে  রেডিওতে ক্লাস নেওয়ার উদ্যোগকে  স্বাগত জানাচ্ছেন শিক্ষাবিদরা।  যদিও এই বিষয় নিয়ে সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার কোন মন্তব্য করতে চাননি।

 

 

মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে করোনা  সংক্রমণের জন্য সারা দেশের মত রাজ্যেও স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার পদ্ধতি শুরু হলেও সরকারি এবং সরকারি নিয়ন্ত্রিত স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে, তার জন্য এখনও পর্যন্ত একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। তারমধ্যে রয়েছে  বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল মারফত ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেওয়া। মিড ডে মিল-এর মাধ্যমে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মূলত এই অ্যাক্টিভিটি টাস্কের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কাছে বিভিন্ন সাবজেক্ট বা চ্যাপ্টার ধরে ধরে প্রশ্নমালা দেওয়া হচ্ছে এবং সেগুলিকে নির্দিষ্ট দিন অন্তর মূল্যায়ন করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এছাড়াও রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে সম্প্রতি নবম দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য শুরু হয়েছে টেলিফোনের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার প্রক্রিয়া। অর্থাৎ কোনও ছাত্র বা ছাত্রী কোনও সাবজেক্ট বা চ্যাপ্টার নিয়ে বিভ্রান্ত হলে, একটি হেল্পলাইন নম্বর মারফত ফোন করলেই সেই বিষয়ের শিক্ষক বা শিক্ষিকা সহজেই উত্তর দিয়ে দিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই এই টেলিফোন মারফত ক্লাস রাজ্য জুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এবার নয়া উদ্যোগ হিসেবে রেডিওতে ক্লাস নেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর।
 

Share this article
click me!