কেন্দ্রীয় সরকার এবং দেশের সমস্ত রাজ্য সরকারগুলিকে সব সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালকে এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে অবগত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ধর্ষিতার উপর আর করা যাবে না টু ফিঙ্গার টেস্ট, অর্থাৎ দু’আঙুলের পরীক্ষা। এই পরীক্ষা প্রকৃতপক্ষে সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ বলে মত দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের পরীক্ষা আর যাতে কোনও ভাবেই এক জন ধর্ষিতার উপর করা না হয়, ৩১ অক্টোবর, সোমবার সেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে কড়া নির্দেশ দিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে বিচারপতিরা জানিয়েছেন, যদি কোথাও কোনও ব্যক্তি এই ধরনের পরীক্ষা করেন, তবে তাঁকে অসদাচরণের দায়ে পড়তে হবে।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ থেকে এই যুগান্তকারী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতে যে এখনও বহু জায়গায় এই ধরনের পরীক্ষা করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে আক্ষেপ করে আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, ‘‘এই পরীক্ষা অবৈজ্ঞানিক তো বটেই, পাশাপাশিই আমাদের সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচয় দেয়। এই পরীক্ষা একটি সম্পূর্ণ ভুল মনোভাবকে মান্যতা দেয়, যা বলে, যৌনজীবনে সক্রিয় কোনও নারীকে ধর্ষণ করা যায় না।’’
সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকার এবং দেশের সমস্ত রাজ্য সরকারগুলিকে টু ফিঙ্গার টেস্ট নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত সমস্ত গাইডলাইন মেনে চলতে নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালকে এই নির্দেশিকার ব্যাপারে অবগত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ধর্ষণের পরীক্ষা হিসেবে ধর্ষিতার শরীরে টু ফিঙ্গার টেস্ট করাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ১০ বছর আগে। ২০১২ সালে দিল্লিতে নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডের পরের বছরই সুপ্রিম কোর্ট দু’আঙুলের পরীক্ষাকে মহিলাদের জন্য ‘মর্যাদাহানিকর’ বলে অভিহিত করে। তারপরেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্ষিতাদের ওপর এই পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সোমবার বিচারপতিদের বেঞ্চ জানায়, ‘‘এক জন ধর্ষিতকে যখন এই পরীক্ষা করানো হয় তিনি নিশ্চিত ভাবেই আরও একবার একই মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যান। একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণার উপর দাঁড়িয়ে তাঁকে ওই যন্ত্রণা দেওয়া অর্থহীন।’’
ধর্ষণের পর ধর্ষিতার যৌনাঙ্গে দু’আঙুলের পরীক্ষা আসলে সমাজের ‘পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের প্রকাশ’, বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের পরীক্ষা কোনও ভাবেই একজন ধর্ষিতার উপর করানো যাবে না বলে দেশের শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, যদি কেউ এই পরীক্ষা করেন, তবে তাঁকে অসদাচরণের দায়ে পড়তে হবে।
আরও পড়ুন-
রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্সের ঘোষণা চলতি সপ্তাহেই? নবান্ন সূত্রে বড় খবর
একের পর এক কর্মসূচি বাতিল, গুজরাটের সেতু বিপর্যয়ের প্রাণহানির কারণে ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’-তে শোকস্তব্ধ নরেন্দ্র মোদী
সহজতর হচ্ছে ‘শিল্পসাথী পোর্টাল’, বাংলায় শিল্পের জন্য জমি দিতে আরও বড় উদ্যোগ রাজ্য প্রশাসনের