করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে এবার সবকিছুই আয়োজিত হচ্ছে ভার্চুয়ালি। ব্যতিক্রম হল না ইন্ডিয়া আইডিয়াস সামিট। যার আয়োজনে করেছে মার্কিন-ভারত বিজনেস কাউন্সিল। এ বছর কাউন্সিল গঠনের ৪৫ তম বর্ষপূর্তিতে ইন্ডিয়া আইডিয়াস সামিটের থিম উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তোলা।
করোনা আবহে বিশ্ব জুড়েই আর্থিক মন্দার ইজ্ঞিত দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি। এহেন পরিস্থিতিতে আত্মনির্ভর ভারত গড়াই যে লক্ষ্য, তা ইন্ডিয়া আইডিয়াস সামিটে ফের স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন ভারত আপনাকে স্বাস্থ্যসেবাতে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। দেশে স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্র প্রতিবছর ২২ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের সংস্থাগুলি চিকিৎসা-প্রযুক্তি, টেলিমেডিসিন এবং রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও অগ্রগতি দেখিয়েছে। পাশাপাশি ভারতে প্রতিরক্ষা এবং মকাশা বিনিয়োগের জন্যও আমন্ত্রণ জানান মোদী। বলেন, প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগের জন্য এফডিআই ক্যাপটিকে ৭৪ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সমস্যাও উঠে এসেছে ইন্ডিয়া আইডিয়াস সামিটের আলোচনাতে। এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী ছাড়াও বক্তাদের মধ্যে ছিলেন দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রাষ্ট্রদূত তরণজিৎ সিং সান্ধু, মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেন জেস্টার-সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
পূর্ব লাদাখে সামরিক পর্যায়ে আলোচনার পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সম্প্রতি সেনা সরিয়েছে ভারত ও চিন। তবে চাপা উত্তেজনা এখনও রয়ে গিয়েছে। আর এর মধ্যেই চিনের বিরুদ্ধে কার্যত বোমা ছুড়লেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও। ইন্ডিয়া আইডিয়াস সামিটে মাইক পম্পেয়ো রাখডাক না করেই বলেন, ‘‘চিনের কমিউনিস্ট পার্টি ভারত ও আমেরিকা দু’দেশের কাছেই বিপদ।’’ গালওয়ান উপত্যকায় নিহত শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে চিন নির্ভরতা কমানোর কথাও বললেন মার্কিন বিদেশ সচিব।
এদিনও ভারতের তরফে ৫৯ টি চিনা অ্যাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা নিয়ে দিল্লির পদক্ষেপের প্রশংসা করেন পম্পেও। তিনি বলেন, টিকটকের মতো অ্যাপ ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি অন্তরায় হয়ে যাচ্ছিল। ফলে ভারতের পদক্ষেপ যে সঠিক তা জানাতে ভোলেননি পম্পেও। ওষুধের মতো ক্ষেত্রে তার দেশ যে চিনা নির্ভরতা কমাবে সেই কথাও জানিয়ে দেন।
আরও পড়ুন:রেডারের আওতার বাইরে থেকে চিনের উপর নজর, সেনার হাতে ডিআরডিও তুলে দিল অত্যাধুনিক 'ভারত'
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব রাজনীতির আঙিনায় বারবার মার্কিন সমর্থন এসেছে ভারতের কাছে। লাদাখে লালফৌজের আগ্রাসন নিয়েও ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। সেখানে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সঙ্গী হিসাবে উঠে আসার তিনি খুশি বলেও জানান পম্পেও।
এদিকে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের বন্ধুত্বের এই বার্তার পরেই চিন পাল্টা বলেছে, ভারত যেন স্বতন্ত্র বিদেশনীতি রক্ষা করে। ভারত ও আমেরিকার এই সখ্য চিন যে ভাল ভাবে নেবে না, তা এক প্রকার নিশ্চিতই ছিল নয়াদিল্লি। সেই মতোই বিবৃতি দিয়ে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েবিন বলেছেন, ‘‘আমরা আশা ও বিশ্বাস করি যে, ভারত তার স্বাধীন গণতান্ত্রিক নীতিতে অটুট থাকবে। ভারতীয় উপমহাদেশে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে ভারত।’’