ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বর্ষা মুর্মু (৭০) তার ছেলে সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসার কয়েক ঘণ্টা আগে মারা যান। ১২ নভেম্বর সুড়ঙ্গ ধসের খবর শোনার পর মুর্মু তার ছেলে বক্তু (২৮)-কে নিয়ে প্রচন্ড চিন্তিত ছিলেন বলে বুধবার তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা টানেল থেকে নিরাপদে বের হয়ে আসা ৪১ জন শ্রমিকের ওপর এখন নজর সারা দেশের। সুড়ঙ্গ থেকে নিরাপদে বের হলেও বাবাকে আর চোখে দেখতে পেলেন না ছেলে। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ঝাড়খন্ডে। ওই শ্রমিক টানেল থেকে বের হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগেই প্রচন্ড উদ্বেগজনিত কারণে মারা গেলেন তাঁর বাবা।
ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বর্ষা মুর্মু (৭০) তার ছেলে সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসার কয়েক ঘণ্টা আগে মারা যান। ১২ নভেম্বর সুড়ঙ্গ ধসের খবর শোনার পর মুর্মু তার ছেলে বক্তু (২৮)-কে নিয়ে প্রচন্ড চিন্তিত ছিলেন বলে বুধবার তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
পূর্ব সিংভূম জেলার বহদা গ্রামের বাসিন্দা মুর্মু মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে বসে থাকা অবস্থায় মারা যান। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারেননি, যদিও মুরমু সম্ভবত হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার থেকে বক্তুর মা পিতি মুর্মুর কথা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায়ই জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন তিনি।
মুর্মুর জামাই ঠাকুর হাঁসদা সেখানে উপস্থিত ছিলেন, সে সময়ই ৭০ বছর বয়সী মুর্মু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি বলেন, ছেলেকে নিয়ে মুর্মু চিন্তিত ছিলেন এবং হঠাৎ খাট থেকে পড়ে মারা যান। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মুর্মু তার ছেলের বিষয়ে তথ্যের জন্য উদ্বিগ্নভাবে অপেক্ষা করতেন। কিন্তু ছেলে যে নিরাপদে বেরিয়ে আসতে পেরেছে, তা দেখে যেতে পারলেন না তিনি। নিহতের বাড়িতে পরিদর্শনকারী ডুমারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি সঞ্জীবন ওরাওঁ জানান, মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
পূর্ব সিংভূমের সিভিল সার্জন, ডাঃ জুজর মাঞ্জি বলেছেন যে তিনি মৃত্যুর বিষয়ে জানতে পারলেও কোনও মেডিকেল রিপোর্ট তাঁর কাছে পৌঁছয়নি। বক্তু এবং ঝাড়খণ্ডের আরও ১৪ জন লোকের AIIMS ঋষিকেশে চিকিৎসা চলছে। বুধবার দুপুর ২টার দিকে ঝাড়খণ্ডের শ্রম সচিব রাজেশ কুমার শর্মা বলেন, "উত্তরাখণ্ড সরকার শ্রমিকদের নজরদারিতে রেখেছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তাদের বিমানে করে রাঁচিতে নিয়ে যাব।"
উত্তরাখণ্ডের আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে তিনি বলেছিলেন যে কর্মীদের ২৪ ঘন্টা নজরদারিতে রাখা হবে AIIMS ঋষিকেশে। পর্যবেক্ষণ শেষ হলে চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে আমরা আমাদের কর্মীদের দেরাদুনে নিয়ে যাব যেখান থেকে তারা নয়াদিল্লি যাবে। সেখান থেকে রাঁচির বিমান ধরা হবে। কারণ দেরাদুন এবং রাঁচির মধ্যে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই।' টানেল ধসের পরপরই ঝাড়খণ্ড সরকারের তিন সদস্যের একটি দল উত্তরকাশী পৌঁছেছিল।
উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডে একটি নির্মাণাধীন সড়ক সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের সফল অভিযান মঙ্গলবার রাতে শেষ হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের চার ধাম সড়কে নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গের একটি অংশ ১২ নভেম্বর ধসে পড়ে, যার পরে ১৭ দিন ধরে উদ্ধার অভিযান চলে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।