গত ১০ বছরে তিহার জেলে জন্ম হয়েছে ৩৯টি শিশুর, সাফুরার জামিন আটকাতে যুক্তি দিল দিল্লি পুলিশ

  • তিহার জেলে সন্তান জন্মানোয় কোনও অসুবিধা নেই
  • গত ১০ বছরে জন্ম হয়েছে ৩৯টি শিশুর
  • সাফুর জারগারের জামিন আটকাতে বলল দিল্লি পুলিশ
  • গত এপ্রিল থেকে জেলে রয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা সাফুরা

Asianet News Bangla | Published : Jun 22, 2020 10:52 AM IST

তিনি অন্তঃসত্ত্বা, এই কারণে যেন জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাফুর জারগর  জামিন না পেয়ে যান, তার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করল দিল্লি পুলিশ। কারণ,  গত ১০ বছরে তিহার জেলে জন্ম হয়েছে ৩৯ টি নবজাতক শিশুর। সাফুরার জামিন আটকাতে এবার এই পন্থাই নিল দিল্লি পুলিশ। গত ১০ এপ্রিল থেকে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে যিনি তিহার জেলে বন্দি রয়েছেন।

সফুরা জামিয়ার ছাত্র আন্দোলনের পরিচিত নেত্রী। এনআরসি, এনপিআর ইত্যাদি নিয়ে যখন দেশ তোলপাড়, তিনি তখন রাস্তায় নামেন। প্রতিদিন পথে নেমে সিএএ বিরোধী মিছিল করেছেন, ভাষণ দিয়েছেন।  পুলিশ গ্রেফতার করলে জামিন পেয়ে বেরিয়ে এসে আবার রাস্তায় নেমেছেন। শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

দিল্লি পুলিশ ১০ এপ্রিল সাফুরাকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে, ১১ এপ্রিল মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট ২ দিনের পুলিশ কাস্টডির রায় দেয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের কাছে রাস্তা অবরোধে অংশগ্রহণ করার। ২২-২৩ ফেব্রুয়ারি ঘটনায় সাফুরাকে   এপ্রিলে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ ছিল, অবরোধের সময় জ্বালাময়ী ভাষণ দেবার। কিন্তু  ভাষণ দেবার  দেড়মাস পর কেন সাফুরাকে গ্রেফতার করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। ৩ মাসের বাচ্চা পেটে নিয়ে জেল যেতে হয় এই কাশ্মীরি কন্যাকে। 

এরপর ১৩ এপ্রিল বিচারপতি সাফুরা জারগরকে জামিন দেন। জামিন নিয়ে আদালত চত্ত্বর থেকে বের হবার আগেই আবার সাফুরাকে গ্রেফতার করা হয়। কারণ অবশ্য জানা যায়নি। ১৫ এপ্রিল তাঁকে তিহারে পাঠানো হয়। ২০ এপ্রিল তাঁর বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ এল, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার। আন ল ফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট, ইউএপিএ আইনে। 

এরপর ১৮ এপ্রিল ও ২ রা মে তাঁর জামিন পিটিশন আনা হলে তা নাকচ হয়। ২৬ মে বিচারপতি তাঁকে  ২৫ জুন পর্যন্ত  আটকে রাখার নির্দেশ দেন। ৩০ মে ফের একবার জামিনের আবেদন নাকচ হয়। জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্যোশিওলজিতে মাস্টার্স করার পর এম ফিল করছিলেন সাফুরা। কাশ্মীরী এই কন্যার জন্ম ১৯৯৩ সালে। কিন্তু সাফুরার বিরুদ্ধে আনা ষড়যন্ত্র করে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগের এখনও কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ। এই অবস্থায় করোনা মহামারির আবহে অন্তঃসত্ত্বা সাফুরাকে  অবিলম্বে জামিনে মুক্তি দেওয়া হোক বলে একাধিক জায়গা থেকে আবেদন আসছে। এমনকি বুদ্ধিজীবিরাও এই নিয়ে চিঠি দিয়েছিনে কেন্দ্রীয় সরকারকে। গর্ভবতী সাফুরার বন্দিত্ব নিয়ে সোচ্চার সোশ্যাল মিডিয়াও।

সরকারি নির্দেশিকায় বলছে, গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেক্রে করোনায় সংক্রমমের সম্ভাবনা বেশি, সেখানে এই অবস্থায় সাফুরাকে তিহার জেলের ছোট্ট সেলে অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে আটকে রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সেই নিয়ে রিরোর্ট জমা দিতে গিয়েই দিল্লি পুলিশ জানিয়ে দিল, তিহার জেলে , সাফুরার সন্তানের জন্ম নিয়ে কোনও অসুবিধা নেই। এদিকে করোনা সংক্রান্ত লকডাউনের সুযোগে সিএএ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়া পড়ুয়াদের দিল্লি পুলিশ জোড় করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। 

Share this article
click me!