
৩৭০ ধারা অপসারণের পরে, জম্মু কাশ্মীর রাজ্য বিধানসভার জন্য সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ হয়েছে। এ বছরই রাজ্যে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। জম্মু ও কাশ্মীরের বিজেপি ইনচার্জ তরুণ চুগ সম্প্রতি দলের সদস্যদের রাজ্যের মানুষের কাছে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন। নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। আগামী তিন মাসে দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের খবরও রয়েছে।
বিরোধীরাও প্রস্তুতি নিচ্ছে। ৫ ডিসেম্বর, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন। গোপনে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই সঙ্গে প্রাক্তন কংগ্রেসম্যান গুলাম নবী আজাদের নবগঠিত ডেমোক্রেটিক আজাদ পার্টিও এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন এবং অমরনাথ যাত্রার জন্য সিআরপিএফ প্রস্তুত। এরই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে সেখানে নেওয়া নিরাপত্তার প্রস্তুতি থেকে। সিআরপিএফ-এর আইজি এমএস ভাটিয়া মঙ্গলবার ত্রালে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন যে আমাদের চেষ্টা থাকবে যে কোনও অনুষ্ঠান এখানে অনুষ্ঠিত হোক, নির্বাচন হোক বা অমরনাথ যাত্রা, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, সব রকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত সিআরপিএফ। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই আসন্ন শ্রী অমরনাথ যাত্রা পথের বরফ সরানোর কাজ, রাস্তা চওড়া করার কাজ ও মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। এর দায়িত্ব প্রথমবারের মতো বিআরও-কে ন্যস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিআরও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশ জারি করেছেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
সীমানা নির্ধারণের পর ভোটার বেড়েছে ৭.৭২ লাখ
জম্মু ও কাশ্মীরে সীমাবদ্ধতার পরে, ৭.৭২ লক্ষ ভোটার বেড়েছে। ভোটার সংশোধনের সময় ১১ লাখ মানুষ ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করলেও তালিকা থেকে বাদ পড়েছে সাড়ে তিন লাখের বেশি নাম। গত বছরের ২৬ নভেম্বর ভোটার তালিকা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের বাধাও দূর হয়। সম্প্রতি, সুপ্রিম কোর্ট ৩৭০ ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন খারিজ করেছে। এ কারণে নির্বাচনে এখন আর কোনো বাধা নেই।
পরিবেশ ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেই নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারে কমিশন। নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুযায়ী ১৮-১৯ বছর বয়সী ভোটার রয়েছে ৩০১৯৬১ জন। নির্বাচনের জন্য ৬১৩টি নতুন ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। এর সাথে রাজ্যে ১১৩৭০টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। লিঙ্গ অনুপাতও ৯৪৮ হয়েছে, যা ২৭ পয়েন্ট বেড়েছে। আগে ভোটার সংখ্যা ছিল প্রতি এক হাজার জন পুরুষে ৯২১ জন। দিব্যাং ভোটারের সংখ্যা বেড়ে ৫৭২৫৩ হয়েছে।
সব দলই আগাম নির্বাচন চায়
দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব বিরোধী দলের দাবি রয়েছে। কয়েকদিন আগে, দক্ষিণ কাশ্মীরের বিজেপি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক কৌল দাবি করেছিলেন যে এই বছরেই বিধানসভা নির্বাচন হবে। যদিও সম্প্রতি লেফটেন্যান্ট গভর্নর প্রশাসনের দ্বারা সম্পত্তি কর আরোপ করার পরে বিজেপি অস্বস্তিতে রয়েছে। এতে জনমনে বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে তিনি মনে করেন।