Congress: প্রশান্ত কিশোর রাহুলদের জন্য কতটা Lucky, কংগ্রেসের ভাঙনের পর উঠছে প্রশ্ন

প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তারপর থেকেই কংগ্রেসের অন্দরে গুঞ্জন প্রশান্ত কিশোরকে কংগ্রেস সদস্য হিসেবেই চাইছেন রাহুল প্রিয়াঙ্কা। 

Saborni Mitra | Published : Sep 30, 2021 3:23 PM IST / Updated: Oct 03 2021, 02:27 PM IST

বুধবার কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দিয়েছিলেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফালেইরো (Luizinho Faleiro)। বৃহস্পতিবারই তিনি জাতীয় একটি সংবাদ মাধ্যমে দাবি করেছেন তাঁর এই দলবদলের পিছনে রয়েছে প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) ও তাঁর তৈরি সংস্থা আইপ্যাক (I Pack)। ফালেইরোর দাবি প্রশান্ত কিশোরই তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি আগে দেখা করেননি বলেও দাবি করেছেন। তবে তিনি যে আইপ্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন সেকথা অবশ্য জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন কংগ্রেস ছেড়ে যাওয়ার তাঁর কাছেসত্যি কঠিন ছিল। কিন্তু গোয়া ও দেশের স্বার্থেই তিনি দল বদল করেছেন বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন আগামী বছর গোয়া বিধানসভা নির্বাচন। সেক্ষেত্রে তাঁর সবকটি আসনে লড়াই করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। 

যাইহোক গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের (Congress) হয়ে কাজ করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর সংস্থা আইপ্যাক। কিন্তু ২ মে  বাংলা বিধানসভা ফল প্রকাশের দিনই প্রশান্ত কিশোর ঘোষণা করেছিলেন তিনি আর ভোট কুশলী হিসেবে কাজ করবেন না। কিন্তু তাঁর সংস্থা আইপ্যাক কাজ চালিয়ে যাবে। পরবর্তীকালে তৃণমূল কংগ্রেসও আই প্যাকের সঙ্গে নতুন চুক্তি করে। বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের পরেই তৃণমূল কংগ্রেস ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকেই পাখির চোখ করছে। মোদী বিরোধী মুখ হয়ে ওঠার লক্ষ্যে গোটা দেশেই সংগটন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঢেলে সাজান হয়েছে তৃণমূলের সংগঠনকেও। ইতিমধ্যেই অসম, ত্রিপুরায় সক্রিয় তৃণমূল। গোয়াতেও উড়েছে ঘাসফুলের পাতাকা।

কী মতলব চিনের, গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি LAC-তে ৫৫টি ঘোড় নিয়ে এসেছিল লাল ফৌজ

অন্যদিকে প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তারপর থেকেই কংগ্রেসের অন্দরে গুঞ্জন প্রশান্ত কিশোরকে কংগ্রেস সদস্য হিসেবেই চাইছেন রাহুল প্রিয়াঙ্কা। সূত্রের খবর বিষয়টি নিয়ে দেশের প্রবীণ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন সনিয়া গান্ধী। তবে এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি প্রশান্ত কিশোর। গান্ধীদের সঙ্গে তাঁর কী নিয়ে কথা হয়েছে তাও বলেননি তিনি। অন্যদিকে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি। কিন্তু প্রশান্ত কিশোরকে কয়েক মাস আগেই ভোট কুশলী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন অমরিন্দর সিং। প্রথমে কাজে যোগ দিয়েও পিছিয়ে আসেন ভোটকুশলী। তারপরের ঘটনা- পঞ্জাবে রীতিমত সংকটে কংগ্রেস। অমরিন্দর সিং-সিধুর দীর্ঘ বিবাদের পর সিধুকেই পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি করেছিল গান্ধী পরিবার। তারপরই আচমকাই গান্ধী পরিবারের অঙ্গুলি হেলনে সরে যেতে হয় অমরিন্দর সিংকে। তারপর সিধুও হাতের বাইরে চলে গিয়ে প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রীতিমত বিদ্রোহী হয়ে যায়। 

Covid 19: টার্গেট ২ অক্টোবর, শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার তৎপরতা শুরু কেন্দ্রের

কিন্তু এখনও পর্যন্ত পঞ্জাব কংগ্রেসের সংকট নিয়ে একটিও কথা বলেনি গান্ধী পরিবার। আর পাঁচ মাস পরেই পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচন। গোটা পরিস্থিতি কী করে সামাল দেওয়া হবে তা নিয়েও কোনও আলোচনায় নেই কংগ্রেসে।  যদিও কপিল সিবাল, শশী থারুর মত জি-২৩ নেতারা ইতিমধ্যেই গান্ধী পরিবারের বিরোধীতায় সরব হয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের ওপরে জোর দিয়েছেন তাঁরা।  এককাঠি এগিয়ে কংগ্রেস নেতা নটওয়ার সিং নিশানা করেছেন রাহুল গান্ধীকে। তিনি বলেছেন, তিন জন মানুষ কংগ্রেস চালাচ্ছেন। যার মধ্যে এক জনের কোনও পদ নেই। কিন্তু তারপরেও চুপ গান্ধী পরিবার। 

সিধুর কথায় তাঁকে দলের দায়িত্ব দিয়েছেন গান্ধীরা। অমরিন্দর সিং-এর কথায় তাঁকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন সনিয়া গান্ধী। প্রশ্ন কার পরামর্শে  ভোটের আগে পঞ্জাবের এই রদবদল। কেনই এই রদবদল। যার ধাক্কায় রীতিমত বিপর্যস্ত পঞ্জাব। একই অবস্থায় গোয়া নিয়েও। আগামী বছর সেখানেও ভোট। তার আগেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দলবদল নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মুখে কুলুপ এঁটেছে ১০ নম্বর জনপথ। তবে কী গান্ধীদের সায় রয়েছে এই ভাঙনে? তার উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে রাহুল বিগ্রেডের সদস্য হিসেবে পরিচিত অসমের সুম্মিতা দেব- তিনিও এখন তৃণমূলে। যা নিয়ে কপিল সিবাল নাম না করেই খোঁচা দিয়েছেন রাহুল গান্ধীকে। তিনি বলেছিলেন জি ২৩ নেতারা দল বদল করতে চায় বলে কংগ্রেসের একটা অংশ সরব হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে উল্টো ছবি- শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্টরাই কংগ্রেস ত্য়াগ করে চলে যাচ্ছে অন্যত্র। 

'কংগ্রেস ছাড়ছি, বিজেপিতে যাচ্ছি না', তাহলে অমরিন্দর সিং-এর রাজনৈতিক গন্তব্য কোথায়

অন্যদিকে সামনেই উত্তর প্রদেশের মত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভোট প্রচার শুরু করলেও কংগ্রেসের চরম মিত্ররাও বলবে না উত্তর প্রদেশের ঘর গোছান হয়েছে। এখনও বিজেপি বিরোধী জোট ছন্নছাড়া। কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি যেযার মত করে প্রচার শুরু করেছেন। অন্যদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চাপা দিয়ে বিজেপিও শুরু করেছে প্রচার। যোগী আদিত্যানাথের সমর্থনে ইতিমধ্য়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সভা করেছেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেসের হয়ে কাজ করলেও বিজেপির প্রবল প্রতাপের কাছে গোটা দল ধরাসায়ী হয়ে যায়। তাই প্রশ্ন উঠতেই পারে কংগ্রেসের জন্য প্রশান্ত কিশোর কতটা লাকি? 

Share this article
click me!