RoundUP 2021: টুইটার বিপাকে একাধিক ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ফিরে দেখা বছরভরের সংঘাত

Published : Dec 31, 2021, 08:45 PM IST
RoundUP 2021: টুইটার বিপাকে একাধিক ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ফিরে দেখা বছরভরের সংঘাত

সংক্ষিপ্ত

মন্ত্রক সাফ জানিয়ে দেয়, ভারতে ব্যবসা করতে গেলে তাদের এই দেশের আইন মানতেই হবে। সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে ভারতের আইনী নীতি কী হবে তা টুইটার ঠিক করে দেবে না।

সংঘাত (Clash) ও বিতর্কের (Controversy) শুরু সেই ফেব্রুয়ারি মাসে (February)। টুইটার (Twitter) ও কেন্দ্রের (Narendra Modi Govt) সংঘাত (Clash) সারা বছর ধরে ছিল খবরের শিরোনামে। ২৫শে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার ঘোষণা করে সোশ্যাল মিডিয়া আর ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করা হবে। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী এবার থেকে ত্রিস্তরীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে। ভারতের সার্বভোমত্ব ও অখণ্ডতার পক্ষে ক্ষতিকারক বিষয়গুলিকে নিষিদ্ধ করতে একাধিক মন্ত্রকের সমন্বয় নির্দেশিকার খসড়া তৈরি করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

এরপরেই মুখ খোলে টুইটার। কেন্দ্রের নয়া নিয়মে তাদের আপত্তি রয়েছে বলে জানানো হয় সংস্থার তরফ থেকে। কারণ সরকারি সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, ফেসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামের মতো কোনও সোশ্যাল মিডিয়াই সেই নিয়ম মেনে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি, যার ফলেই কেন্দ্রের রোষে পড়তে পারে এই তিন সংস্থা। কেন্দ্রের পক্ষ  থেকে নতুন নিয়ম বিধি মেনে চলা হচ্ছে কিনা তার জন্য একজনকে নিয়োগ করতে হবে সমস্ত কোম্পানীকে বলে জানানো হয়। সাইটে কোনও আপত্তিকর কনটেন্ট রয়েছে কিনা আর তা থাকলেও সেটা সরিয়ে ফেলতে হবে। এই নিয়মগুলি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র। নিয়ম না মানলে ফৌজদারি মামলা পর্যন্ত যাবে সরকার , তাও জানিয়ে দেয় সরকার।

২৭শে মে, ২০২১

টুইটার ইনকর্পোরেশনের কড়া সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে তাদের ভারতীয় কর্মচারীদের সম্পর্কে এবং সুশীল সমাজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল সংস্থাটি। টুইটারের এক মুখপাত্র বলেছিলেন, কেন্দ্রের নতুন তথ্যপ্রযুক্তি বিধিগুলির মূল উপাদানগুলি প্রয়োগের জন্য পুলিশকে কাজে লাগিয়ে যেভাবে ভয় দেখানোর কৌশল নিয়েছে ভারত সরকার, তাই নিয়ে অনেক সংস্থা এবং সুশীল সমাজের বহু মানুষ উদ্বিগ্ন।

এরপরেই আইটি মন্ত্রক প্রশ্ন তোলে, টুইটার যদি ভারতীয় জনগণের প্রতি এতটাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, তবে সংস্থাটি নিজেরাই ভারতে কেন এমন কোনও ব্যবস্থা তৈরি করেনি, যাতে করে মর্ফড ছবি, যৌন নির্যাতন, শিশু নির্যাতনের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীকে চিহ্নিত করা যায়? টুইটারের ভারতীয় প্রতিনিধিরা যখন দাবি করেন যে এই বিষয়ে তাদের কোনও কর্তৃত্ব নেই, ভারতের জনগণকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংস্থার সদর দফতরে অভিযোগ জানাতে হবে, তখন টুইটারের ভারতীয় ইউজারদের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার কথা ফাঁকা বলে মনে হয়। শুধু তাই নয় বোঝাই যায়, তারা কতটা স্বার্থপর।

মন্ত্রক সাফ জানিয়ে দেয়, ভারতে ব্যবসা করতে গেলে তাদের এই দেশের আইন মানতেই হবে। সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে ভারতের আইনী নীতি কী হবে তা টুইটার ঠিক করে দেবে না।

৫ই জুন, ২০২১

ডিজিটাল মিডিয়া ইন্টারমিডিয়েটরি-দের জন্য জারি করা নতুন আইটি বিধি মেনে চলার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা টুইটার-কে শেষ নোটিশ দিল ভারত সরকার। শনিবার, টুইটারের ডেপুটি জেনারেল কাউন্সেল জিম বেকার-কে ইলেক্ট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক-এর সাইবার আইনের গ্রুপ কোঅর্ডিনেটর রাকেশ মাহেশ্বরী চিঠি দিয়ে বলেন, মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বারবার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও টুইটার সংস্থা এই বিধি না মানার কোনও উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।

উড়ে গেল টুইটারের ভেরিফায়েড একাধিক অ্যাকাউন্টের নীল টিক

জুন মাসে ভারতের উপ রাষ্ট্রপতি এম বেঙ্কাইয়া নাইডু থেকে শুরু করে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সহ আরএসএস-এর পাঁচ বর্ষীয়ান নেতার ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে 'ভেরিভায়েড অ্যাকাউন্টের '-এর নীল দাগ সরিয়ে দেয় টুইটার। পরে উপ-রাষ্ট্রপতির অ্যাকাউন্টটে নীল দাগ ফিরলেও বাকিদের ফেরেনি। টুইটার যুক্তি দেখায় দীর্ঘদিন ধরে ইন্যাক্টিভ থাকার কারণেই 'নীল দাগ' সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

২৫শে জুন, ২০২১

চরমে উঠল সংঘাত, ভারতের IT মন্ত্রীর অ্যাকাউন্টই ব্লক করে রাখল Twitter। তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট এক ঘন্টার জন্য ব্লক করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি জানান, টুইটার সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট আইন লঙ্ঘন হয়েছে' - এই অভিযোগেই তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢোকার অধিকার কিছুক্ষণের জন্য কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই ওই প্রায় ১ ঘন্টা সময়, মন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্টটি জনসাধারণ দেখতে পেলেও, টুইটারের পক্ষ থেকে ওই অ্যাকাউন্টটিতে কাউকেই লগ ইন করতে বা ওই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে কোনও পোস্ট করতে দেওয়া হয়নি।

রবিশঙ্কর প্রসাদের টুইটার ফিডে এরর মেসেজে বলা হয়েছে, টুইটার তার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা বিষয়বস্তুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট অ্যাক্ট লঙ্ঘন করার অভিযোগ পেয়েছে বলে তাঁর অ্যাকাউন্টটি লক হয়ে গিয়েছে। এছাড়া টুইটার, কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি তথা আইনমন্ত্রীকে সতর্ক করে বলেছে, এরপর এই জাতীয় কপিরাইট অ্যাক্ট লঙ্ঘন করার অভিযোগ এলে তাঁর অ্যাকাউন্টটি আবার লক হয়ে যেতে পারে, এমনকী সাসপেন্ডও করে দেওয়া হতে পারে। এই সতর্কতা দিয়ে তার অ্যাকাউন্টটি ফের আনলক করা হয়।

৮ই অগাষ্ট, ২০২১

বন্ধ করে দেওয়া হয় রাহুল গান্ধীর টুইটার অ্যাকাউন্ট। এরপর সরব হয় কংগ্রেস। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কংগ্রেস জানিয়েছিল, সাংসদ রাহুল গান্ধীর টুইটার অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একটি ছবি ঘিরে বিতর্কের কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ টুইটার। টুইটার ইন্ডিয়া জানায়, রাহুল গান্ধীর টুইটার অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়নি। পরিষেবা অব্যাহত রয়েছে। 

১২ ডিসেম্বর, ২০২১

আচমকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে ঢুকে পড়ে হ্যাকাররা। রবিবার রাত ২টো ১১ মিনিটে মোদীর অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল @narendramodi-এর থেকে একটি স্প্যাম টুইটও করা হয়। টুইটে বলা হয়, 'ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে বিটকয়েনকে আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে। সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০০ BTC কিনেছে এবং তা দেশের সকল নাগরিকের মধ্যে বিতরণ করছে।'

এদিকে এই টুইটের মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই তা আবারও মুছেও ফেলা হয়। দ্বিতীয় টুইটটি ২.১৪ মিনিটে এসেছিল। যা প্রথমটিরই একটি অনুলিপি ছিল। এই টুইটটিও কিছুক্ষণের মধ্যেই মুছে ফেলা হয়। এদিকে ইতিমধ্যেই পিএমও-র তরফে এই বিষয়ে একটি সতর্কতা মূলক পোস্ট করা হয়েছে। ওই টুইটেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয় মোদীর অ্যাকাউন্ট কিছুক্ষণের জন্য হ্যাক হয়েছে। পিএমওর তরফে স্পষ্টতই বলা হয় ওই সময়ের মধ্যে কোনও টুইট কারও কাছে পৌঁছে থাকলে তা এড়িয়ে যেতে।

এরপরেই তড়িঘড়ি আসরে নামে টুইটার। সংস্থার কাছে এই হ্যাকিংয়ের বিষয়ে তথ্য যেতেই পদক্ষেপ করা হয় বলে জানায় টুইটার। ৭৩ মিলিয়নেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর অ্যাকাউন্টের। প্রধানমন্ত্রী মোদীর ব্যক্তিগত টুইটার হ্যান্ডেলটি কতক্ষণ ধরে হ্যাক করা হয়েছিল, তা জানা যায়নি। টুইটারের একজন মুখপাত্র একটি ইমেল করা বিবৃতিতে বলেন, বর্তমানে অন্য কোনও অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

PREV
click me!

Recommended Stories

World Inequality Report 2026: ভারতে মধ্যবিত্ত শ্রেণী নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ! বিশ্ব বৈষম্য প্রতিবেদন ২০২৬ রিপোর্ট জানাচ্ছে ভয়ঙ্কর তথ্য
জাতীয় জনগণনার জন্য কী কী কাগজ হাতে রাখবেন? শুরু হচ্ছে ২০২৬-এর ফেব্রুয়ারি থেকে