চলতি সপ্তাহেই মোট আক্রান্তের সংখ্যায় চিনকে ছাপিয়ে গিয়েছিল মহারাষ্ট্র। এবার এক লক্ষের গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলল মারাঠা রাজ্য। গত ৯ মার্চ মহারাষ্ট্রে প্রথম করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। তার ৯৫ দিন যেতে না যেতেই রাজ্যটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষের গণ্ডি ছাঁড়িয়ে গেল। রেকর্ড গড়ে গত শুক্রবার মহারাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছে ৩,৪৯৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারণ ভাইরাস প্রাণ কেড়েছে ১২৭ জনের। ফলে কেবল মহারাষ্ট্রেই মৃতের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ৩,৭১৭ তে।
দেশের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে মহারাষ্ট্রের। আর মারাঠা রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা রাজধানী মুম্বইয়ের। দেশের বাণিজ্য রাজধানীতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ইতিমধ্যে করোনার উৎসস্থল উহানকেও আক্রান্তের সংখ্যায় ছাপিয়ে গিয়েছে মুম্বই। গত ২৪ ঘণ্টায় মায়ানগরীতে সংক্রমণের শিকার হয়েছে ১,৩৬৬ জন। মুম্বইতে করোনা সংক্রমমে মৃতের সংখ্যা ২,০৪৪।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অবহেলা করেছে সরকার, দীর্ঘ জেরার সম্মুখীন স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী
আক্রান্তের সংখ্যা দিল্লিতে ছাড়াল ৩৪ হাজারের গণ্ডি, আনলক একে ফের তালা পড়ল জামা মসজিদের গেটে
গত শুক্রবার রাজ্যের মন্ত্রী ধনঞ্জয় মুণ্ডের কোভিড পরীক্ষার রিপোর্টও পজিটিভ এসেছে। এই নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের মোট ৩ মন্ত্রী সংক্রমণের শিকার হলেন। এর আগে উদ্বেগ জনক করোনা পরিস্থিতি দেখে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ফের রাজ্যটিতে লকডাউনে ফিরে যাওয়ার ইজ্ঞিত দিয়েছিলেন। কিন্তু দেশে শুরু হওয়া আনলক ওয়ানে দোকান-পাঠ, বাজার এলাকা খুলেছে মহারাষ্ট্রেও। লকডাউন পুনরায় চালু করার কথাও সরকার এখন ভাবছে না বলে শুক্রবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাঁচাতে বাংলাদেশ থেকে রেমডেসিভির আনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মহারাষ্ট্র সরকার। জানা যাচ্ছে মহারাষ্ট্রের কোভিড টাস্ক ফোর্স চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করেছে মরণাপন্ন লোগীদের বাঁচাতে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হবে। সেই মতো মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধবের কাছেও একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কিছুটা হলেও সাফল্য পেয়েছ রেমডেসিভির। তাই ঠিক করা হয়েছে, মার্কিন এই ওষুধটি বাংলাদেশ থেকে এনে মহারাষ্ট্রের ১৮টি মেডিক্যাল কলেজে সাপ্লাই করা হবে।
এদিকে মহারাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টও। মহারাষ্ট্র সহ দেশের ৪ রাজ্যকে নিয়ে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিচারপতি এম আর শাহ, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কাউলের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দেশের ৪ রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন শীর্ষ আদালত এরপরেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সহ মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে।