নির্ঘন্ট প্রকাশের পর বিহার ভোটের প্রচারে পিছিয়ে পড়লেন সুশান্ত

  • ‘না ভুলে হ্যায়, না ভুলনে দেঙ্গে'
  • সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে বিজেপির প্রচার
  • বিহারের বিভিন্ন জেলায় প্রচার শুরু হয়
  • বিহারে বেজেছে ভোটের দামামা

পটনা, মধুবনী, সমস্তিপুরের মতো শহর ছেয়ে গিয়েছিল সুশান্তের নামে পোস্টারে। ‘না ভুলে হ্যায়, না ভুলনে দেঙ্গে। সুবিচার দেকে রহেঙ্গে’ স্লোগানে বিহারের সব জেলায় প্রচার শুরু হয়েছিল। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচার চালায় বিহার বিজেপির। নবনির্মিত ফিল্মসিটি সুশান্তের নামাঙ্কিত করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল৷
পানি, বিজলি, সড়কের থেকে ভোটের ইস্যুতে দু’কদম এগিয়েছিল সুশান্ত সিং রাজপুত। বিহারের ভূমিপুত্র সুশান্তের রহস্যমৃত্যু তখনও বিহারবাসীর আবেগে টাটকা। মুম্বইতে তদন্তকারী দল পাঠায় বিহার পুলিশ৷ মুম্বইতে বিহার পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠলে হস্তক্ষেপ করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী৷ সুপ্রিম কোর্টে বিহার সরকারের হয়ে সওয়াল দেশের অন্যতম সেরা আইনজীবীর৷ কোনও প্রয়াত বলিউড তারকা ভোটপ্রচারে অস্ত্র, এমন ছবি আগে কখনও দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন-রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন, দেখুন কাঁথি শহরের জলছবি
বিহারের বহু জায়গায় বিজেপির প্রচারে সুশান্তের ছবি দিয়ে স্টিকার ও মাস্ক দেখা যায়। বিজেপির সাংস্কৃতিক সেল কলা সংস্কৃতি মঞ্চের স্টিকারে লেখা ছিল- জাস্টিস ফর সুশান্ত, না ভুলেঙ্গে, না ভুলনে দেঙ্গে। তাঁরা এনিয়ে মিছিল করেছেন। অনলাইনেও প্রচার চালিয়েছেন। বরাবর অরাজনৈতিক ব্যক্তি বলিউড এই অভিনেতা বিহারের সন্তান। কে আগে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন, বিহারের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে, লালু, তেজস্বী যাদব  থেকে নীতিশ কুমার, বিজেপি থেকে রামবিলাস, তাঁর পুত্র চিরাগ পাসোয়ান প্রত্যেকের মধ্যেই প্রতিযোগিতা ছিল। 
বিহারের বিজেপি সভাপতি সঞ্জয় জয়সওয়াল বক্তব্য, ‘সুশান্ত সিং রাজপুতকে নিয়ে রাজনীতির কোনও প্রশ্নই নেই। তিনি বিহারের সন্তান, সত্যিটা প্রকাশ হোক। তাঁর পরিবারও বিচার চাইছেন এর মধ্যে তো কোনও ভুল নেই। অন্যদিকে লালু সুশান্ত সিং প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, মূলত বিহারের শহুরে এলাকা, পাটনা ও তার আশপাশের একটা অঞ্চল এবং পূর্ণিয়া জেলায় সুশান্তের আদি বাড়ি, যে কারণে, প্রসাদের দলের নেতা, তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জে.পি যাদব সুশান্ত কাণ্ডের সিবিআই তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে  চিঠি লিখেছিলেন। বিজেপির সংস্কৃতি বিষয়ক শাখার কার্যকর্তা বরুণ সিং বলছেন, তিনিই প্রথম চিঠি লেখেন।  

Latest Videos

আরও পড়ুন-কুলতলিতে ফের বাঘের আতঙ্ক, লাঠি হাতে রাত পাহারায় গ্রামবাসীরা
বিহারের নির্বাচনে সুশান্তের ঘটনা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতেই পারে। কিন্তু তাঁরা এ কথাও বলছেন, যে মানুষটি আজীবন রাজনীতি আর জাত-পাত নিয়ে আদপেই ভাবলেন না, এসবে বিশ্বাসও করতেন না, সেই মানুষের মৃত্যুর পরের নির্বাচনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে এসবই যদি ‘ইস্যু’ হয়, তাহলে সেতা বেশ দৃষ্টিকটূ!
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর ভোটের দামামা পুরোদমে বেজে গিয়েছে। নির্বাচনকে পাখির চোখ করে আদা জল খেয়ে নেমে পড়েছে সব রাজনৈতিক দলগুলি। সব দলেরই নির্বাচনের রণকৌশল ঠিক করতে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল আগেই। নির্বাচনের আগে একগাদা প্রতিশ্রুতি ভোটারদের কান পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া সব দলেরই একটা প্রধান লক্ষ্য। ঢাক পিটিয়ে সেই কাজে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে সব রাজনৈতিক দলগুলি। সেই আবহেই সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনা একটি বড় অ্যাজেন্ডা হয়ে দাঁড়াবে সেটাই ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘোষণা হওয়ার পরই সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনা অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন,  বিহারে নির্বাচনে নানা ধরণের হিসাব। বিহারের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ শতাংশ মানুষ রাজপুত সম্প্রদায়ের। কয়েকলক্ষ মানুষ  তথাকথিত উচ্চবর্ণের। এই বর্ণের মানুষেরা আরও কয়েক শতাংশ মানুষের ভোট কোনদিকে যাবে সেটাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। পাশাপাশি তাঁরা নীতিশ কুমারের জেডিইউ এবং বিজেপির সঙ্গেই বেশি থাকেন। শুধু তাই না, বিহার বিধানসভার মোট ২৪৩ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে প্রায় ৪০টি বিধানসভা আসন রয়েছে যেগুলি কোনদিকে যাবে, অর্থাৎ কে জিতবেন সেটাও অনেকাংশেই নির্ভর করে, রাজপুতদের ভোটেই। অর্থাৎ কেন্দ্রগুলিতে রাজপুত  ভোট যেদিকে যাবে তিনিই জিতবেন এই সম্ভাবনা রয়েই যায়। 
বিহারের বর্তমান সমাজে জাত-পাত ব্যবস্থা সেভাবে না থাকলেও, বিহারের মতো রাজ্যের নির্বাচনে জাত-পাত সম্প্রদাযয়ের রাজনীতি প্রায় প্রতিবারই ভোটের ফলাফলের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পেরেছে। ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি, জেডিইউ-এর মহাগাঁটবন্ধনে লড়েছিলেন ১২ জন। ৩০ টি আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন রাজপুত সম্প্রদায় থেকে। রাজপুত সম্প্রদায় থেকে মোট ১৯ জন জিতেছিলেন,  বাকি ২৪ জন সংখ্যালঘু, ৩৮ জন দলিত সম্প্রদায়ের, ৬৮ জন যাদব সম্প্রদায়ের বাকি অন্যান্য। 
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই পুরোদমে প্রচার শুরু করে দিয়েছে আরজেডি-জেডিইউ। বসে নেই প্রধান বিরোধী পক্ষ রাষ্ট্রীয় জনতা দলও। তবে দু’দলেরই পাখির চোখ বেকার যুব সম্প্রদায়। তাঁদের ভোটেই বাজিমাত করতে চাইছেন দুই দলের নেতা।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

'আমি মারা গেলে আমার যেন স্ট্যাচু না হয়' দলের উদ্দেশ্যে বার্তা মমতার
হঠাৎ করে TMC নেতারা পুলিশের বিরুদ্ধে কেন? কী উদ্দেশ্যে? প্রশ্ন অগ্নিমিত্রার | Agnimitra Paul
'বালি চুরি, কয়লা চুরিতে যুক্ত পুলিশদের একাংশ' বিস্ফোরক মন্তব্য মমতার | Mamata Banerjee
Live: মথুরাপুরে সদস্যতা অভিযান অগ্নিমিত্রা পালের, দেখুন সরাসরি
Bangla News : সুকান্তকে বাধা, বেলডাঙা নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি | Asianet News Bangla