অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে যে, জমকালো অনুষ্ঠান এবং হাজার কোটি টাকা খরচের পর ভারত কী পাবে? ভারতের কপালে কী আসতে চলেছে, কতটা এই সম্মেলন থেকে লাভ পাবে ভারত? প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার সুফল কি সুদূরপ্রসারী হবে
ভারতে আয়োজিত জি-২০ সম্মেলনের জাঁকজমক দেখছে গোটা বিশ্ব। অনুষ্ঠানের স্থান, দিল্লির সাজসজ্জা, প্রস্তুতি ও অতিথিদের স্বাগত জানানোর জন্য ভারত সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে যে, জমকালো অনুষ্ঠান এবং হাজার কোটি টাকা খরচের পর ভারত কী পাবে? ভারতের কপালে কী আসতে চলেছে, কতটা এই সম্মেলন থেকে লাভ পাবে ভারত? প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার সুফল কি সুদূরপ্রসারী হবে এবং ভারত কি তার অর্থনৈতিক সম্ভাবনা প্রসারিত করতে সফল হবে? G-20 শীর্ষ সম্মেলন ছাড়াও, মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বিডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সহ অনেক বড় বিশ্ব নেতার সাথেও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এর মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও বড় চুক্তি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
G-20-এর জমকালো অনুষ্ঠান বদলে দিচ্ছে ভারতের ছবি
রিপোর্ট অনুযায়ী, G20 সম্মেলনের জন্য দিল্লিকে সাজাতে ৪২৫৪.৭৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ফুটপাত মেরামত, রাস্তার আলো, অনুষ্ঠানস্থল সাজানো ও অতিথিদের স্বাগত জানানোর জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। তবে এই জমকালো অনুষ্ঠানের সাফল্য সারা বিশ্বে ভারতকে গর্বিত করছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈশ্বিক ভাবমূর্তির পাশাপাশি বিশ্বমঞ্চে উঠে আসছে ভারতের একটি শক্তিশালী চিত্রও। এত বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট এখন ভারতের মতো এশিয়ান দেশে সম্ভব, তা সফল করে দেখিয়েছে মোদী সরকার।
আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও G-20 সম্মেলনে অংশ নিতে ভারতে এসেছেন। ভারতে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরেই তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেন। নবায়নযোগ্য পরিকাঠামো বিনিয়োগ তহবিল নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। ভারত ও আমেরিকা মিলে এই খাতে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এছাড়াও, চিনের দুর্বল অর্থনীতির সুযোগ নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে ভারত। বিশ্বের জন্য একটি উত্পাদন কেন্দ্র পরিণত হওয়ার একটি দুর্দান্ত সুযোগ রয়েছে ভারতের সামনে এবং G-20 এর জন্য উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম।
বড় উপহার দিতে পারেন ভারতের জামাই ঋষি সুনক
ভারতের জামাই বলে মিডিয়ায় পরিচিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকও ভারতকে বড় উপহার দিতে পারেন। শনিবার সুনাক ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, শস্য চুক্তি, করোনা ভ্যাকসিন গবেষণা, এমএসসিএ ফাইটার জেট ইঞ্জিন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সৌরশক্তি, গ্রিন হাইড্রোজেন, ক্লিন এনার্জি ইউপিআই নিয়ে আলোচনা হতে চলেছে ব্রিটেন ও জার্মানি জি-২০ দেশগুলির মধ্যে। ব্রিটেন ও ভারতের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য নিয়ে বড় চুক্তি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইতালি, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও দেখা করবেন মোদী
ভারত ও জার্মানির মধ্যে BG-20 শীর্ষ সম্মেলন ছাড়া অন্য অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে এবং দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। হেলিকপ্টার, রাডার, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ইত্যাদি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হবে। এই সমস্ত দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ভারত এবং প্রধান দেশগুলির মধ্যে সুদূরপ্রসারী সম্পর্ক নিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এটি ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির জন্য একটি বিশ্ববাজার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ।