দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনার সময় দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং স্থিতিশীলতা প্রধান ফোকাস হবে। সূত্র বলছে, হাসিনা ভারত থেকে নেপাল ও ভুটানে খাদ্যসামগ্রী, নানা পণ্য পাঠানোর অনুমতি চাইতে পারেন।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে চারদিনের সফরে সোমবার ভারতে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সময়ে, উভয় দেশের প্রধান ফোকাস থাকবে সংযোগ, জ্বালানি, খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগের ওপর। সফরকালে হাসিনা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখরের সঙ্গে দেখা করবেন। এছাড়াও, তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে আলোচনা করবেন।
দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনার সময় দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং স্থিতিশীলতা প্রধান ফোকাস হবে। সূত্র বলছে, শেখ হাসিনা ভারত থেকে নেপাল ও ভুটানে খাদ্যসামগ্রী, নানা পণ্য পাঠানোর অনুমতি চাইতে পারেন। অতিথি প্রধানমন্ত্রীর আজমির সফরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৯ সালের পর এটাই হবে হাসিনার প্রথম ভারত সফর।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সম্পর্ক জোরদার হয়েছে
সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনৈতিক ইতিহাস, ভাষা ও ধর্ম ইত্যাদিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও দুই দেশের সম্পর্ক খুব একটা ঘনিষ্ঠ বা বিরোধমুক্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের একটি দিশা দিয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক চুক্তি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, ভারত ও বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, শক্তি ও জ্বালানি, সংযোগ, বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক বিনিময়, উন্নয়ন সহযোগিতা, বাণিজ্য, ভূমি এবং সামুদ্রিক সীমানা নির্ধারণ সহ অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল অর্জন করেছে। বাংলাদেশ সম্প্রতি উন্নয়নের দিক থেকে কোয়ান্টাম লিপ নিয়েছে।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের পরিবেশে এশিয়া সফর
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট, সন্ত্রাসবাদ ও সামরিক অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার এই সফর। এছাড়াও, করোনা মহামারীর পরে অর্থনীতিকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার মধ্যে তার সফরটি অনেক তাৎপর্য অনুমান করে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সময়ের সাথে বিকশিত হয়েছে। এতে সংলাপ ও গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যার সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধানের ব্যবস্থা রয়েছে।
তবে দুই দেশের মধ্যে কিছু বিরোধ রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ভারত-বাংলাদেশ সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (সিইপিএ) জন্য আলোচনা শুরু করতে চায়।
জল সম্পদ নিয়ে বিরোধ
ভারত ও বাংলাদেশ ৫৪টি নদী ভাগ করে নেয়। এই নদীগুলোর মধ্যে গঙ্গা, তিস্তা, মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার ও কুশিয়ারা উল্লেখযোগ্য। জল ব্যবস্থাপনা ও জলসম্পদ ভাগাভাগি নিয়ে গত ৩৫ বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। কয়েক দফা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও কয়েক দফা আলোচনার পরও সুনির্দিষ্ট ফলাফলে পৌঁছানো যায়নি। দুই দেশ জল ভাগাভাগি করতে সাতটি নদী চিহ্নিত করেছে।
তিস্তার জল নিয়ে ভারতকে বার্তা, বাকি নদীগুলির জল চাইলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পুজোর ভোজে পদ্মার ইলিশ? বাংলাদেশের কাছে ২ হাজার টন ইলিশ চাইল ব্যবসায়ীরা
'মাত্র দুই জন বন্ধুর জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টা কাজ করেন', মৃল্যবৃদ্ধির জনসভায় বললেন রাহুল