মাটির স্বাস্থ্যের অবনতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এটির উন্নতির জন্য সচেতন প্রতিক্রিয়া আনতে ‘মাটি বাঁচাও আন্দোলন’ চালু করা হয়েছিল। সদগুরু লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়ার থেকে শুরু করে ২০২২ সালের মার্চে মোটরসাইকেল যাত্রায় ১০০ দিনের যাত্রা শুরু করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাঁচই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে ‘মাটি বাঁচাও আন্দোলন’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তিনি জগদীশ "জগ্গি" বাসুদেবের শুরু হওয়া বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালীন সমাবেশে ভাষণ দেবেন, যিনি সদগুরু নামে পরিচিত।
মাটির স্বাস্থ্যের অবনতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এটির উন্নতির জন্য সচেতন প্রতিক্রিয়া আনতে ‘মাটি বাঁচাও আন্দোলন’ চালু করা হয়েছিল। সদগুরু লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়ার থেকে শুরু করে ২০২২ সালের মার্চে মোটরসাইকেল যাত্রায় ১০০ দিনের যাত্রা শুরু করেছিলেন।
৬৪ বছর বয়সী যোগ গুরু ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে তার সেভ সয়েল সচেতনতা প্রচারে যাত্রা শুরু করেছিলেন, ভারতের পথে ২৭টি দেশ পেরিয়ে। পথের প্রধান শহরগুলিতে নির্ধারিত ইভেন্টগুলির একটি সিরিজের পরে, তিনি ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ তম বছরের সম্মানে ৭৫দিনের মধ্যে নয়াদিল্লিতে ফিরছেন তিনি।
“এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা এখন সচেতন হয়েছি কিছুটা হলেও। আমি ২৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই বিষয়ে কথা বলছি, কিন্তু সমাধান তখনই ঘটতে পারে যখন প্রতিটি দেশই ইতিবাচক নীতি নেবে,” সদগুরু তার বাইক সফরে যাত্রা করার আগে ব্রিটেনে ভারতীয় হাই কমিশনে সাংবাদিকদের বলেছিলেন।
উল্লেখ্য, ৫২ শতাংশ কৃষি জমি ইতিমধ্যেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্ব জুড়ে। বিশ্বের মাটি সংকটের দিকে জরুরি মনোযোগ প্রয়োজন, সেই প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে শুরু হয়েছে সদগুরুর দেখানো পথে Save Soil প্রজেক্ট। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সদগুরু বেশিরভাগ ইউরোপ, মধ্য এশিয়ার কিছু অংশের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছেন। নানা সচেতনতামূলক প্রচারের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন মাটি সংরক্ষণের ভয়াবহ প্রয়োজনীয়তার কথা।
সদগুরু জানান, "মাটি আমাদের সম্পত্তি নয়, এটি একটি উত্তরাধিকার যা আমাদের কাছে পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে এসেছে, এবং আমাদের এটিকে জীবন্ত মাটি হিসাবে ভবিষ্যতের প্রজন্মের কাছে প্রেরণ করতে হবে," । উল্লেখ্য, সদগুরু ইতিমধ্যে বার্মিংহাম, লন্ডন, হেগ, আমস্টারডাম, বার্লিন, প্রাগ, ভিয়েনা, লুব্লজানা, রোম, জেনেভা, প্যারিস, ব্রাসেলস, কোলন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, ব্রাতিস্লাভা, বুদাপেস্ট, বেলগ্রেড, সোফিয়া, বুখারেস্ট, ইস্তাম্বুল, তিবিলিসি, বাকুতে ঘুরেছেন। তাঁর এই রুটে পড়েছে আম্মান, তেল আবিব, রিয়াদ ও মানামাও। বর্তমানে সদগুরু রয়েছেন দুবাইতে।
উল্লেখ্য, ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন টু কমব্যাট ডেজার্টফিকেশন বা ইউএনসিসিডি (UNCCD)-র পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্তমান হারে ভূমিক্ষয় হতে থাকলে, পৃথিবীর সম্পূর্ণ মাটি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বা এফএও (FAO)-র অনুমান, আগামী ৬০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর সমস্ত উপরের স্তরের মৃত্তিকা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। পাল্লা দিয়ে জনসংখ্যা বেড়ে চললে, অদূর ভবিষ্যতে খাদ্য ও পানীয় জলের সংকট দেখা দিতে পারে। এই অবস্থায় সেভ সয়েল মুভমেন্টের মাধ্যমে বিশ্বের সমস্ত দেশে ভূমিক্ষয় রোধী পদক্ষেপের বিষয়ে সচেতন করতে চাইছেন সদগুরু।