লকডাউনের ফলে দেশের বেশির ভাগ ব্য়বসাই এখন ধুকছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানে একেবারে উল্টোপথে হাটল পার্লে সংস্থা। এই মন্দার বাজারেও লাভের অঙ্ক ঘরে তুলল সংস্থাটি। গত মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে দেশজুড়ে যে পরিমাণ পার্লে বিস্কুট বিক্রি হয়েছে তা ৮০ বছরের পুরনো এই ব্র্যান্ডের ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি, তা নিজেরাই জানিয়েছে পার্লে সংস্থা। আর সেটা করে দেখাল গরিবের বিস্কুট পার্লে-জি।
ভারতে বিস্কুটের বাজারে ১৯২৯ সাল থেকে পথ চলা শুরু পার্লের। ১৯৩৮ সালে দেশের বিস্কুটের বাজারে পার্লে-জি একটি পরিচিত ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে। আর ২০০৩ সালে বিশ্বের জনপ্রিয় বিস্কুটের ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে অন্যতম নাম ছিল পার্লে। আর এই সংস্থার অন্যতম বিস্কুটের ব্র্যান্ড 'পার্লে জি'। যার দাম মাত্র ৫ টাকা। রাস্তা ঘাটে চটজলদি খিদে মেটানোর সস্তা ও টেকসই উপায়। লকডাউনের বাজারে অসংখ্য অসহায় মানুষের খিদে মিটিয়ে এবার রেকর্ড অঙ্কের ব্যবসা করেছে এই বিস্কুট। পার্লে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ৮২ বছরে সংস্থা যে লাভের মুখ দেখেনি, করোনা লকডাউনের তিন মাস সেটা দেখিয়েছে। যদিও বিক্রি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ের শেষে দিল্লিতে আক্রান্ত হবেন সাড়ে ৫ লক্ষ, এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ মানতে নারাজ সরকার
পার্লে প্রোডাক্টস্-এর অন্যতম শীর্ষকর্তা ময়াঙ্ক শাহ বলেন, 'দেশের বাজারে আমাদের সামগ্রিক অংশিদারিত্ব প্রায় ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে পার্লে জি-র ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ অবদান। এই ফলাফল আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত।' দেশের মোট বিস্কুটের বাজারের প্রায় ৩২ শতাংশ এই মুহূর্তে পার্লের একার দখলে রয়েছে। লকডাউনে অন্য সংস্থাগুলির তুলনায় পার্লের ব্যবসা বৃদ্ধির হার সর্বাধিক বলেও জানা গিয়েছে।
লকডাউনের তিন মাসে রেকর্ড লাভ ঘরে তুললেও আগের বছরটা কিন্তু মোটেও ভাল যায়নি পার্লে সংস্থার। মন্দার কারণে ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, সংস্থা প্রায় দশ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। আর এখন লকডাউনের ফলে যখন বেশির ভাগ ব্যবসাই চূড়ান্ত মন্দার মুখে তখন উল্টো ছবি পার্লে সংস্থার।
আরও পড়ুন: ২ বছর আগে ফিরেছিলেন ভিটেতে, সরকারের অনুগত হওয়ার চরম শাস্তি পেলেন কাশ্মীরি পণ্ডিত
আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির এই বাজারে কী ভাবে এল এই সাফল্য? এই প্রসঙ্গে পার্লে জানিয়েছে, বিগত কয়েক বছরে দেশের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে পার্লে-জি বিস্কুটের সরবরাহ বা জোগান যথেষ্ট বাড়ানো হয়েছিল। লকডাউনের আবহেও সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের মোট ১৩০টি কারখানার মধ্যে ১২০টিকেই সচল রাখা হয়েছিল। কোথাও সে ভাবে পার্লের বিস্কুটের সরবরাহে ঘাটতি হয়নি। মহামারির আবহে যার সুফল পেয়েছে সংস্থা। আর লকডাউনের কারণে পরিযায়ী শ্রমিক থেকে মধ্যবিত্ত সকলেই অন্য সংস্থার দামি বিস্কুটের তুলনায় খিদে মেটাতে সস্তার পার্লে-জি বিস্কুটের দিকেই ঝুঁকেছেন।