৮ ডিসেম্বর দুর্ঘটনার মুহূর্তের ভিডিও ধরা পড়েছিল ওই এলাকার খুব কাছে থাকা এক ব্যক্তির মোবাইলে। সেই ভিডিও পরীক্ষা করে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই সেই মোবাইল জমা নেওয়া হয়েছে। মোবাইলটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রয়াত চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াতের (Chief of Defence Staff General Bipin Rawat) হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা (Helicopter Crash) নিয়ে একাধিক ধোঁয়াশা রয়েছে। চেনা রুটের মধ্যেও কীভাবে হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ল তা এখনও স্পষ্ট নয়। তা জানার জন্য তদন্ত (Investigation) শুরু হয়েছে। এদিকে ৮ ডিসেম্বর দুর্ঘটনার মুহূর্তের ভিডিও ধরা পড়েছিল ওই এলাকার খুব কাছে থাকা এক ব্যক্তির মোবাইলে। সেই ভিডিও পরীক্ষা করে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই সেই মোবাইল (Mobile) জমা নেওয়া হয়েছে। মোবাইলটি ফরেন্সিক পরীক্ষার (Forensic Examination) জন্য পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ (Police)।
ঘন জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়। দূর থেকে সেই দৃশ্য বড়ই মনোরম। কিন্তু, ৮ ডিসেম্বর সকালের দিকে আচমকাই বদলে যায় সেখানকার ছবিটা। সেখানে ভেঙে পড়েছিল বিপিন রাওয়াতের হেলিকপ্টার। সেই কপ্টারে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও ১২ জন্য সেনা আধিকারিক। এই দুর্ঘটনার জেরে ওই কপ্টারে থাকা ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে চলেছেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিং (Group Captain Varun Singh)।
আরও পড়ুন- কপ্টার দুর্ঘটনার শোকস্তব্ধ ভারত, শহিদ ব্রিগেডিয়ারের কন্যার কবিতাতেই কাঁদছে দেশ
আর সেই কপ্টার দুর্ঘটনার ভিডিও ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন এক ব্যক্তি। যা ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছে, মোবাইলটি কোয়েম্বাটোরের (Coimbatore) বাসিন্দা জো। পেশায় তিনি একজন ওয়েডিং ফোটোগ্রাফার। ৮ ডিসেম্বর জো তাঁর বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে নীলগিরি পাহাড়ের কাট্টেরি এলাকায় গিয়েছিলেন। তখনই কিছুটা কৌতূহলবশত তিনি তাঁর মোবাইল ফোনে দুর্ঘটনার কবলে পড়া হেলিকপ্টারটির ভিডিও রেকর্ড করেন। তবে হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়ার কয়েক মুহূর্ত আগে পর্যন্ত রয়েছে ভিডিওটি। তারপর কুয়াশার মধ্যে ঢেকে যায় হেলিকপ্টার। দুর্ঘটনার পর এই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্তের জন্য জেলা পুলিশ জোয়ের মোবাইল ফোনটি জমা নিয়েছে। সেটিকে পরীক্ষার জন্য কোয়েম্বাটোরের ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, সেদিন বন্ধুদের নিয়ে ওই ঘন জঙ্গলের মধ্যে কেন গিয়েছিলেন জো? তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, যেই জায়গায় তাঁরা গিয়েছিলেন সেটি ঘন জঙ্গল। আর সেখানে বন্য প্রাণীদের আনাগোনা লেগেই থাকে। ফলে ওই এলাকায় সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। এটা জানা সত্ত্বেও কেন তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- শিলিগুড়ি পৌঁছল বিপিন রাওয়াতের দেহরক্ষী সৎপাল রাইয়ের দেহ
এই চপার দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত রয়েছেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিং। জানা গিয়েছে, ৮ ডিসেম্বর বরুণ সিং সুলুর গিয়েছিলেন সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে স্বাগত জানাতে। আর সেখান থেকেই অত্যাধুনিক এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে চেপে ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। ওই কলেজেই বক্তব্য রাখার কথা ছিল জেনারেল বিপিন রাওয়াতের। কিন্তু, তা আর হয়নি। গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই ১৪ জন আরোহীকে নিয়ে ভেঙে পড়ে চপারটি। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বিপিন রাওয়াত। চপারে থাকা ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেঙ্গালুরুর কমান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বরুণ সিং। ভারতীয় বায়ুসেনা ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করে দিয়েছে।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ব্ল্যাক বক্স। তদন্তের ক্ষেত্রে এই ব্ল্যাক বক্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এই ব্ল্যাক বক্সেই ককপিটের যাবতীয় কথাবার্তা রেকর্ড করা হয়ে থাকে। ফলে দুর্ঘটনার সময় ঠিক কী পরিস্থিতি হয়েছিল তা জানতে সুবিধা হয়।